Selfiee Movie Review

কেমন হল অক্ষয়-ইমরানের নতুন ছবি ‘সেল্‌ফি’, পড়ে নিন আনন্দবাজার অনলাইনে

‘রামসেতু’ নামক হতাশার পর অক্ষয় কুমারের ‘সেল্‌ফি’। সঙ্গে আবার ইমরান হাশমি। এঁদের যুগলবন্দি বিনোদনে ভরপুর।

Advertisement
শতরূপা বসু
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১২:৫৩
Review of Akshay Kumar-Imran Hashmi starrer Selfiee

ইমরান এবং অক্ষয়ের দ্বৈরথ ছবির অন্যতম আকর্ষণ। ছবি: সংগৃহীত।

‘পাঠান’ ঝড়ের পরে যে কোনও ছবির মুক্তি মানেই তার কাছে একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ। কিন্তু মূল অভিনেতা যখন অক্ষয় কুমার, তার কথা একটু আলাদা করে বলতেই হয়। তাই এ ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় হয়নি। যদিও ‘সেল্‌ফি’ ২০১৯ সালের মালয়ালম ছবি ‘ড্রাইভিং লাইসেন্স’-এর রিমেক।

ছবিতে অক্ষয় কুমার এক জন সুপারস্টার— বিজয় কুমার। সে সত্যনিষ্ঠ, পত্নীনিষ্ঠ, উদার মানুষ। ভোপালে শ্যুটিং করতে এসে তার একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স-এর দরকার পড়ে। যা তার নেই। সেটি করাতে হবে স্থানীয় আরটিও অফিসার ওম প্রকাশের কাছ থেকে। এখন ওম প্রকাশ এবং তার দশ বছরের ছেলে বিজয় কুমারের একনিষ্ঠ ভক্ত। তারা বিজয়কে ঈশ্বরজ্ঞান করে। শুধু ওমের একটিই অনুরোধ। যদি বিজয় লাইসেন্স নিতে এসে তার সঙ্গে একটি নিজস্বী বা সেল্‌ফি তুলে দেয়। তাতে অবশ্য আপত্তি নেই বিজয়ের।

Advertisement
Akshay Kumar and Diana Penty in the film Selfiee

বছরে একাধিক ছবির ভিড়ে কয়েকটি ফ্লপ করলেও অক্ষয় ছবির বিষয়বস্তুর উপর জোর দেন। ছবি: সংগৃহীত।

কিন্তু চাকা উল্টো দিকে ঘুরে যায়। বিজয় সাতসকালে লাইসেন্স নিতে এসে দেখে, সেখানে গুচ্ছের মিডিয়ার সমুদ্র। বিরক্ত বিজয় তার জন্য ওমকে দায়ী করে। বলেন তিনি দু’পয়সার বিখ্যাত হওয়ার লোভে এটি করেছে। ছেলের সামনে ওমকে যাচ্ছেতাই অপমান করে বেরিয়ে যায় বিজয়।

এবং এই ঘটনাই কাল হয়ে দাঁড়ায়। ওম ঘুরে দাঁড়ায়। এর বদলা সে নেবে। কারণ মিডিয়া সে ডাকেনি। সে নিজে বিজয়ের ভক্ত হতে পারে। কিন্তু তার ছেলের কাছে তো সে-ই হিরো। তাই নিজেকে সে ছেলের সামনে হেরে যেতে দেবে না। সে দেখিয়ে দেবে এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে এক জন সাধারণ মানুষের ক্ষমতা কতটা।

এই নিয়েই চলতে থাকে টানাপোড়েন। এক বার বিজয় জেতে। তো আরও এক বার ওম। এর অনেকটাই দাঁড়িয়ে থাকে পরস্পরের একে অন্যকে ভুল বোঝাবুঝির উপর। শেষ পর্যন্ত কে মাথা নত করবে? তাই নিয়েই ছবি।

a scene From the Selfiee

ছবিতে দুই নায়িকা কেবল সুন্দর মুখ হিসেবেই রয়ে গিয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত।

রাজ মেহতার পরিচালনায় টান টান গল্প। দুর্দান্ত চিত্রনাট্য। প্রায় ব্যালান্সের দড়ির উপর দিয়ে হাঁটার মতো গল্পের বুনোট। বিজয়ের চরিত্রে অক্ষয় কুমার আর ওমের চরিত্রে ইমরান হাশমি প্রশংসনীয়। ইমরান এমনিতেই ভাল অভিনেতা। আরও বেশি সংখ্যক ছবিতে তাঁকে দেখতে পাওয়া গেলে ভাল লাগত। এ ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জটা অক্ষয়ের ছিল, তিনি কতটা ইমরানকে অভিনয় দিয়ে মোকাবিলা করতে পারবেন। কারণ এখানে অক্ষয়ের নাচ নেই। নেই অ্যাকশন। পুরোটাই সামলাতে হবে অভিনয় দিয়ে। সেটা অক্ষয় ভালই পেরেছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি দেখতে দারুণ লেগেছে অক্ষয়কে। এমনিতেই তিনি বছরে এতগুলি ছবি করেন। তার মধ্যে ‘রামসেতু’র মতো ‘ভুলভাল’ ছবিও এক-আধটা করে ফেলেন। কিন্তু তিনি বরাবরই কনটেন্ট-এ জোর দেন। এ ক্ষেত্রে কনটেন্ট মৌলিক না হলেও তিনি তাঁর লক্ষ্যে স্থির। বলা যেতে পারে, লক্ষ্যভেদও তিনি করেছেন।

ছবির শেষে নব্বই দশকের অনু মালিকের সুপারহিট ‘ম্যায় খিলাড়ি, তু আনাড়ি’র তানিষ্ক বাগচির করা রিমিক্স ছাড়া ছবিতে একটাও গান নেই। তা সত্ত্বেও দারুণ চিত্রনাট্যের খাড়া চড়াই-উতরাইয়ের জন্য সিট থেকে এক সেকেন্ডও নড়তে দেয় না দর্শককে। যদিও ছবির দুই নায়িকা নুসরত ভারুচা এবং ডায়না পেন্টি সুন্দর মুখ হিসেবেই রয়ে গিয়েছেন। অক্ষয়-ইমরানের যুগলবন্দির থেকে বেরিয়ে গিয়ে তাঁদের খুব একটা কিছু করারও ছিল না।

তাই যদি কেউ শাহরুখ খানের মায়া পেরিয়ে একটু অন্য রকম নিরবচ্ছিন্ন বিনোদন পেতে চান, তা হলে ‘সেলফি’ দেখতেই পারেন। হতাশ হবেন না।

আরও পড়ুন
Advertisement