Rituparna Sengupta

Rituparna Sengupta: তুই অঙ্কে এত ভয় পাস কেন, বাবার কথা কানে ভাসে এখনও

বা আর আমার কাছে নেই। রয়েছেন শুধু স্মৃতিতে। বাবার কথা ভাবতে গেলেই ফিরে যাই শৈশবে। স্কুলের দিনগুলোতে।

Advertisement
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ ১৭:১৪
বাবাকে নিয়ে আবেগপ্রবণ ঋতুপর্ণা।

বাবাকে নিয়ে আবেগপ্রবণ ঋতুপর্ণা।

বাবা আর আমার কাছে নেই। রয়েছেন শুধু স্মৃতিতে। বাবার কথা ভাবতে গেলেই ফিরে যাই শৈশবে। স্কুলের দিনগুলোতে। তখন আমাদের পিটিএম হত। অর্থাৎ পেরেন্ট-টিচার মিটিং। ছেলেমেয়েরা কেমন পড়াশোনা করছে, শিক্ষক-শিক্ষিকারা তা বৈঠক করে অভিভাবকদের জানাতেন। এই মিটিংগুলোয় আমার সঙ্গী হতেন বাবা। তখন কী অদ্ভুত একটা ভয় কাজ করত। ভাবতাম, শিক্ষক-শিক্ষিকারা কী বলবেন বাবাকে। বাবা-ই বা উত্তরে কী বলবেন!

সব বিষয়ে আমি আগাগোড়াই ভাল নম্বর পেতাম। ভয় ছিল শুধু অঙ্কে। অঙ্ক পরীক্ষার দিন আমার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসত। মাধ্যমিকের পর খুব আনন্দ পেয়েছিলাম। অঙ্কের পাঠ চুকল ভেবে কী খুশিই না হয়েছিলাম। বাবা যে দিন অঙ্ক টিচারের সঙ্গে দেখা করতেন, তার আগের রাতে আমার ঘুম উড়ে যেত! কিন্তু আমার বাবা এত সুন্দর কথা বলতেন যে তাঁর কথা শুনে কেউ আর আমাকে বকতে পারতেন না। বাবা একবার আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘তুই অঙ্কে এত ভয় পাস কেন?’ সত্যিই তো। কেন ভয় পেতাম অঙ্ককে? এখন নিজেকেও এই একই প্রশ্ন করি। সারা জীবন তো অঙ্ক কষেই কাটিয়ে দিলাম। এখন বাবার কথাগুলো কানে ভাসে। মানুষটা চলে গেলেন। রয়ে গেল শুধু কথাগুলো।

Advertisement

বাবার কথা লিখতে লিখতেই ভেসে আরও এক স্মৃতি। শীতকাল এলেই বুকের ভিতর একটা চাপা দুঃখ গুম মেরে বসে। বড়দিনে যখন সবাই হইহুল্লোড়ে মাতে, আমার মনে পড়ে বাবাকে। বাবা কোনও দিন আমাদের জন্য কেক আনতে ভুলতেন না। প্রত্যেক বছর নিয়ম করে মায়ের জন্য নিয়ে আসতেন ফ্রুটকেক। আর আমার জন্য নামী দোকানের কেক-প্যাস্ট্রি আর অনেক বেলুন। এই উৎসবের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে বাবার স্মৃতি।

আমি ব্যাডমিন্টন খেলতে ভালবাসতাম। বাবা আমার জন্য র‍্যাকেট আর কর্ক এনে দিতেন। সেই নতুন কর্কের গন্ধের সঙ্গেও জড়িয়ে বাবার স্মৃতি। সবাই বলে আমাকে বাবার মতো দেখতে। বাবার মতো উচ্চতা, গায়ের রং, মুখের আদল। বাবা তো আমার মধ্যেই বেঁচে।

শুভ জন্মদিন, বাবা। যত দিন আমি থাকব, থেকে যাবে তুমি।

আরও পড়ুন:
Advertisement
আরও পড়ুন