‘মেড ইন হেভেন ২’-এর একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।
চার বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার পরে গত সপ্তাহে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে ‘মেড ইন হেভেন’ সিরিজ়ের দ্বিতীয় সিজ়ন। ২০১৯-এ ‘মেড ইন হেভেন’-এর প্রথম সিজ়ন মুক্তি পেয়েছিল। বিয়ের মতো এক হই-হুল্লোড়ে ভরা সামাজিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বৈষম্যে ভরা দিল্লির সামাজিক চিত্র তুলে ধরেছিলেন জ়োয়া আখতার ও রীমা কাগতি। উচ্চবিত্ত পরিবারে পণপ্রথার পরম্পরা, যৌন হেনস্থার ঘটনা থেকে শুরু করে বিয়ের আচার-অনুষ্ঠানে কুসংস্কারের অস্তিত্বের মতো বিষয়কে সহজবোধ্য কিছু গল্পের মোড়কে পরিবেশন করেছিল ‘মেড ইন হেভেন’-এর প্রথম সিজ়ন। দ্বিতীয় সিজ়নে সামাজিক বৈষম্যের আরও গভীরে প্রবেশ করেছে জ়োয়া ও রীমার এই সিরিজ়। সেখানে বহুগামিতা ও গার্হস্থ্য হিংসার মতো সংবেদনশীল বিষয় যেমন রয়েছে, তেমনই জায়গা পেয়েছে বিয়ের মতো এক সামাজিক অনুষ্ঠানে দলিত সম্প্রদায়ের অবস্থানও। দ্বিতীয় সিজ়নের পঞ্চম পর্বের গল্পে পল্লবী মেনকে (রাধিকা আপ্তে) দলিত সম্প্রদায়ের সদস্য। মেধা ও বিদ্যার জোরে এখন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সে, ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় এক বইয়ের লেখকও। তা সত্ত্বেও বিয়ের ক্ষেত্রে একের পর এক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তাকে। ‘মেড ইন হেভেন ২’-এর এই পর্ব প্রশংসা কুড়িয়েছে সর্বত্র। কিন্তু পাশাপাশি বিতর্কও তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি দলিত সম্প্রদায়ের সদস্য এবং সাংবাদিক ও লেখক ইয়াশিকা দত্ত দাবি করেছেন, তাঁর জীবনের গল্পের উপর ভিত্তি করে ‘মেড ইন হেভেন ২’-এর পঞ্চম পর্বের চিত্রনাট্য বেঁধেছেন সিরিজ়ের নির্মাতারা। অথচ, তাঁর অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন তো বোধ করেনইনি, উপরন্তু, তাঁকে যোগ্য মর্যাদা পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। এ বার এই অভিযোগের জবাব দিলেন সিরিজ়ের নির্মাতারা।
জ়োয়া, রীমা এবং নীরজ, প্রত্যেকেই তাঁদের সমাজমাধ্যমের পাতায় বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ইয়াশিকার সব অভিযোগই ভিত্তিহীন। তাঁরা কারও জীবন থেকে এই পর্বের গল্প নেননি। সাধারণ পদ্ধতিতে গবেষণার মাধ্যমেই তাঁরা চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন। গল্পে পল্লবীর চরিত্রের ঠাকুমার গল্পের সঙ্গে ইয়াশিকার লেখা বই ‘কামিং আউট অ্যাজ আ দলিত’-এর মিল পাওয়া যেতেই পারে। কারণ, এই সম্প্রদায়ের ইতিহাস ঘাঁটতে গিয়ে বহু ক্ষেত্রেই তাঁরা একই ধরনের ঘটনা পেয়েছেন। পাশাপাশি তাঁরা জানিয়েছেন, ইয়াশিকার বই ছাড়াও সুজাতা গিডলের ‘অ্যান্টস আমং এলিফ্যান্টস’, সূরজ ইয়েংদের ‘কাস্ট ম্যাটার্স’-এর মতো বহু বই থেকেই এই পর্বের পল্লবীর কাল্পনিক বই ‘ডিনায়েড’ অনুপ্রাণিত।
নির্মাতারা জানিয়েছেন, তাঁরা খুব সৎ ভাবেই নানা রকম গল্প বলার চেষ্টা করছেন। এবং ভবিষ্যতেও করবেন। এই পোস্টের পর ইয়াশিকা কী প্রতিক্রিয়া দেন, আইনি পথে হাঁটেন কি না, তা-ই দেখার।