ফাইল চিত্র।
প্রসেনজিৎ— এই নামটাই যথেষ্ট। দীর্ঘ তিরিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে টলিপাড়া ‘শাসন’ করছেন বাংলার এই ‘নায়ক’। সিনেমাই তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। প্রায় সাড়ে তিনশো ছবির হিরো যদি নতুন করে ফের জীবন শুরু করেন, তা হলে কী কী বাদ দেবেন? শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনের লাইভ আড্ডা ‘অ-জানাকথা’-য় টলিউড ‘ইন্ডাস্ট্রি’র কাছে এই প্রশ্নও রাখা হয়েছিল। ভ্রূ কুঁচকে এদিক-ওদিক কয়েক সেকেন্ড তাকাতে তাকাতে তিনি প্রথম যে শব্দটি উচ্চারণ করলেন, সেটি হল ‘টেনশন’। সফল নায়কের কপালেও তা হলে চিন্তার ভাঁজ পড়ে! তাঁর কথায়, ‘‘টেনশন বাদ দিতাম। কী টেনশনে যে থাকি না আমি, জানা নেই কারও। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে টেনশন বাড়ছে।’’
কিন্তু, নায়কের কী নিয়ে এত চিন্তা? খোলসা করে প্রসেনজিৎ বললেন, ‘‘শুধু পেশাদার চিন্তা নয়। আজকাল সব কিছু নিয়েই চিন্তা হয়। কারও শরীর খারাপ, কারও কিছু একটা হল, এই ব্যাপারটা আস্তে আস্তে গ্রাস করছে। এটা বাদ দিতে হবে। সিনেমা নিয়ে টেনশন নয়, ওটা তো আমার জীবনের একটা অংশ, ভাল-মন্দ তো ঘটবেই।’’
এর পরই আড্ডায় একদা নিজের বদমেজাজি স্বভাবের কথা ভাগ করে নিলেন টলিপাড়ার ‘বুম্বাদা’। হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘এখনকার নয়, অনেক আগের প্রসেনজিতের বদরাগ বাদ দিতাম। তবে কখনও রাগ দেখাইনি। হয়তো খুব একটা করতে পারতাম না। ভয়ানক রাগ ছিল। নিজের ক্ষতি করতাম। তা থেকে নিজের অনেক ক্ষতি করেওছি। মানসিক, শারীরিক ক্ষতি হয়েছিল। এখন আমি একটা অন্য মানুষ।’’
রুপোলি পর্দার নায়ককেও বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে একাধিক বার ঠকতে হয়েছে। প্রতারিত হওয়ার সেই কাহিনিও ‘অ-জানাকথা’-য় তুলে ধরেছেন প্রসেনজিৎ। তাঁর কথায়, ‘‘নতুন করে জীবন শুরু করলে ভুল লোকের উপর নির্ভর করা, এই স্বভাবকে বাদ দিতাম। আমি আসলে খুব সহজে মানুষকে বিশ্বাস করে ফেলি। অনেক ঠকেছি। তাই বলে কি মানুষের উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলব? পারি না এটা। আসলে মানুষকে মানুষ হিসেবে গ্রহণ করি। ভাল দিকটাতেই নজর দিই। এটা নিয়ে ঢাক গুড়গুড় নেই।’’
সামনের সপ্তাহেই মুক্তি পাচ্ছে প্রসেনজিতের নতুন ছবি ‘আয় খুকু আয়’। এত ছবির পরও নতুন কোন চরিত্র রুপোলি পর্দায় রূপ দেওয়া তাঁর বাকি থেকে গেল, সেই হিসেব-নিকেশ দিনভর চলতেই থাকে তাঁর। আর কত রকমের চরিত্র করতে হবে, এ নিয়ে নায়ককে অস্থির করে তোলে তাঁর সিনেপ্রেমী মন। তবে এত ছবির ভিড়েও কমেডি চরিত্রে অভিনয়ের আবদার রেখেছেন টলিউড সুপারস্টার। তাঁর কথায়, ‘‘কমেডি আমার ভীষণ পছন্দের। আমি ভাল কমেডি করতেও পারি। কিন্তু আক্ষেপ যে, কেউ কমেডি চরিত্র দেন না। সবসময় রাগী রাগী আর গম্ভীর চরিত্র দেন।’’