‘নাচ নাগিনী নাচ রে’ ছবির শুটিংয়ের দিনে ফিরে গেলেন টোটা রায়চৌধুরি —ফাইল চিত্র।
টলিপাড়ায় তাঁর ফিটনেস নিয়ে কোনও দ্বিমত থাকতে পারে না। কেরিয়ারের শুরুর দিন থেকেই রোমহর্ষক স্টান্ট সিংহভাগই নিজে করতেন টোটা রায়চৌধুরী। অতীতের সেই অভিজ্ঞতা অনুরাগীদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন টোটা।
‘নাচ নাগিনী নাচ রে’ ছবির শুটিংয়ের দিনে ফিরে গিয়েছেন টোটা। অঞ্জন চৌধুরী পরিচালিত সুপারহিট ছবিটির গানের শুটিং চলছে। কোরিয়োগ্রাফার মুম্বইয়ের ওমপ্রকাশ। তিনি অভিনেত্রী চুমকি চৌধুরীর মাথার উপর দিয়ে টোটাকে লাফানোর নিদান দিলেন। সে দিন পরিচালক ফ্লোরে ছিলেন না। তাই ওমপ্রকাশই নির্দেশক। ইউনিটের সকলেই সম্ভাব্য চোটের প্রসঙ্গ তোলেন। এ দিকে আলোচনার মাঝেই ওমপ্রকাশ বলে বসেন, ‘‘থাক, এ সব এখানে কেউ করতে পারবে না। এটা অক্ষয় কুমার হলে এক কথায় করে দিত।’’ টোটা লিখেছেন, ‘‘তার মানে বাঙালিরা পারে না? রোখ চেপে গেল। শট আমি দেবই। এবং সবার মানা সত্ত্বেও দিলাম।’’
টোটা জানিয়েছেন, ওই শটের পর ওম নাকি ছুটে এসে অভিনেতাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। এক বার নয়, বেশ কয়েকটা টেক দিয়েছিলেন টোটা। তাঁর লেখনী বলছে, ‘‘আমিও পর পর শট দিয়ে গেলাম যত ক্ষণ না উনি সর্বসমক্ষে স্বীকার করতে বাধ্য হলেন যে বম্বের মানদণ্ডেও স্টান্ট’টি নিখুঁত হয়েছে।’’
এরই পাশাপাশি বাণিজ্যিক ছবির প্রতি টলিপাড়ার নেতিবাচক মনোভাবের প্রসঙ্গে টেনে এনেছেন টোটা। তাঁর কথায়, ‘‘ইদানীং এখানে তো প্রায় সবাই লার্জার দ্যান লাইফ ছেড়ে স্লাইস অফ লাইফের পশ্চাতেই ধাবমান। ফলত ‘পাঠান’, ‘পুষ্পা’ তো গ্রহান্তরের, ‘পাগলু- ২’ নির্মাণেরও সামর্থ্য বা সক্ষমতা, আমাদের ক্রমে ক্রমে হ্রাস পেয়েছে।’’
এই প্রসঙ্গেই বর্তমানে টলিউডে স্টান্ট নিয়ে নির্মাতাদের উদাসীনতার প্রসঙ্গটিও মনে করিয়ে দিয়েছেন টোটা। ছবির বদলে যাওয়ার ধরন দেখে এখন আর সুস্থ শরীরকে ব্যস্ত করার পক্ষপাতী তিনি নন। কারণ তিনি লিখছেন, ‘‘বিশেষ করে যেখানে স্টান্ট দৃশ্যায়নের সময়ে আমাদের সুরক্ষার ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাপনায় অতিজাগতিক ঔদাসীন্য প্রত্যক্ষ করলে হলিউড বা বলিউড, চেলা উড (ইয়ে চেলি কাঠ দিয়ে) হয়ে যায়। তবে ব্যতিক্রম অবশ্যই রয়েছে। টোটা উদাহরণ দিতে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করেছেন। ফেলুদা সিরিজ়ের শুটিংয়ের সময় স্টান্টম্যান থাকা সত্ত্বেও পাহাড় থেকে খাদে লাফানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাই টোটার কথায় সৃজিত ‘সমগোত্রীয় সহ-উন্মাদ’। শট ওকে হওয়ার পর সৃজিতের শিশুসুলভ হাততালি দেওয়ার কথাও প্রকাশ্যে এনেছেন টোটা। টোটার স্মৃতিচারণা নজরে আসতেই সৃজিতের পাল্টা প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার ফেলুদা। তোমাকে নিয়ে আমি চিরকাল গর্বিত।’’