Cinema Hall

Cinema Hall: দর্শক ৫০ শতাংশ হলেও প্রেক্ষাগৃহ খোলা, এটুকুই স্বস্তি টলিপাড়া আর হলমালিকদের

সবে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল বিনোদন জগত। একের পর এক ছবি আসছিল প্রেক্ষাগৃহে। কাঙ্ক্ষিত ব্যবসাও করছিল।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২২ ১৯:৪৮
৫০ শতাংশ দর্শক নিয়ে চলবে প্রেক্ষাগৃহ।

৫০ শতাংশ দর্শক নিয়ে চলবে প্রেক্ষাগৃহ।

রাজ্যে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। পরিস্থিতি সামাল দিতে সোমবার থেকে বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। তার আওতা থেকে বাদ পড়েনি প্রেক্ষাগৃহগুলিও। রবিবার দুপুরে রাজ্যের মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, সোমবার থেকে মোট আসনের ৫০ শতাংশ দর্শক নিয়ে চালাতে হবে সিনেমা হল, থিয়েটার। খোলা রাখা যাবে রাত ১০টা পর্যন্ত।

সবে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল বিনোদন জগত। একের পর এক ছবি মুক্তি পাচ্ছিল প্রেক্ষাগৃহে। কাঙ্ক্ষিত ব্যবসাও করছিল। ‘সূর্যবংশী’, ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’-এর মতো ছবিগুলি ১০০ কোটিরও বেশি ব্যবসা করেছে। হিন্দি এবং দক্ষিণী ছবির সঙ্গেই লাভের মুখ দেখছিল বাংলা ছবি। ২৪ ডিসেম্বর মুক্তির পর থেকে ‘টনিক’-এর বেশ কিছু শো হাউজফুল । এক-একটি প্রেক্ষাগৃহে ভরে যাচ্ছিল ৭৫-৮০% শতাংশ দর্শকাসন।

Advertisement

নতুন বিধিনিষেধের কারণে কি টান পড়তে চলেছে ‘টনিক’-এর ভাঁড়ারে? আশঙ্কা থাকছেই। বাণিজ্য বিশ্লেষক পঙ্কজ লাডিয়ার অবশ্য দাবি, “এত দিন প্রেক্ষাগৃহগুলি মোট আসনের ৭০ শতাংশ নিয়ে চলছিল। এ বার তা কমিয়ে ৫০ শতাংশ করা হল। এই ২০ শতাংশের ‘টনিক’-এর ব্যবসায় বিশেষ কিছু হেরফের হবে না। এই ক’দিনে এই ছবির যা ব্যবসা করার, করে নিয়েছে।”

দিল্লির মতো পশ্চিমবঙ্গেও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি প্রেক্ষাগৃহ। সব ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করে ছবি দেখতে পারবেন দর্শক। এই ইতিবাচক দিকগুলি মাথায় রেখেই আপাতত খুশি ‘টনিক’-এর পরিচালক অভিজিৎ সেন। তাঁর কথায়, “আমরা চেয়েছিলাম মানুষ প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি দেখুন। গতকাল (শনিবার) পর্যন্ত ‘টনিক’-এর শো হাউজফুল ছিল। আমি মনে করি প্রেক্ষাগৃহে মুখে মাস্ক পরে সাবধানে ছবি দেখা যায়। আশা করছি মানুষ আগামী দিনেও প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে বাংলা ছবি দেখবেন।” অভিজিতের মতে, প্রেক্ষাগৃহগুলি পুরোপুরি বন্ধ না হওয়ায় তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানুষগুলি সম্পূর্ণ ভাবে ফের অসহায় পড়বেন না।

পঙ্কজ জানিয়েছেন, আগামী দু’সপ্তাহে প্রেক্ষাগৃহে নতুন ছবি মুক্তির সম্ভাবনা নেই। ‘জার্সি’, ‘আরআরআর’-এর মতো বেশ কিছু ছবির মুক্তি ইতিমধ্যেই স্থগিত। ১৪ জানুয়ারি আবীর চট্টোপাধ্যায়, অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষ এবং তনুশ্রী চক্রবর্তী অভিনীত ‘আবার বছর কুড়ি পরে’ মুক্তি পেতে পারে। বাণিজ্য বিশ্লেষকের কথায়, “দর্শকাসন কমে যাওয়ায় খুব একটা ব্যবসার ক্ষতি হবে না। কিন্তু মানুষ যদি প্রেক্ষাগৃহে আসা পুরোপুরি বন্ধ করে দেন, সে ক্ষেত্রে লোকসান হতে পারে।”

অতিমারির কারণে বারবার পিছিয়ে যাচ্ছিল রাজ চক্রবর্তী পরিচালিত ‘ধর্মযুদ্ধ’ ছবির মুক্তি। প্রায় দু’বছর পর অবশেষে প্রেক্ষাগৃহে আসতে চলেছে এই ছবি। আনন্দবাজার অনলাইনকে রাজ জানিয়েছেন, “এখনও পর্যন্ত ২১ জানুয়ারি ছবি মুক্তির পরিকল্পনা রয়েছে। বড় কোনও অঘটন ঘটলে বা আবার লকডাউন হলে তখন সিদ্ধান্ত বদলাবে।”

উত্তর কলকাতার এক প্রেক্ষাগৃহের মালিক বিদিশা বসু জানান, ‘স্পাইডারম্যান: নো ওয়ে হোম’, ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’, ‘টনিক’-এর মতো ছবিগুলির একের পর এক শো হাউজফুল। ফলে মোট আসনের ৫০ শতাংশ দর্শক নিয়ে প্রেক্ষাগৃহ চললে ব্যবসায় খানিক প্রভাব পড়বেই।

তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রেক্ষাগৃহ খোলা রাখার অনুমতি অভিজিতের মতো স্বস্তি দিয়েছে বিদিশাকেও। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। দিল্লির মতো পুরোপুরি প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেননি তিনি। পুরো লকডাউন হলে বিনোদন দুনিয়ায় বিপর্যয় হবে। আপাতত আমরা সকালের শো বন্ধ রাখছি। প্রেক্ষাগৃহ ভাল ভাবে জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে।”

Advertisement
আরও পড়ুন