অম্বরীশ ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত।
ব্যোমকেশ হিসেবে দেবের আবির্ভাবের খবর ছড়িয়ে পড়তেই সমাজমাধ্যমে ট্রোলিংয়ের শিকার হয়েছেন অভিনেতা। তালিকায় রয়েছে অম্বরীশ ভট্টাচার্যের নামও। কারণ ‘ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য’ ছবিতে তিনি অজিতের ভূমিকায়। অম্বরীশের চেহারা দেখে প্রশ্ন উঠেছিল, অজিত কেন এত মোটা! বিষয়টি নিয়ে কোনও রকম ভয় না পেয়ে অম্বরীশ কিন্তু অন্য মতে বিশ্বাসী। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘যাঁরা এটা বলছেন, তাঁদের সঙ্গে কি অজিতের পরিচয় ছিল?’’ দেবের তরফে প্রথম প্রস্তাব আসার পর, অম্বরীশ নিজেও কিছুটা অবাকই হয়েছিলেন। কারণ তাঁরও মনে হয়েছিল, শৈলেন মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত অজিতের চরিত্রাভিনেতারা কেউই খুব একটা ‘ওজনদার’ নন। অম্বরীশের কথায়, ‘‘তার পর মনে হল, কেন নয়! ফেলুদা এবং ব্যোমকেশের ভিড় নিয়ে তো প্রশ্ন উঠতেই থাকে। তা হলে হোক না অজিত একটু অন্য ধরনের। ক্ষতি কী?’’ এই চরিত্রে অভিনয় করে অম্বরীশ কিন্তু নিন্দকদের পাল্টা জবাব দিতে চাইলেন। জোর গলায় বললেন, ‘‘দর্শক বা সমালোচকদের খারাপ লাগতেই পারে। তাঁদের মতামত আমি শুনতে রাজি। তবে আমার মনে হয়, কাজটা আমি ভালই করেছি।’’
এতটা আত্মবিশ্বাস! ট্রোলিংকে ভয় পান না? অম্বরীশ বললেন, ‘‘আসলে, অনেকেই হয়তো জানেন না, এমন অনেক তারকা রয়েছেন, যাঁদের নিয়ে ট্রোলিং হয় না বলে তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন! ভাবেন, ট্রোলিং হচ্ছে না মানে, তাঁদের কদর কমে গিয়েছে! তাঁদের সঙ্গে ব্যক্তিগত স্তরে আমার কথাও হয়েছে। আমি অবশ্য ট্রোলিংকে পাত্তা দিই না।’’ কথা প্রসঙ্গেই দেবের উদাহরণ দিলেন অম্বরীশ। কারণ কেরিয়ারের শুরু থেকেই দেবকে সমালোচনার সঙ্গে লড়াই করে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা তৈরি করতে হয়েছে। অম্বরীশের কথায়, ‘‘ওকে নিয়ে তো শুরু থেকে ট্রোলিং হয়েছে। কিন্তু তাতে কি ওর কেরিয়ারের কোনও ক্ষতি হয়েছে? আমার তো মনে হয়, উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে।’’
দেবকে ব্যোমকেশ হিসেবে দেখেও অম্বরীশ যথেষ্ট উচ্ছ্বসিত। জানালেন, শটের সময় দেব প্রত্যেক বার সঠিক সংলাপ বলছেন কি না তা অভিনেতার থেকে জেনে নিতেন। কিন্তু ব্যোমকেশ হিসেবে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের একটা নিজস্ব পরিচিতি তৈরি হয়েছে। সেখানে দেবকে তিনি কোন আসনে বসাতে চান? অম্বরীশ জোর গলায় বললেন, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবে আমি অনির্বাণের অভিনয়ের ভক্ত। কিন্তু দেবের সঙ্গে এই ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে বাধা নেই,, উত্তম কুমারের পর দেবই হল আমার দেখা অন্যতম সেরা ব্যোমকেশ।’’
শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখনীর ভক্ত বলেই দীর্ঘদিন অজিত চরিত্রটির সঙ্গে ঘর করেছেন অম্বরীশ। তাঁর উপলব্ধি, ‘‘অজিত কিন্তু নায়ক নয়। একজন সাহিত্যিক, যে ব্যোমকেশের সঙ্গে ঘুরে গল্পের সন্ধানে থাকে। এখানেও আমরা সেই ভাবনাই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।’’ অম্বরীশ পরীক্ষায় বসেছেন। অভিনেতার মতে, সব প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন। এ বার ফল জানতে অবশ্য খুব বেশি অপেক্ষা করতে হবে না। কারণ ছবি মুক্তি পাচ্ছে আগামী ১১ অগস্ট।