Tollywood Celebrities on Panchayat Election

পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যে মৃতদেহের সারি, গণতন্ত্রের উৎসবে রক্তারক্তি নিয়ে সরব টলিউড শিল্পীরা

রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোট। ভোট মানেই গণতন্ত্রের উৎসব। উৎসব, না কি উৎ‘শব’? তা ঠাহর করা দায়। সমাজমাধ্যমের পাতায় হিংসার নিন্দায় সরব টলিউডের শিল্পীরা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৩ ১৭:৪৪
Rittwik Chakraborty, Riddhi Sen, Joyjit Banerjee.

(বাঁ দিক থেকে) ঋত্বিক চক্রবর্তী, ঋদ্ধি সেন, জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

গণতান্ত্রিক দেশে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন। সাদা বাংলায় যাকে বলা হয় ভোট। ৮ জুলাই, শনিবার পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন। সকাল থেকে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া। নির্বাচনের দিন দুপুরের মধ্যে মৃতের সংখ্যা পেরিয়ে গিয়েছে ১০। ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া— সব মিলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা হিসাব করলে সেই পরিসংখ্যান আরও বেশি। অথচ পঞ্চায়েত ভোট নাকি শান্তিতেই হওয়ার কথা। কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া মনোনয়ন জমার দেওয়ার প্রক্রিয়াও নাকি আদ্যোপান্ত শান্তিপূর্ণ। এমন কথা বলেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেও নির্বাচনের দিন এত হিংসা কেন? কোথায় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা? সমাজমাধ্যমের পাতায় প্রশ্ন তুললেন টলিউডের একাধিক শিল্পী।

Advertisement

শনিবার ফেসবুকের পাতায় একটি পুতুল হাতে নিজের ছবি পোস্ট করেন টলিউড অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী। সেই ছবিতে পুতুলের মাথার পিছনে গম্ভীর এক প্রশ্নের মেঘ। ঋত্বিকের পুতুল তাঁকে প্রশ্ন করছে, ‘‘আচ্ছা বদ্দা, পুলিশ কবে পুলিশ-পুলিশ খেলে?’’ বুঝতে অসুবিধা হয় না, নির্বাচনের দিন সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার দায়বদ্ধতার প্রতি পুলিশের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ নিয়েই এমন শ্লেষাত্মক পোস্ট করেছেন অভিনেতা। ফেসবুকে ওই ছবি পোস্ট করে ঋত্বিক লেখেন, ‘‘আমার বাচাল পুতুলটা প্রশ্ন করছে— পুলিশ কবে পুলিশ-পুলিশ খেলে? উত্তরটা জানা থাকলে বেচারাকে একটু জানিয়ে দেবেন।’’

হিংসা ও রক্তারক্তির এই রাজনীতি নিয়ে বীতশ্রদ্ধ টলিউড অভিনেতা ঋদ্ধি সেনও। রাজনৈতিক ভাবে সচেতন ব্যক্তিত্ব বলে টলিপাড়ায় নামডাক আছে ঋদ্ধির। শনিবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ফেসবুকে ঋদ্ধি লেখেন, ‘‘পড়ে থাক গণতন্ত্রের লাশ, পচুক, গন্ধ বেরোক, সেই গন্ধ নাকে নিয়ে মাংস-ভাত খাক রাজনৈতিক শিবিরগুলো, দুপুরবেলা আমরাও খাই পেট ভরে। গন্ধটা আরও তীব্র হওয়ার আগে চলুন খেয়ে নিই, আসুন, যোগ দিন মাংস-ভাত খাওয়ায়, আমাদের ভাগাড়ের মাংস।’’ নিজের পোস্টে কোনও বিশেষ রাজনৈতিক পক্ষের নাম উল্লেখ করেননি বটে ঋদ্ধি। তবে এই লাশ গোনার রাজনীতিকে যে যথেষ্ট ঘৃণার চোখে দেখেন তিনি, তা বুঝিয়ে দিতে কসুর করেননি টলিউড অভিনেতা।

অন্য দিকে, রাজ্যে এই গণতন্ত্রের উৎ‘শব’-এর আবহে সরাসরি ‘বুদ্ধিজীবী’দের প্রতি প্রশ্ন রেখেছেন অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচন, না কি নির্বাচনের নামে প্রহসন? জয়জিতের প্রশ্ন, ‘‘এটা ভোট? তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা পথে নামবে না?’’ রাজ্যের তথাকথিত শিক্ষিত সমাজ প্রতিবাদ করবে না এমন এক গণতন্ত্রের উদ্‌যাপনের? প্রশ্ন অভিনেতার।

এ দিকে ভোটের দিন রাজ্যে এই রক্ত ঝরার ঘটনায় নীরব ব্যারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক ও টলিপাড়ার নামজাদা পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। আনন্দবাজার অনলাইনের পক্ষ থেকে রাজকে পঞ্চায়েত নির্বাচন হিংসা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কোনও মন্তব্যই করতে চাননি তিনি। প্রায় একই সুর পশ্চিম মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মাল্যর গলাতেও। জুন আনন্দবাজার অনলাইনকে জানান, নিজের বিধানসভা কেন্দ্রেই আছেন তিনি। অভিনেত্রীর দাবি, সেখানে কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। জুনের কথায়, ‘‘আমি ফেসবুকে কোনও কিছু পড়িনি। আমার ফেসবুকে যাওয়ার সময় নেই। আমার ন’টা অঞ্চল নিয়ে আমি বলতে পারি, এখানে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হচ্ছে। অশান্তি করার চেষ্টা করেছিল বিজেপি, সিপিএম বা যে সব নির্দল প্রার্থীরা দাঁড়িয়েছেন। তবে এখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement