জাভেদ আখতার-কঙ্গনা রনৌতের আইনি লড়াই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন শাবানা আজ়মি। ছবি: সংগৃহীত।
যেমন বুনো ওল, তেমনই বাঘা তেঁতুল! এমন একটি প্রবাদ তাঁদের জন্য নির্ধারণ করলে বোধ হয় খুব ভুল ব্যাখ্যা করা হবে না। জাভেদ আখতার এবং কঙ্গনা রনৌতের দ্বন্দ্ব গত প্রায় চার বছর ধরে প্রত্যক্ষ করছে সারা দেশ।
শুধু অভিনেত্রী বা চিত্রনাট্যকার হিসাবেই নয়, দুই তারকাই তাঁদের নিজস্ব রাজনৈতিক মতামত প্রকাশে দৃঢ়। জাভেদ সরাসরি রাজনীতির আঙিনায় কোনও দিন পা না দিলেও সম্প্রতি বিজেপির টিকিটে লোকসভা ভোটে জিতেছেন কঙ্গনা। ২০২০ সাল থেকে জাভেদ আর কঙ্গনা পরস্পরের বিরুদ্ধে মামলা লড়ছিলেন আদালতে। চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে সেই মামলা প্রত্যহার করে নিয়েছেন জাভেদ। একই ভাবে কঙ্গনাও তাঁর বিরুদ্ধে করা পাল্টা মামলা তুলে নিয়েছেন।
প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল, যেন আপসে এই মামলার মীমাংসা করলেন জাভেদ ও কঙ্গনা। অন্তত কঙ্গনার সমাজমাধ্যমের পোস্ট তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছিল। এ বার জাভেদের স্ত্রী, অভিনেত্রী শাবানা আজ়মি স্পষ্টই জানালেন, এই মামলার নিষ্পত্তি মোটেও আপসে হয়নি। বরং আইনজীবী জয় ভরদ্বাজ এই মামলা জিতেছেন জাভেদের তরফে।
শাবানা সাফ জানিয়েছেন, কোনও দিনই জাভেদ মানহানির মামলা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করেননি। বরং তিনি চেয়েছিলেন যেন কঙ্গনা নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। সেই দাবি পূরণ হওয়ায় মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। শাবানা বলেন, “কোনও আর্থিক ক্ষতিপূরণ নয়, জাভেদ লিখিত ক্ষমাপ্রার্থনার দাবি জানিয়েছিলেন। তিনি জয়ী হয়েছেন।” তবে এখানেই থামেননি অভিনেত্রী। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, “আমি বুঝতেই পারছি না কেন সকলে এটিকে আপস মীমাংসা হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করছেন! কেউ কোথাও এক বারও বলছেন না যে গত প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে জাভেদ লিখিত ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানাচ্ছিলেন।”
২০২০ সালে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যু মামলায় জাভেদের নাম জড়ানোয় কঙ্গনার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন বর্ষীয়ান গীতিকার। পাল্টা কঙ্গনাও জাভেদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন। একাধিক শুনানির পর চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে বলে জানা যায়। আদালতে নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করেন অভিনেত্রী। তাঁর বয়ান অনুযায়ী, “১৯ জুলাই ২০২০ সালে এক সাক্ষাৎকারে করা মন্তব্য আমি নিঃশর্তে প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। ভবিষ্যতে এমন আর কখনও হবে না, এই প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছি।” এর পরই জাভেদ তাঁর মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন বলে জানা গিয়েছে।
এর পর সমাজমাধ্যমে জাভেদের সঙ্গে একটি ছবি ভাগ করে কঙ্গনা লেখেন, “আজ আমি এবং জাভেদজি আমাদের আইনি সমস্যা (মানহানির মামলা) মিটিয়ে ফেললাম মধ্যস্থতার মাধ্যমে। এই বিষয়ে জাভেদজি খুবই দয়ার্দ্র ছিলেন, তিনি কথা দিয়েছেন আমার আগামী ছবিতে গানও লিখে দেবেন।”
কঙ্গনার উল্লিখিত এই ‘মধ্যস্থতা’ শব্দটি থেকেই বিভ্রান্তি ছড়ায় বলে মনে করা হচ্ছে। শাবানার দাবি, আইনি লড়াইয়ে জয়ী হয়েছেন জাভেদ, লিখিত ক্ষমা চেয়েছেন কঙ্গনা। তবেই উঠেছে মামলা।