Review of Mr. & Mrs. Mahi

দুর্বল গল্প, অকার্যকর চিত্রনাট্য ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মাহি’র খেলা বিগড়ে দিল

এই শুক্রবারের বড় ছবি, রাজকুমার রাও, জাহ্নবী কপূরের ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মাহি’ মুক্তি পেল প্রেক্ষাগৃহে, কেমন হল, জানাচ্ছে আনন্দবাজার অনলাইন

Advertisement
শ্রাবন্তী চক্রবর্তী
মুম্বই শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২৪ ১৬:৪৩
Image of Rajkummar rao and Janhvi Kapoor

রাজকুমার রাও ও জাহ্নবী কপূর। ছবি: সংগৃহীত।

প্রথমেই বলে রাখি, বিশ্ববিখ্যাত ক্রিকেটার রাঁচী শহরের মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সঙ্গে জয়পুরে অবস্থিত ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মাহির’ কোনও মিল নেই। মহেন্দ্র (রাজকুমার রাও) একজন ব্যর্থ ক্রিকেটার, যার স্বপ্ন একটাই। টিম ইন্ডিয়ার হয়ে একদিন সে মাঠে নামবে। তার স্ত্রী মহিমা (জাহ্নবী কপূর) পেশায় ডাক্তার কিন্তু ক্রিকেটের অন্ধভক্ত, দু’জনেরই বাড়ির নাম ‘মাহি’ তাই কারণটা খুব তুচ্ছ হলেও, মহেন্দ্র এবং মাহিমার বিয়ে হয়ে যায়। ক্রিকেট দম্পত্তির মধ্যে মেলবন্ধন করালেও পরবর্তী কালে সেটাই তাদের সম্পর্কে চিড় ধরাবে, আর সেটাই এই ছবির সারমর্ম।

Advertisement

‘রুহি’ ছবির পর দ্বিতীয় বার জাহ্নবী এবং রাজকুমারকে আমরা একসঙ্গে দেখতে পাব। ছবির পরিচালক শরণ শর্মা এর আগে জাহ্নবীকে নিয়ে ‘গুঞ্জন সাক্সেনা’ পরিচালনা করেছিলেন।

ছবির প্রধান দুর্বলতা সংলাপ এবং চিত্রনাট্য। ১৩৮ মিনিটের ছবিতে পুরুষদের স্বপ্ন নিয়ে অনেক কথা বলা হয়েছে, কিন্তু বাবা আর ছেলের যা কথোপকথন আমরা ছবিতে দেখতে/শুনতে পাই, সেটা বড়ই একতরফা। কিছু দৃশ্যে সংলাপ খুব অসংলগ্ন, পরিচালক শর্মা এবং সহ-লেখক নিখিল মেহরোত্রা কিছু মুহূর্ত ভাল তৈরি করতে পারলেও, সামগ্রিক ভাবে ছবির কোনও কিছুই মনে কোনও দাগ কাটে না। রাজকুমার রাও খুব বড় মাপের অভিনেতা সেটা পরীক্ষিত সত্য, আর এই ছবিতেও তিনি তার ব্যতিক্রম নন, তবে কেরিয়ারের এই সময়ে এসে রাজকুমারের হয়তো আর একটু ভাবনাচিন্তা করে ছবি বাছা উচিত। জাহ্নবী এই ছবিতে সুযোগ পেয়েও তার সদ্ব্যবহার করতে পারেননি। জাহ্নবীর অভিব্যক্তি প্রত্যেকটি দৃশ্যে একই রকম। ছবিতে রাজকুমার এবং জাহ্নবীর মধ্যে রসায়নেরও খুব অভাব।

ক্রিকেট খেলার কিছু দৃশ্যে জাহ্নবী সপ্রতিভ, কিন্তু আগাগোড়া খুবই আড়ষ্ট। রাজকুমারের বাবার ভুমিকায় কুমুদ মিশ্র অভাবনীয়, কিন্তু জ়রিনা ওয়াহাবের মত অভিনেত্রী কোনও সুযোগই পাননি। কোচের ভূমিকায় রাজেশ শর্মার অভিনয় উল্লেখযোগ্য। স্পোর্টসকেন্দ্রিক ছবিতে মাঠে খেলার মুহূর্তগুলি বিশ্বাসযোগ্য দেখানো একটা বড় বিষয়, আর এখানেও পরিচালক ব্যর্থ। ‘৮৩’, ‘ধোনি’, ‘ময়দান’-এর মতো ছবিতে আমরা দেখেছি প্রকৃত খেলার দৃশ্যকে কতটা পেশাদারিত্বের সঙ্গে ক্যামেরার সামনে তুলে ধরা যেতে পারে। আর ক্রিকেটে একজন ব্যাটার কেবল ছক্কাই মারেন না, তাঁর অন্য কিছু শট-বৈশিষ্ট্যও থাকে। সেই দিকগুলো ছবিতে দেখাই গেল না।

Image of Rajkummar rao and Janhvi Kapoor

‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মাহি’ ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।

বিরতির পর ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মাহি’ র গল্প হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের ‘অভিমান’-এর মত অগ্রসর হয়। স্ত্রীর উন্নতি দেখে স্বামী ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়ে, আর তার ফলস্বরূপ দু’জনের মধ্যে ব্যবধান এসে যায়। প্রচারের সময় প্রেম আর খেলানির্ভর ছবি বলা হয়েছিল, কিন্তু শেষমেশ কোন ধারার ছবি, সেটাই দর্শক বুঝতে পারবেন না।

ছবিতে জনপ্রিয় গায়ক মহম্মদ ফইজ়ের কণ্ঠে পুরনো জনপ্রিয় গান ‘দেখা তেনু পহলি’ পুনরায় ব্যবহার করা হয়েছে, এ ছাড়া বাকি গান মনে কোনও দাগই কাটে না।

খুব আবেগপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে ছবি শুরু হলেও, আগাগোড়া আবেগহীন পরিচালনা ছবির ব্যর্থতার প্রধান কারণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement