রণবীর জানান, পাকিস্তানি শিল্পীদের সঙ্গে আগেও কাজ করেছেন, সে দেশের ছবি পছন্দও করেন। —ফাইল চিত্র
২০২২ সালের শেষ দিকে পাকিস্তানের ছবিতে কাজ করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন রণবীর কপূর। জানিয়েছিলেন, শিল্পীদের জন্য কোনও ভৌগোলিক সীমা হয় না। মিলেমিশে থাকা এবং আদানপ্রদানই শিল্পের সমৃদ্ধির মূল শর্ত। তবে সেই বক্তব্য কি ফিরিয়ে নিতে চাইলেন এ বার?
বর্তমানে ভারত-পাকিস্তান রাজনৈতিক আবহাওয়া রণবীরকে স্বস্তি দিচ্ছে না। সম্প্রতি কথা ফিরিয়ে নিয়ে জানালেন, তাঁর কথার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছিল। কোনও ভাবেই বিতর্কের কারণ হতে চাননি তিনি। গত বছর রেড সি চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে প্রশ্নটি রেখেছিলেন এক বর্ষীয়ান পাকিস্তানি পরিচালক। প্রযোজনা সংস্থা অন্য দেশের হলে কাজ করবেন কি রণবীর? জবাবে অভিনেতা বলেছিলেন, “অবশ্যই স্যর। আমি মনে করি, শিল্পীদের জন্য কোনও ভৌগোলিক সীমা হয় না। মিলেমিশে থাকা এবং আদানপ্রদানই শিল্পের সমৃদ্ধির মূল শর্ত। ‘মওলা জাট’-এর মতো কাজের জন্য আপনাদের কুর্নিশ। শেষ ক’বছরে এটা অন্যতম বড় কাজ, যা আমি দেখেছি। আমার খুব ভাল লাগবে পাকিস্তানের কোনও ছবির অংশ হতে পারলে।”
তবে চলতি সপ্তাহে সাবধানী সুর শোনা গেল রণবীরের কণ্ঠে। ‘তু ঝুঠি ম্যায় মক্কর’-এর প্রচারে এসে বললেন, “আমার মনে হয়, আগের সেই কথা বিতর্ক তৈরি করেছে। কারণ তার ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে। আমি যে চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়েছিলাম সেখানে অনেক পাকিস্তানি ছবি পরিচালক ছিলেন। তাঁরা যখন জিজ্ঞাসা করলেন, ভাল চিত্রনাট্য পেলেও কি আমি সে দেশে কাজ করতে চাইব না? তাতে স্পষ্ট জবাব দিই। বিতর্ক তৈরি করা আমার উদ্দেশ্য ছিল না।” রণবীর আরও জানান, পাকিস্তানি শিল্পীদের সঙ্গে আগেও কাজ করেছেন। সে দেশের ছবি পছন্দও করেন। তাঁর কথায়, “শিল্প দেশের চেয়ে বড় নয়।” সেই সঙ্গে আরও বলেন, “যদিও আমি মনে করি সিনেমা সিনেমাই হয়। শিল্প শিল্পই।”
রণবীর উদাহরণ টানেন ফওয়াদ খান এবং মাহিরা খান অভিনীত ‘দ্য লেজেন্ড অফ মওলা জাট’-এর। মুক্তি পেয়েছে ২০২২ সালের অক্টোবরে। ফওয়াদ এবং মাহিরা দু’জনেই ভারতীয় ছবিতে কাজ করেছেন। ‘রইস’-এ শাহরুখ খানের সঙ্গে দেখা গিয়েছে মাহিরাকে। ‘খুবসুরত’এবং ‘কপূর অ্যান্ড সন্স’-এ অভিনয় করেছেন ফওয়াদ। সুযোগ পেলে এ ধরনের উদাহরণ রণবীরও তৈরি করবেন বলে ইচ্ছাপ্রকাশ করেন।
সম্প্রতি পাকিস্তানের সাহিত্য উৎসবে গিয়ে লাহোরে যে ভাষণ দিয়েছেন জাভেদ আখতার, তা নিয়ে তুমুল জলঘোলা হয়েছে। ভারত-পাকিস্তানের শিল্পীদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার স্বার্থেই কথাগুলি বলতে চেয়েছিলেন গীতিকার-কবি। তবে, মুম্বই হামলার জন্য পাকিস্তানিদের দিকে আঙুল তোলায় সে দেশের তারকাদের রোষের কারণ হয়েছেন। সেই পরিস্থিতিতেই হয়তো রণবীর তাঁর বলা কথা ফেরালেন।