এই প্রথম বিদেশ সফরে সঙ্গে মা নেই
ছোট্ট মেয়েটির খেলাঘর কল্পনায় সাজানো। তার সঙ্গীরাও কাল্পনিক। খুন্নি বুড়ি আছে, যার সঙ্গে সে অনর্গল গল্প করে। আছে ভুলুওয়া ভাই, যে তাকে স্কুলে নিয়ে যায়। যেতে যেতে আকাশে এরোপ্লেন দেখায়। কিন্তু মেয়েটি ছাড়া তাদের কাউকে দেখা যায় না। শৈশবের চরিত্ররা একে একে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে। একা রয়েছে সেই মেয়ে। সত্যিকারের একা। যে চরিত্রে একক অভিনয় করেন সোহিনী সেনগুপ্ত। নাটকের নাম ‘তোমার নাম’, লিখেছিলেন স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত, সোহিনীর মা। তিনিও এখন হারিয়ে গিয়েছেন সোহিনীর জীবন থেকে।
বাবা-মাকে ছাড়া পৃথিবীটা কেমন? এই প্রশ্ন যখন আগেও যখন নাটকের সংলাপে ফুটিয়ে তুলেছেন এমন করে বুকে বাজত না সোহিনীর। কিন্তু এ বছর লাস ভেগাসে ‘তোমার নাম’ অভিনয় করতে করতে অন্য টানাপড়েন চলল অভিনেত্রীর হৃদয়ে।তাঁর মনের খবর পেতে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন।
লাস ভেগাস থেকে সোহিনী বললেন, ‘‘এর আগেও বহু বার বিদেশের মাটিতে এই শো করেছি। সঙ্গে যেতেন মা স্বাতীলেখা, বাবা রুদ্রপ্রসাদ এবং স্বামী সপ্তর্ষি।’’ এই প্রথম বিদেশ সফরে সোহিনী একাই নান্দীকার। সার্থক মঞ্চায়নের পর নিভৃতে ছুটি কাটাচ্ছেন শহরের বুকে।
তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতায় শো হলে অনেক বেশি আয়োজন করা যায়। সেট থাকে ঠিক মতো। এখানে সেই ব্যবস্থাপনা নেই। সীমিত পরিসরে নাটকটা করলাম। যদিও সবার খুব ভাল লেগেছে।’’ সঙ্গে কেউ নেই, মনখারাপ তো অনেকখানি, পাওনা কি হল কিছু? উত্তরে সোহিনী বলেন, ‘‘মা ছাড়া পৃথিবীটা কেমন লাগে, সেই উপলব্ধি এ বারের নতুন পাওনা। একা বিদেশে শো করতে আসাও এই প্রথম। একা ঘুরছি, সেটাও পাওনা।’’
মায়ের লেখা চিত্রনাট্যে আজও নিজের ছোটবেলা দেখতে দেখতে সংলাপ বলে চললেন মেয়ে, কিন্তু নাটক শেষে তাঁকে বুকে জড়িয়ে ধরার মতো আর কেউ নেই যে!