‘কালিয়াচক চ্যাপ্টার ১’-এর একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।
বাংলা মূলধারার ছবির বাজারে নাকি লাভ প্রায় নেই বললেই চলে। হাতেগোনা কিছু ছবি কোনও রকমে চলে। কিন্তু ছোট ছবির বা স্বাধীন পরিচালকের ছবির ক্ষেত্রে বিষয়টি অনেকখানিই আলাদা। নতুন নতুন বিষয়কে ঘিরে স্বল্প বাজেটে আবেগ নির্ভর করে ছবি বাননোর বিষয়ে আগ্রহী অনেক তরুণই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় তাঁরা আদতে মফস্সল থেকে কলকাতায় এসে কাজ করছেন।
এমনই একটি ছবি, ‘কালিয়াচক চ্যাপ্টার-১’, পরিচালক রাতুল মুখোপাধ্যায়। প্রেক্ষাপট মালদার কালিয়াচক, কোনও না কোনও কারণে বার বার সংবাদের শিরোনামে উঠে আসে এই এলাকা। ২০২১ সালে সেখানেই এক পরিবারের চার জন খুন হন। সেই ঘটনা নিয়েই তৈরি হয়েছে ‘কালিয়াচক চ্যাপ্টার ১’।
২০২১ সালের জুন মাসে কালিয়াচকের পুরনো ১৬ মাইল এলাকায় একটি গ্রামীণ পরিবারের চার সদস্য খুন হন। অভিযোগ, ওই পরিবারেরই ছোট ছেলে ঠান্ডা মাথায় খুন করেছে বাবা, মা, ছোট বোন এবং ঠাকুরমাকে। এই ঘটনার বিচার এখনও চলছে। ২০২১ সাল থেকেই এই ঘটনা সংবাদপত্রে প্রকাশিত হতে থাকে।
বাংলায় অপরাধ জগৎ নিয়ে এর আগে ছবি হয়নি, তা নয়। কিন্তু এক সদ্যযুবার এমন অপরাধ মানসিকতা এবং তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা বৃহত্তর কোনও অপরাধ জগতের খোঁজই এই ছবির মূল উপজীব্য। আর সেখানেই প্রশংসার দাবি রাখতে পারেন পরিচালক। যদিও এই ঘটনার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এখনও হয়নি। মূল অভিযুক্তের চূড়ান্ত শাস্তি হয়নি। তবে, একেবারে প্রথমেই সে স্বীকার করে নিয়েছিল পরিবারের সকলকে হত্যার কথা। তার উপর ভিত্তি করেই নির্মিত হয়েছে খুনের দৃশ্যগুলি। এই সব দৃশ্যে কোনও বাড়াবাড়ি দেখা যায়নি।
এই ছবিতে রূপাঞ্জনা মিত্রকে দেখা যায় পুলিশ আধিকারিকের চরিত্রে। এ ছাড়া বাবার চরিত্রে দেবপ্রতিম দাশগুপ্তের অভিনয়ও দাগ কাটে। এঁদের পাশে নতুন যাঁরা অভিনয় করলেন, তাঁদের মধ্যে বিশেষ করে বলতে হয় অসীম আখতারের কথা।
তবে এই ছবিতে মোটেও পাওয়া যাবে না কোটি টাকা বাজেটের ছবির স্বাদ। গল্পের বয়নও নিটোল নয়। তবে সামাজিক সত্তায় নতুনতর বিন্যাসে এই ছবিতে খুঁজে পাওয়া যেতে পারে বাস্তবতা।