The Kerala Story Controversy

বঙ্গে নিষিদ্ধ, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ নির্মাতারা, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে জল কত দূর গড়াল?

সোমবারই রাজ্যে নিষিদ্ধ হয় ‘দ্য কেরালা স্টোরি’, অন্য দিকে বিজেপি অধ্যুষিত রাজ্যে করমুক্ত করা হয়েছে এই ছবিকে। চব্বিশ ঘণ্টা পেরিয়ে কোন দিকে গড়াচ্ছে এই ছবি ঘিরে বিতর্ক?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২৩ ২১:৫১
Poster Of The kerala Story Movie

ছবি নিষিদ্ধ হওয়ার পর কত দূর গড়াল ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ বিতর্ক? ছবি: সংগৃহীত।

সপ্তাহের শুরুতেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিষিদ্ধ করেছে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবিকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্যের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ছবিতে সাম্প্রদায়িক উস্কানি রয়েছে। অশান্তি এড়াতেই ছবি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ছবিটি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গেলেন ছবির নির্মাতারা। তাঁরা অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। অন্য দিকে ব্যবসায়িক সাফল্যের নিরিখে সারা দেশে প্রায় মাত্র ৩ দিনে এই ছবি ৩৫ কোটির গণ্ডি পার করে ফেলেছে। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলির মধ্যে মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশ ছবিটিকে করমুক্ত করেছে।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গে ছবিটি নিষিদ্ধ করার পর থেকে ঠিক কী কী হল?

রবিবার রাতে কলকাতার একাধিক প্রেক্ষাগৃহে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ দেখতে ভিড় করেছিলেন দর্শক। তবে যে মুহূর্তে সরকারি নির্দেশ হাতে এসেছে, তার পর আর ছবিটি প্রদর্শন করেননি হল মালিকরা। মঙ্গলবার এই প্রসঙ্গে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবির পরিচালক সুদীপ্ত সেন সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছবিটি না দেখেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন। এটা দুর্ভাগ্যজনক।’’ এই প্রসঙ্গেই তিনি আরও বলেন, ‘‘ছবিটার জন্য পশ্চিমবঙ্গে কোনও অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেনি। এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’’ ছবিটি রবিবার পর্যন্ত রাজ্যে দেড় কোটি টাকার ব্যবসা করেছে বলেই জানান হল মালিকরা।

উল্টো দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ছবির প্রযোজক বিপুল অম্রুতলাল শাহ। সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্‌স’ প্রসঙ্গও টেনে আনেন মমতা। একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে হেনস্থা করার জন্য তৈরি করা হয়েছে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্‌স’, মন্তব্য করেন তিনি। মমতার এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবারই মানহানির মামলা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্‌স’ ছবির পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। মঙ্গলবার মমতাকে আইনি নোটিস পাঠান তিনি। বিবেক সমাজমাধ্যমের পাতায় লেখেন, ‘‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সম্পূর্ণ ভুল ও আপত্তিকর মন্তব্যের দ্বারা ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্‌স’ ও আমাদের আগামী ছবি ‘দ্য দিল্লি ফাইল্‌স’-এর ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। এই মর্মে আমি, অভিষেক আগরওয়াল ও পল্লবী জোশী তাঁকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছি।’’

পশ্চিমবঙ্গই প্রথম রাজ্য, যেখানে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে তামিলনাড়ু এবং কেরলেও বিক্ষিপ্ত ভাবে এই ছবিকে ঘিরে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে। কেরলে এই ছবিকে বেশি প্রেক্ষাগৃহই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তামিলনাড়ুতেও প্রেক্ষাগৃহ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এই ছবি। যদিও ছবির পরিচালক সুদীপ্ত সেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করেছেন, ছবিটি দেখে তার পর কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হতে। পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘ছবিটি দেখলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গর্বই হবে বাঙালি হয়ে একজন এমন ছবি বানাতে পেরেছে দেখলে।’’

অন্য দিকে এই ছবির উপর নিষেধাজ্ঞা জারিতে সরব হয়েছে মুম্বইয়ের প্রযোজক সংগঠন। প্রোডিউসার’স গিল্ড অব ইন্ডিয়ার তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, তারা ছবির উপর কোনও রাজ্য সরকারের নিষেধাজ্ঞার বিরোধী। বিবৃতিতে লেখা হয়, ‘‘ছবির মুক্তি নির্ধারণ করে সিবিএফসি (সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন)। তাদের তরফে ছাড়পত্র পেলে আর কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’ সোমবার থেকে মঙ্গলবার প্রায় গোটা দিনই ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে একের পর এক ঘটনাপ্রবাহ। শেষ অবধি কোথায় গিয়ে থামে এই বিতর্ক, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement