(বাঁ দিকে) শরিফুল ইসলাম। সইফ আলি খান (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
১৬ জানুয়ারি বান্দ্রার অভিজাত সৎগুরু শরণ আবাসনে পাঁচিল টপকে প্রবেশ করেন শরিফুল ইসলাম শেহজ়াদ। চলে যান সোজা ১০ তলায়, সইফ আলি খানের ফ্ল্যাটে। বাড়ির অন্দরে প্রবেশ করতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি তাঁকে। কারণ পিছনের দরজা খোলাই ছিল। পুলিশ সূত্রের দাবি, ডাকাতির উদ্দেশেই সইফের বাড়িতে ঢোকেন ওই ব্যক্তি। কোটি টাকা দাবি করেন। না দিতেই এলোপাথাড়ি কোপ মারতে শুরু করেন অভিনেতাকে। দু’পক্ষের ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। গুরুতর আহত হন সইফ। হয় অস্ত্রোপচার।
অভিনেতাকে ছয় বার কোপ মেরে তাঁর শিরদাঁড়ায় ছুরিকাঘাত করেন আততায়ী। চুপি চুপি সিঁড়ি দিয়ে পালাচ্ছিলেন শরিফুল। কিন্তু ধরা পড়ে যান সিসিটিভি ক্যামেরায়। ঘটনার প্রায় তিন দিন পর ঠাণে থেকে ধরা পড়েন ওই ব্যক্তি। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক, জানায় মুম্বই পুলিশ। তবে একটা ধোঁয়াশা রয়েই গিয়েছিল। ধৃত শরিফুল ও সিসিটিভিতে যে ব্যক্তিকে দেখা যায়, তাঁদের মুখের মিল নেই বলেই দাবি একটা বড় অংশের। সম্প্রতি লেখিকা তসলিমা নাসরিনও প্রশ্ন তোলেন এই একই বিষয়ে। অবশেষে জল্পনার অবসান ঘটালেন শরিফুলের বাবা।
মেঘালয়ের কাছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ডাউকি নদী পেরিয়ে এ দেশে প্রবেশ করেন প্রায় সাত মাস আগে। তার পর পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে দালালের মাধ্যমে একটি মোবাইল সিম কিনে ফেলেন। কাজের সন্ধানে চলে যান মুম্বইয়ে। ওরলি এবং ঠাণে এলাকার বিভিন্ন হোটেল, রেস্তরাঁ বা পানশালায় শরিফুল কাজ করতেন, বেতন পেতেন ১২-১৩ হাজার টাকা। এর সিংহভাগই তাঁকে পাঠিয়ে দিতে হত বাংলাদেশে মায়ের চিকিৎসার জন্য। ফলে এ দেশে শুধু বেতনের উপর ভরসা করতে পারছিলেন না।
গত অগস্ট মাসেও ওরলির একটি রেস্তরাঁয় চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে যান তিনি, দাবি ওই রেস্তরাঁর ম্যানেজারের। চরম দারিদ্র্য ও মায়ের চিকিৎসার কারণেই এমন কাজ করেছেন বলে জানিয়েছিলেন শরিফুল। যদিও তাঁর বাবার দাবি, তাঁদের অর্থনৈতিক অবস্থা স্বচ্ছল। ঘটনার দিন কয়েক আগেও শরিফুলকে টাকা পাঠিয়েছেন। তাঁরা টিভিতে ছেলেকে দেখে অবাক। পাশপাশি শরিফুলের বাবা এ-ও স্পষ্ট করেন, ‘‘সিসিটিভি ফুটেজে যে ব্যক্তি দেখা গিয়েছে এবং যাকে পুলিশ ধরেছে সে আমার ছেলে।’’