ধারাবাহিক ‘পরিণীতা’র কারণে বড় বদল ছোট পর্দায়। ছবি: জ়ি বাংলা।
ধারাবাহিকের সময় বদল নতুন কিছু নয়। নতুন ধারাবাহিক এলে তাকে জায়গা ছেড়ে দিতেই হয়। অনেক সময় রেটিং চার্টের ফলাফলেও বদলে যায় ধারাবাহিকের সম্প্রচারের সময়। অনেক সময় তাতে পুরনো ধারাবাহিকের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল মেলে। কিছু সময় নেতিবাচক। সোমবার সন্ধ্যায় জ়ি বাংলায় আসছে আরও একটি নতুন ধারাবাহিক ‘পরিণীতা’। তার জন্য একটি বা দু’টি নয়, চ্যানেলের এক গুচ্ছ ধারাবাহিক এবং রিয়্যালিটি শো-র সম্প্রচারের সময় যাচ্ছে বদলে।
যেমন, ধারাবাহিক ‘অমর সঙ্গী’র নতুন সময় বিকেল সাড়ে ৩টে। রিয়্যালিটি শো ‘রান্নাঘর’ এ বার থেকে দেখা যাবে বিকেল ৪টেয়। ‘দিদি নম্বর ১’, ‘পুবের ময়না’, ‘নিমফুলের মধু’র নতুন সময় যথাক্রমে বিকেল সাড়ে ৪টে, সাড়ে ৫টা, সন্ধ্যা ৬টা। এর মধ্যে রিয়্যালিটি শো ‘রান্নাঘর’ এবং ‘অমর সঙ্গী’ বাকিদের তুলনায় নতুন।
‘পরিণীতা’র কারণে এই নতুন সময় বাকি শো-এর ভাগ্যেও কি বদল ঘটাবে?
জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল ‘দিদি নং ১’-এর পরিচালক অভিজিৎ সেনের সঙ্গে। তিনি আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বললেন, “২০১০ থেকে রিয়্যালিটি শো-টি পরিচালনা করছি। সময় বদলেছে। কখনও সঞ্চালকও বদলেছেন। কিন্তু দর্শকের ভালবাসা বদলায়নি। যে সময়েই সম্প্রচার হোক, এই রিয়্যালিটি শো-এর জন্য মুখিয়ে থাকেন আট থেকে আশি।” ফলে, সময় বদল নিয়ে তাঁর কোনও আলাদা ভাবনা নেই।
আপাতত ছোট পর্দায় তিনি ‘বাবুর মা’। দু’বছরেও বেশি সময় ধরে চলছে ধারাবাহিক ‘নিমফুলের মধু’। এখানেই তিনি অর্থাৎ, অরিজিতা মুখোপাধ্যায় নায়ক সৃজনের মা। এত দিন ধরে রাত ৮টায় ধারাবাহিকটি দেখানো হত। এ বার সেটি দেখা যাবে সন্ধ্যা ৬টায়। দু’ঘণ্টার এই বদল কি ভাল হল? প্রশ্ন রাখা হয়েছিল অভিনেত্রীর কাছে। অরিজিতা আশাবাদী, যাঁরা ‘নিমফুলের মধু’-এর মধুকে জনপ্রিয় বানিয়েছেন তাঁরা মুখ ফেরাবেন না। ফলে, রেটিং চার্টেও খারাপ প্রভাব পড়বে না বলেই ধারণা তাঁরও।
লম্বা বিরতির পরে ছোট পর্দায় ফিরেছেন কণীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার তিনি সঞ্চালনায়। দুর্গাপুজোর আগে জ়ি বাংলায় শুরু হয়েছে ‘রান্নাঘর’। এত দিন সেটি সাড়ে ৩টেয় দেখানো হচ্ছিল। এ বার সেটি বিকেল ৪টেয় দেখা যাবে। সময় বদলে খুশি অভিনেত্রী-সঞ্চালিকা? প্রশ্ন রেখেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। অভিনেত্রীর কথায়, “এই রিয়্যালিটি শো-টি সদ্য শুরু হয়েছে। তার মধ্যেই দর্শকদের থেকে ভালবাসা পাচ্ছে। আগামীতেও সেই ধারা বজায় রাখতে পারব, আশা করছি। কারণ, এখানে রান্নার পাশাপাশি মেয়েদের অনেক কথা, তাঁদের নিয়ে তৈরি অনেক বিষয় দেখানো হয়।” সেই জায়গা থেকেই তাঁরও মনে হচ্ছে, বিকেল ৪টেয় সাধারণত বাড়ির মেয়েরা একটু হলেও কাজ থেকে বিরতি পান। ফলে, এই সময় কোনও শো আসা মানে দর্শকসংখ্যা বাড়া। সেই প্রবণতা থাকলে অবশ্যই রেটিং চার্টেও ভাল করবে ‘রান্নাঘর’, জানিয়েছেন তিনি। বাকিটা তিনি ছেড়ে দিচ্ছেন সময়ের হাতে।
‘অমর সঙ্গী’ নামটা শুনলেই প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় অভিনীত ব্লকবাস্টার ছবির কথা মনে পড়ে। ছোট পর্দায় তাঁরই প্রযোজনায় মাস দুয়েক আগে এসেছে একই নামের ধারাবাহিক। নায়ক-নায়িকা নীল ভট্টাচার্য-শ্যামৌপ্তি মুদলী। ফোন করতেই নায়িকা স্বীকার করেছেন, একটু চিন্তা হচ্ছে তাঁর। এত দিন দুপুর ২ টো ৩০ মিনিটে ধারাবাহিকটি সম্প্রচারিত হত। এক ঘণ্টা পিছিয়ে গেলে দর্শকসংখ্যা কি আরও একটু বাড়বে? ব্যস্ততার ফাঁকে তাঁর জবাব, “একটা সপ্তাহ না গেলে কিছুই বলা যাচ্ছে না। তবে সাধারণ বুদ্ধি অনুযায়ী, অনেকে খেতে খেতে ধারাবাহিকটি দেখতেন। তাঁরা হয়তো খেয়ে উঠে দেখবেন। যাঁরা ওই সময় একটু জিরিয়ে নেন তাঁরাও হয়তো এ বার দর্শকের তালিকায় যোগ দিতে পারেন।” অর্থাৎ, সময় বদল নিয়ে আশাবাদী তিনিও। এ-ও জানিয়েছেন, যে কোনও ধারাবাহিকের সময় বদল মানেই ভাল কিছু ভেবেই এই পদক্ষেপ করা। শ্যামৌপ্তির কথায়, “চ্যানেল কর্তৃপক্ষ এবং প্রযোজক, উভয়েই ব্যবসা করছেন। ফলে, তাঁরা এমন কিছু করবেন না যা ধারাবাহিকের পক্ষে ক্ষতিকর হবে। আমিও তাই আশাবাদী, যা হবে ভালই হবে।”