পরীমণি এবং তসলিমা নাসরিন।
বাংলাদেশের নায়িকা পরীমণির সমর্থনে এ বার মুখ খুললেন তসলিমা নাসরিন। তিনি হতবাক, নেটমাধ্যমে পরীমণির বিরুদ্ধে প্রতি দিন নেটাগরিকদের উগরে দেওয়া কটূক্তির পরিমাণ দেখে। নিজের সামাজিক পাতায় তিনি সে কথা জানিয়ে লিখেছেন, ‘ফেসবুকে শিং মাছের মতো দেখছি প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে উঠছে বাংলাদেশের নায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে কুৎসিত সব গালাগালি!’
কিছু দিন আগে গভীর রাতে বাংলাদেশের ঢাকা ক্লাবে কিছু পুরুষের হেনস্থার শিকার হন অভিনেত্রী এবং তাঁর বন্ধুরা। তার পর থেকেই পরীমণি সামাজিক পাতায় নেটাগরিকদের চর্চার কেন্দ্রে।
কী বলেছেন লেখিকা? বিষয়টিকে একেবারেই ভাল চোখে দেখছেন না তসলিমা। ব্যক্তিগত ভাবে না চিনলেও তিনি সব সময়েই সম্মান করেন নারীর প্রতিবাদী সত্তাকে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে তাঁর মত, ‘বাংলাদেশের সিনেমা আমি দেখি না। পরীমণির নামও আগে শুনিনি। তবে তাঁকে আমি দূর থেকে শ্রদ্ধা আর ভালবাসা জানাচ্ছি’। পাশাপাশি তাঁর আরও দাবি, কোনও মেয়ের বিরুদ্ধে যখন লোকেরা ক্ষেপে ওঠে তখন তাকে ১০ দিক থেকে হামলা করতে থাকে। এমন উন্মত্ত হয়ে ওঠে যেন নাগালে পেলে তাকে ছিঁড়ে ফেলবে, ছুড়ে ফেলবে, পুড়িয়ে ফেলবে, পুঁতে ফেলবে, ধর্ষণ করবে, খুন করবে, কুচি কুচি করে কেটে কোথাও ভাসিয়ে দেবে। তখনই সেই মেয়ে সম্বন্ধে লেখিকার ধারণা জন্মায়, মেয়েটি নিশ্চয়ই খুব ভাল। সৎ, সাহসী, সোজা কথার মেয়ে।
এ প্রসঙ্গে নিজের জীবনকথা আরও এক বার মনে করিয়ে দিয়েছেন তসলিমা। লেখিকার দাবি, ‘সব মেয়ে লড়াই করে না, কিছু মেয়ে করে। কিছু মেয়ে লড়াই করে বাকি মেয়েদের জন্য যুগে যুগে ভাল পরিস্থিতি নিয়ে আসে। এই লড়াই করা কিছু মেয়েই এক একেকটি মাইল ফলক। আমার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা এটাই বলে’।
তসলিমা এই পোস্ট ভাগ করে নিতেই ফের শুরু নতুন বিতর্ক। নেটাগরিকের বেশ কিছু জন সমর্থন জানিয়েছেন তাঁকে। তাঁদের দাবি, সাইবার বুলিং ঘৃণ্য অপরাধ, কাপুরুষোচিত। এক জন মানুষ কতটা সংযত, কতটা আত্মনিয়ন্ত্রিত, সামাজিক পাতায় তার প্রমাণ মেলে। নেটাগরিকদের যুক্তি, এক জন অপরাধীকেও এমন কটূক্তি করা উচিত নয়, যাতে নিজের রুচি ও মূল্যবোধের অবনমন ঘটে। বাকিদের মতে, পরীমণির আচার-আচরণ নিয়ে দ্বিধান্বিত তাঁর নিজের দেশের বাসিন্দারাই। ফলে, তাঁর সমর্থনে মুখ আদৌ খোলা উচিত কি না সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
এ দিকে কটূক্তির পাশাপাশি অভিনেত্রীর স্বপক্ষে সামাজিক পাতায় বিশাল জন সমর্থনও তৈরি হয়েছে। ঘটনার পরেই পরীমণির হয়ে মুখ খোলেন এ পার এবং ও পার বাংলার আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানোর পরেই ‘পরীমণি কাণ্ড’-এ জড়িতদের শাস্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম।