প্রসেনজিৎকে জোর ধমক সোহিনীর!
দিনেদুপুরে জনতার সামনে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের চোখে চোখ রেখে তাঁকে ধমকালেন সোহিনী সেনগুপ্ত!
আঙুল তুলে তাঁর রীতিমতো শাসানি, ‘‘এই প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়! করে খাচ্ছ, করে খাও। বেশি কথা বললে না রগড়ে দেব!’’ মুহূর্তে বিমূঢ় উপস্থিত জনসাধারণ। পিন পড়লেও যেন শোনা যাবে! সেই নিস্তব্ধতা খান খান করে প্রথম হাততালি দিলেন প্রসেনজিৎ স্বয়ং। সঙ্গে সঙ্গে সিটির শব্দে কান পাতা দায়!
ব্যাপারটা কী হল?
রবিবারের হাতিবাগান চত্বর সকাল ৯টা থেকে প্রসেনজিৎ-ময়। এ দিনই স্টার থিয়েটারে মুক্তি পেল অভিনেতার আগামী ছবি ‘আয় খুকু আয়’-এর প্রচার ঝলক। প্রযোজনায় জিৎ প্রোডাকশন। প্রচারের ক্ষেত্রেও অভিনব টলিউডের ‘ইন্ডাস্ট্রি’। সবাই ছবির ট্রেলার-মুক্তির জন্য সাধারণত দক্ষিণ কলকাতার শপিং মল বা আইনক্স বেছে নেন। ‘বুম্বাদা’র সৌজন্যে সম্ভবত বহু যুগ পরে উত্তর কলকাতার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেল বাংলা ছবির প্রচার-ঝলক। সেখানেই ছবির ‘ধমাকেদার’ সংলাপ বলেছেন রুদ্রপ্রসাদ ও স্বাতীলেখা সেনগুপ্তের মেয়ে। পর্দায় তিনি বিধায়ক ‘পুতুলরানি বাগচি’। ‘বুম্বাদা’র এই সংলাপ নাকি ভীষণ প্রিয়! পাশে দাঁড়িয়ে তখন মিটিমিটি হাসছেন তাঁর ‘বুড়ি’, দিতিপ্রিয়া রায়।
এ দিকে, টেনশনে সকাল থেকেই পরিচালক শৌভিক কুণ্ডুর অস্থির পায়চারি স্টার থিয়েটারের সামনে। প্রবেশদ্বারের সামনে জোড়হাতে সবাইকে আপ্যায়ন জানাচ্ছেন। যেন তাঁর মেয়ের বিয়ে! প্রসেনজিৎ এই ছবিতে গ্রামের লোকাল ট্রেনের হকার ‘নির্মল মণ্ডল’। একমাত্র মেয়ে বুড়িকে কী ভাবে একা হাতে মানুষ করেছেন তিনি, ১৭ জুন বড় পর্দায় সবাই সেই গল্পই দেখবেন। তারই নান্দীমুখ ছবির ট্রেলার-মুক্তি দিয়ে। যেখানে ঝলকে ঝলকে উঠে এসেছে বাবা আর মেয়ের ভালবাসা, অভিমান, আদর, শাসন, একা বাবার লড়াই। উঠে আসবে রাজনীতিও। প্রতি দিন নিম্নবিত্ত পরিবারের অস্তিত্ব রক্ষার আপ্রাণ তাগিদ। আর থাকবে রণজয় ভট্টাচার্যের গাওয়া তাঁর নিজের লেখা ও সুরে ‘আয় খুকু আয় খুকু আয় রে, চাঁদ মামা টিপ দিয়ে যায়।’
প্রচার ঝলক মুক্তির অনুষ্ঠানে উপলক্ষে প্রসেনজিৎ, সোহিনী, দিতিপ্রিয়া, রণজয় ছাড়াও ছিলেন শঙ্কর দেবনাথ, রাহুল দেব বসু, গায়ক স্যাভি, প্রযোজক গোপাল মদনানি প্রমুখ। প্রসেনজিতের কথায়, ইদানীং ছবি যেন বড্ড বেশি শহরকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছিল। ‘আয় খুকু আয়’ গ্রামের এমন এক জনগোষ্ঠীর জীবনকে পর্দায় তুলে আনতে চলেছে, যাঁরা গুরুত্বপূর্ণ হয়েও থেকে যান আড়ালে। ‘বুম্বাদা’র আরও দাবি, এখনও পরিবারে মেয়ে এলে বলা হয়, ‘লক্ষ্মী এল’। তার পরেও সেই পয়মন্ত সন্তানকে ঘিরে মা-বাবার যত না গর্ব, তার থেকেও যেন বেশি ভয়, উদ্বেগ! যত্নে মানুষ করার পরে এই মেয়েই যে পর হয়ে যাবে।
বাস্তবে প্রসেনজিতের এক ছেলে, তৃষাণজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ছবির সৌজন্যে এ বার এক মেয়েরও বাবা হলেন। ছবির আরও একটি সংলাপ তাই ভারী পছন্দের তাঁর। গল্পে ‘শতাব্দী’ ওরফে ‘বুড়ি’র জন্মের পরে তাকে কোলে নিয়ে ‘মা’ রফিয়াত রশিদ মিথিলা বলবেন, ‘‘মেয়ে হয়েছে গো, মেয়ে।’’ অভিনেতার দাবি, ‘‘এই একটা কথা অনেক কথা বলে দেয়। মা-বাবারাই কেবল বোঝেন সেই অনুভূতি।’’