সতীশ কৌশিকের স্মৃতিচারণায় পাওলি দাম। ছবি: সংগৃহীত।
সকাল সকাল খবরটা পেয়ে মন খারাপ হয়ে গেল। মুম্বইতে যখন কাজ করা শুরু করেছি, সেই সময় সতীশজির সঙ্গে আমার আলাপ। ‘গ্যাংস অফ ঘোস্ট’ (‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ ছবির হিন্দি রিমেক) ছবি পরিচালনার কাজ শুরু করবেন। আমাকে ছবির আইটেম নম্বরের জন্য বললেন। আমি তো অবাক! আমিও যে আইটেম গানে পা মেলাতে পারি, সেটা মনে হয় সতীশজির পক্ষেই ভাবা সম্ভব। আসলে ওঁর ভাবনাটাই ছিল অন্য রকম। এই ছবির মাধ্যমেই ওঁর সঙ্গে আমার প্রথম আলাপ।
গত বছর মুক্তি পেয়েছে ‘কর্ম যুদ্ধ’ ওয়েব সিরিজ়। সেখানেও সতীশজির সঙ্গে আমি অভিনয় করেছি। গোয়া এবং কলকাতায় লক ডাউনের সময়ে আমরা সিরিজ়টা শুট করেছিলাম। তখন প্রচুর আড্ডা দিয়েছি। শুটিংয়ের ফাঁকে উনি পুরনো দিনের অভিজ্ঞতার গল্প বলতেন। মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনতাম। এই প্রসঙ্গেই আরও একটা বিষয় না বললেই নয়। ‘কর্ম যুদ্ধ’ মুক্তি পাওয়ার পর এক দিন হঠাৎ উনি ফোন করলেন। বললেন, ‘‘কী করেছিস কী! তোর সামনে তো নিজেকে বাচ্চা মনে হচ্ছে।’’ আমার ফের অবাক হওয়ার পালা। কাদের সঙ্গেই না কাজ করেছেন সতীশজি। ওঁর মতো বয়োজ্যেষ্ঠ অভিনেতা নিজের সহ-অভিনেতাকে ফোন করে প্রশংসা করছেন দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম।
ভাল অভিনেতা এবং ভাল পরিচালক হওয়ার পাশাপাশি আমার খুব ভাল বন্ধু ছিলেন সতীশ কৌশিক। আসলে বন্ধুত্বর তো কোনও বয়স হয় না। আমি তখন মুম্বই শহরে। উনি আমাকে বাড়িতে ডিনারে নিমন্ত্রণ করেছিলেন। ওঁর পরিবারের সঙ্গেও আমার খুব ভাল সম্পর্ক। নতুন শহরে নিজেকে একা মনে হয়নি দাদার উপস্থিতির জন্য। ওঁর মুখে হাসি লেগেই থাকত। পরোপকারী ছিলেন। আমাকেই তো কত মানুষের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন।
সতীশজি ওঁর কেরিয়ারে কমেডি বেশি করেছেন। কিন্তু সব সময় বলতেন এখন ওটিটি আসায় অভিনেতারা অনেক বেশি সুযোগ পাচ্ছেন। ওঁকেও যে সিরিয়াস চরিত্রে ভাবা হচ্ছে সেই বিষয়টা নিয়ে খুব খুশি ছিলেন। নির্মাতারাও সে রকম নতুন নতুন কনটেন্ট নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে পারছেন। উনি নিজেও ওঁর প্রযোজনা সংস্থার অধীনে নতুন নতুন বিষয় নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেন। উনি একটা নতুন হিন্দি ছবি পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেই ছবিতে আমারও থাকার কথা। সে দিনও কথা হল দাদার সঙ্গে। তার পর এই দুঃসংবাদ।