দেবাংশু ভট্টাচার্যের নিশানায় টলি অভিনেতারা। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
অভিনেত্রী মৌসুমী ভট্টাচার্যের উদ্দেশে মন্তব্য করে সমাজমাধ্যমে কটাক্ষের শিকার হয়েছিলেন তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টচার্য। সমস্যার সূত্রপাত, মৌসুমীর একটি মন্তব্যকে ঘিরে। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে নেমে অভিনেত্রী বলেছিলেন, “জনগণের হাতে কুণাল ঘোষ ও দেবাংশু ভট্টাচার্য পড়লে কে বাঁচাতে আসবে দেখব।” পাল্টা মন্তব্য করতে গিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছিলেন কুণাল ও দেবাংশু। তাঁদের পোস্টে উঠে আসে, মৌসুমী বিবাহিত কি না এই প্রশ্নও। তবে দেবাংশুর ‘বদন বিগড়ে গিয়েছে’ মন্তব্যে রুষ্ট হন নেটাগরিকের একাংশ। টলিপাড়ার একদল অভিনেতাও এই মন্তব্যের নিন্দায় সমাজমাধ্যমে মুখ খোলেন। এ বার সেই অভিনেতাদের উদ্দেশে মুখ খুললেন দেবাংশু।
সমাজমাধ্যমের ভিডিয়োয় দেবাংশুর নিশানায় স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, বিদীপ্তা চক্রবর্তী, শ্রীলেখা মিত্র, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, দেবলীনা দত্ত। এঁরা প্রত্যেকেই দেবাংশুর মন্তব্যের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। প্রথমেই দেবলীনার উদ্দেশে দেবাংশু পাল্টা প্রশ্ন রেখেছেন, “আপনারা জানেন মৌসুমী দেবী কী ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন? আপনারা কি পুরো ভিডিয়োটা শুনেছিলেন?” সেই ভিডিয়ো দেবাংশু চালিয়ে বলেন, “আমাকে ‘কালীঘাটের কুলি’ বলা হয়েছে। তবে পাঁচ বছরে এমন বহু আক্রমণ সয়েছি। তাই কোনও প্রতিক্রিয়া দিইনি।”
অভিনেতাদের উদ্দেশে দেবাংশু প্রশ্ন তোলেন, “আপনাদের সতীর্থ (মৌসুমী) গণধোলাইতে উস্কানি দিয়েছেন। আপনারা তো একটি শব্দও খরচ করলেন না এর প্রতিবাদে?” মৌসুমী মন্তব্য করেছিলেন, “সবাই অসুস্থ হন। এঁরা (কুণাল ও দেবাংশু) যে দিন অসুস্থ হবেন, চিকিৎসকেরা বুঝে নেবেন।” দেবাংশু এই প্রেক্ষিতে বলেন, “এটা বিনা চিকিৎসায় মেরে ফেলার হুমকি নয়? এটা কি আপনারা শুনেছিলেন?”
সুদীপ্তা চক্রবর্তীর পোস্ট উল্লেখ করেও দেবাংশু একই প্রশ্ন তোলেন। পরমব্রত এই প্রসঙ্গে লিখেছিলেন, “কারও কথা আক্রমণাত্মক মনে হলে রাজনৈতিক জবাব দিন। তিনি আপনাদের রাজনৈতিক ভূমিকার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। আপনাকে কেমন দেখতে, কাজ আছে কি না, আপনার বিয়ে হয়েছে কি না, তাই নিয়ে কথা বলেছেন কি?”
পরমব্রতের উদ্দেশে দেবাংশু বলেছেন, “এই মুহূর্তে আমার পছন্দের প্রথম তিন অভিনেতার মধ্যে একজন হলেন পরমদা। কিন্তু যেটা শুনলেন মৌসুমীদেবীর মুখে সেটা সত্যিই রাজনৈতিক তো? সত্যিই পোস্টটি আপনি লিখেছেন তো? না কি সবাই দেবাংশুকে গালাগাল করছে বলে হাওয়ায় গা ভাসিয়ে আপনিও গালাগাল দিলেন।”
শ্রীলেখাকে কটাক্ষ করে দেবাংশু বলেন, “আমি পুরুষ বলেই পোটেনশিয়াল রেপিস্ট। আর আপনি আর একজন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে যে ভাষায় আক্রমণ করেন, সেটা কী? সেই ভাষা কি ভদ্র?” স্বস্তিকার উদ্দেশে দেবাংশুর বক্তব্য, “মৌসুমীদেবী আমাদের গণধোলাইয়ের হুমকি দিয়েছেন। আমরা ঠাট্টা করেছি। আর তিনি আমাদের বিনা চিকিৎসায় মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন। আপনারা কেউ কিছু বললেন না তো? আপনাদের জগতের মানুষকে নিয়ে হাসিঠাট্টা বলে আপনারা একজোট হয়ে আমাদের আক্রমণ করছেন। আমাদের দলে অন্যায় করলে আমরা তাঁকে সমর্থন করি না। আপনারা কেন নিজের জগতের কেউ অন্যায় করলে মুখ খোলেন না?”
অভিনেতারা কি সিপিএমের দ্বারা ট্রোলড হতে ভয় পান? প্রশ্ন তুলেছেন দেবাংশু। তাঁর কথায়, “মৌসুমী দেবী সিপিএমের সঙ্গে যুক্ত বলেই কিছু বলছেন না? আপনারা কি সিপিএমের ট্রোল-বাহিনীকে ভয় পান? স্বস্তিকা দেবীর তো সিপিএমের ট্রোল বাহিনীর আক্রমণের অভিজ্ঞতা আছে।”