Sreelekha Mitra

international men's day: বিবাহবিচ্ছেদ হলেও সন্তানকে তার বাবার থেকে আলাদা করবেন না: শ্রীলেখা

এক জন নারী আর এক জন নারীকে বিচার করে থাকেন। তাঁরা বুঝতেও পারেন না যে, আসলে তাঁরাও প্রকারান্তরে পুরুষতন্ত্রের শিকার।

Advertisement
শ্রীলেখা মিত্র
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২১ ১৮:৪৯
অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র।

অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র।


৩৬৪ দিনই তো পুরুষ ‘দি’ বস! মাত্র একটি দিন নারীদের জন্য। কেবল ওই দিনটাই নারী ‘দি’ বস।
আমি অবশ্য এই দিনটির কথা আনন্দবাজার অনলাইনের থেকেই প্রথম জানলাম। আমার পুরুষ বিদ্বেষ নেই। নারীবাদীও নই। তাই নারী-পুরুষ ভেদাভেদে একেবারেই বিশ্বাসী নই। বরং লিঙ্গভেদের ঊর্ধ্বে যে দিন সমাজ উঠতে পারবে, সে দিন সকলের একটাই পরিচিতি হবে। আমরা মানুষ। আমি সে দিন খুব খুশি হব। সে দিন থেকে আর এমন বিশেষ দিবস পালনের প্রয়োজনও পড়বে না

আমরা এখনও পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বাসিন্দা। এই ধরনের সমাজের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠার কুফল কী জানেন? পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে এক জন নারী আর এক জন নারীকে বিচার করে থাকেন। কটাক্ষ করেন পোশাক নিয়ে, আচার ব্যবহার নিয়ে, বয়স নিয়ে। তাঁরা বুঝতেও পারেন না যে, আসলে তাঁরাও প্রকারান্তরে পুরুষতন্ত্রের শিকার। পুরুষদের মতো করে নিজেরই সমলিঙ্গকে দেখছেন। এবং অবচেতনে সমর্থন করছেন পুরুষতন্ত্রের চিন্তাভাবনাকে।

Advertisement

এ ক্ষেত্রে আমার সঙ্গে কুকুর নিয়ে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনার উদাহরণ দিই। আমার যদি তারকা বা নামজাদা স্বামী থাকতেন, তা হলে কিন্তু অন্য রকম ব্যবহার পেতাম। এক জন বিবাহ-বিচ্ছিন্ন মহিলা জিতে যাবেন সব বিষয়ে? স্বাধীন ভাবে চলবেন, কথা বলবেন? গণমাধ্যম কেন তাঁকে সমর্থন জানাবে? কেউ মানতে পারেন না। ফলে, আবাসনের পড়শি মহিলা নির্দ্বিধায় আমার গায়ে হাত তুলতে পারেন। কেউ তার প্রতিবাদ করেন না।

‘একা’ নারী তরবারি হয়ে উঠবে, চোখে বেঁধে সবার। কেন আমি নমনীয়, কমনীয় হব না? প্রশ্নও ওঠে। আমি কিন্তু যথেষ্ট নমনীয় এবং কমনীয়। তবে প্রয়োজন বুঝে। সকলের কাছে নয়। কেউ আমার মাথায় চেপে বসবেন আর আমি তার বিরোধিতা করব না, সেটা হবে না। শুধু নিজের জন্য নয়, অন্যের প্রতি অন্যায় হতে দেখলেও আমি আওয়াজ তুলি, তুলবও।

এত কথার পরেও বলব, আমারও কিন্তু প্রিয় পুরুষ আছেন। আমার বাবা সন্তোষ মিত্র। যিনি সদ্য আমায় ছেড়ে চলে গিয়েছেন। আমার মনে হয়, সব মেয়েরই প্রিয়তম পুরুষ বোধহয় তার বাবা। তাই যাঁরা বিবাহ-বিচ্ছিন্ন তাঁদের প্রতি অনুরোধ, আপনাদের মধ্যে ঝগড়া থাক। সন্তানকে তার বাবার থেকে আলাদা করবেন না। এতে মানুষকে ভালবাসার ভিত আলগা হয়ে যায়। আর বিশেষ দিনে পুরুষদের প্রতি আমার বিশেষ বার্তা, মন্দিরের দেবীকে পুজো করার পাশাপাশি দয়া করে সম্মান দিন নারীকেও। শুধু নিজের মা-বোন নন, অন্যের মা-বোনও যেন আপনার থেকে সম্মান পান। তবেই আপনিও সম্মান ফেরত পাবেন।
পুরুষ মানুষদের বলছি, এই দিন থেকে আপনারা পুরুষের থেকেও বেশি করে ‘মানুষ’ হয়ে উঠুন।

Advertisement
আরও পড়ুন