বিচার চেয়ে পথে সুদীপ্তা চক্রবর্তী, সুজন নীল মুখোপাধ্যায় এবং বাদশা মৈত্র। ছবি: সংগৃহীত।
১৪ অগস্ট থেকে ঘুম ভুলেছে কলকাতা। স্বাধীনতার আগের রাত থেকে ক্রমাগত রাত জাগছে শহরবাসী। একটাই চাওয়া সকলের, ‘বিচার চাই’। সেই চাওয়ায় শনিবার শামিল হলেন বাংলার নাট্যকর্মীরা। সুজন নীল মুখোপাধ্যায়, পৌলমী বসু, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, চৈতি ঘোষাল, বাদশা মৈত্র, অনির্বাণ চক্রবর্তী, দেবদূত ঘোষ, সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দুই প্রজন্মের নাট্যব্যক্তিত্বেরা। গিরিশ মঞ্চ থেকে পায়ে হেঁটে সকলে আরজি কর হাসপাতালে পৌঁছন। এই সমাবেশে যোগ দেন নাট্য অ্যাকাডেমির সভাপতি দেবশঙ্কর হালদারও। হাসপাতাল চত্বরেই অভিনেতা বাদশা প্রশ্ন তোলেন, “প্রভাবশালীরা দিনের শেষে বিলাসবহুল ঘরে আরামে ঘুমোন। আর যাঁরা আমাদের নতুন জীবন দেন সেই চিকিৎসকেরা সেমিনার হলে রাত্রিযাপন করেন! এত বৈষম্য কেন?”
মাত্র ২৪ ঘণ্টা হাতে ছিল। তার মধ্যে পোস্টার বানানো, কয়েক দফা দাবি তৈরি, সকলকে জড়ো করা থেকে পদযাত্রা পরিচালনা— আয়োজন করেছেন পৌলমী, সুদীপ্তা, নিবেদিতা মুখোপাধ্যায়। আনন্দবাজার অনলাইন যখন গিরিশ মঞ্চের সামনে তখন নাট্যকর্মীরা এসে গিয়েছেন। তাঁদের পায়ে পা মেলাতে এসেছেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ। সেখানেই সুদীপ্তা বলেন, “আমরা নাট্যকর্মী। সকলে বলেন, আমাদের কাজ রং মেখে সং সাজা। তা হলে সেই কাজ ছেড়ে পথে নামতে হচ্ছে কেন? এটা তো আমাদের কাজ নয়।” সুজন নীল বলেন, “মৃতা তরুণী চিকিৎসকের জন্য ন্যায়বিচার চাওয়ার পাশাপাশি নারী সুরক্ষার জন্য আরও কয়েকটি দাবি আমাদের আছে। আমরা সে সব সাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে পথে নেমেছি।”
নির্দিষ্ট সময়ে বাগবাজার থেকে শ্যামবাজার হয়ে হাসপাতাল চত্বরে পৌঁছয় সমাবেশ। রাতের উত্তর কলকাতা মুখরিত হয় ‘বিচার চাই’ ধ্বনিতে। গেটের সামনে যথারীতি র্যাফ, পুলিশবাহিনী। নিরাপত্তার খাতিরে এ দিন কয়েক জন মাত্র ভিতরে ঢোকার অনুমতি পান। বাইরে তখন জনগর্জন, ‘আরজি কর ধিক্কার!’
অবস্থানরত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন সুজন নীল, সুদীপ্তা, চৈতি, বাদশা, নিবেদিতা, দেবদূত। মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জানান কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত চিকিৎসককে। আশ্বাস দেন বাকিদের, যত দিন না বিচার মিলবে তত দিন আন্দোলন জারি থাকবে। নাট্যকর্মীরা আবার আসবেন প্রতিবাদী চিকিৎসকদের সঙ্গে রাত জাগতে।