SVF-Federation

রাহুলের নয়া পদে ফের কাঁটা ফেডারেশন! পরিচালকের পাশে রাজ চক্রবর্তী, কী বললেন প্রসেনজিৎ?

নিষিদ্ধ ঘোষণার পর নিজের ছবিতে কার্যনির্বাহী প্রযোজকের পদ পেয়েছিলেন তিনি। খবর, ফেডারেশন তাতেও নাকি বাধা দিচ্ছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৪ ২০:০৪
Image Of Raj Chakraborty, Rahool Mukherjee, Prosenjit Chatterjee

(বাঁ দিক থেকে) রাজ চক্রবর্তী, রাহুল মুখোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

আবারও ফেডারেশনের গেরোয় পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়। না জানিয়ে বাংলাদেশে শুটিং করতে গিয়েছিলেন তিনি। খবর প্রকাশ্যে আসতেই ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (ডিএইআই)-এর সভাপতি সুব্রত সেন এবং সম্পাদক সুদেষ্ণা রায় ইমেল করেন পরিচালককে। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে নিজের ভুল স্বীকার করেন পরিচালক। এর পরেই ডিরেক্টরস গিল্ড তাঁকে তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। যার জেরে তিনি এসভিএফের পুজোর ছবি পরিচালনা করতে পারবেন না, এই মর্মে শনিবার নির্দেশিকা পান রাহুল। এর পরেই সোমবার প্রযোজনা সংস্থার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা, গিল্ড এবং ফেডারেশনের নির্দেশ মেনে তাঁরা রাহুলকে নতুন ছবির পরিচালক রাখবেন না। ছবি পরিচালনা করবেন চিত্রগ্রাহক সৌমিক হালদার। বদলে রাহুল সেই ছবির সৃজনশীল প্রযোজক। ঘোষণার পরে সবে স্বস্তির শ্বাস ফেলেছিলেন পরিচালক। ফের নতুন সমস্যার সম্মুখীন তিনি। খবর, এই পদটিও নাকি কাড়তে চলেছে ফেডারেশন।

Advertisement

এ বার কী করবেন এসভিএফের অন্যতম কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতা? প্রযোজনা সংস্থার পুজোর ছবির ভবিষ্যৎই বা কী?

আনন্দবাজার অনলাইন জানতে চেয়েছিল তাঁর কাছে। প্রযোজকের কথায়, “বিষয়টি পুরোপুরি অনৈতিক। ফেডারেশন এবং ডিরেক্টরস গিল্ডের নির্দেশ আমরা মাথা পেতে নিয়েছি। রাহুল পরিচালনা করবেন না। এর পরিবর্তে আমরা যে পদ তাঁকে দিয়েছি সেই পদ কিন্তু ফেডারেশন বা গিল্ডের আওতায় পড়ে না। এ বার এখানেও যদি সংগঠন মাথা ঘামায়, তা হলে বলার কিছুই নেই।” পুজোর ছবির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য, এ ভাবে অকারণ টানাপড়েন চললে তিনি পুজোর ছবি বানাবেন না। ফেডারেশনের এই পদক্ষেপ যদি শ্রীকান্তের অন্যায় মনে হয়, তা হলে তার প্রতিবাদ করবেন না? কিংবা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথও তো খোঁজা যেতে পারে? প্রযোজক সঙ্গে সঙ্গে বলেছেন, “আমরা সব সময় আলোচনায় বসতে চেয়েছি। ফেডারেশনের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি।”

এসভিএফের পুজোর ছবির পাশাপাশি রাহুলের পরিচালনা নিয়ে ইন্ডাস্ট্রি থেকে সাধারণের চর্চার আরও একটি কারণ ছবির অভিনেতা। গত পুজোর মতো এই ছবিতে আরও এক বার এক ফ্রেমে দেখা যাবে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে। মালয়ালম ছবি ‘গরুড়ন’-এর বাংলা রূপান্তরে থাকছেন অপরাজিতা আঢ্য, প্রিয়াঙ্কা সরকার, পারিজাত চৌধুরী, সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, রজতাভ দত্ত এবং আরও অনেকে। ছবি তৈরিকে কেন্দ্র করে সমস্যা নিয়ে কী বলছেন প্রসেনজিৎ? আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিনেতা জানালেন, বাকিদের মতো তিনিও চাইছেন, দ্রুত সব সমস্যা মিটে যাক। ছবির শুটিং শুরু হোক। তিনিও সহ-অভিনেতাদের মতো সেটে যাওয়ার অপেক্ষায়। এ ক্ষেত্রে তিনি সব সময় প্রযোজকের পাশে।

Image Of Srikant Mohota, Swarup Biswas

(বাঁ দিকে) শ্রীকান্ত মোহতা, স্বরূপ বিশ্বাস (ডান দিকে) । ছবি: ফেসবুক।

কিছু দিন আগে ফেডারেশনের নির্দেশিকার কারণে শুরু হয়েও আচমকা বন্ধ হয়ে যায় স্নেহাশিস চক্রবর্তীর হিন্দি ধারাবাহিকের শুটিং। এর পরেই শোনা যায়, রাজ চক্রবর্তীর প্রথম হিন্দি সিরিজ় নিয়েও নাকি একই সমস্যা তৈরি করতে পারে ফেডারেশন। সেই সময় রাজ আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছিলেন, সমস্যা তৈরি নয়, সমাধানের পথ খোঁজাই তাঁর লক্ষ্য। এ বার তিনি কী বলবেন? রাজ নাম না করে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছেন, “ক্ষমতার অপব্যবহার হচ্ছে। সৃষ্টিশীল কাজে, স্বাধীন পরিচালকের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার অধিকার কোনও সংগঠনের নেই। আমরা আমাদের ইচ্ছেমতো কাজ করব। কেন এ ভাবে বার বার বাধার সৃষ্টি করা হবে?” রাহুলকে সমর্থন করে তাঁর বক্তব্য, খুব কম বয়সে রাহুল এই জায়গায় পৌঁছেছেন। ওঁকে কেউ যেচে কাজ দেয়নি। পরিশ্রম করে সব কিছু অর্জন করেছেন। এখন তাঁর পায়ে শিকল পরানো মানে ওঁর সৃষ্টিশীলতাকে রুদ্ধ করে দেওয়া। যা একেবারেই কাম্য নয়। রাজের জবাব, “আমি রাহুলের পাশে রয়েছি। যে কোনও পরিস্থিতিতে ওঁকে সহযোগিতা করব। কারণ, ইন্ডাস্ট্রিকে ওঁর অনেক কিছু দেওয়ার আছে।” তাঁর কটাক্ষ, ‘‘মানুষ ভুলে যায়, ক্ষমতা আজ আছে কাল নেই। এই কথাটা সকলে মনে রাখলে ভাল হয়।’’

এ দিকে টলিপাড়ার অন্দরে কানাঘুষো, প্রযোজনা সংস্থা-ফেডারেশনের দ্বন্দ্বে রাহুলের দশা যেন ‘শ্যাম রাখি না কুল’! চাইলে তিনি ফেডারেশনের নির্দেশ মেনে আগামী তিন মাস বিনোদন দুনিয়ার যে কোনও কাজ থেকে দূরে থাকতে পারেন। অথবা গিল্ডের সদস্যপদ ছেড়ে দিয়ে কার্যনির্বাহী প্রযোজক কিংবা পরিচালকের আসনে বসতে পারেন। রাহুল দ্বিতীয় পথে হাঁটলে ফেডারেশন কী করবে? প্রশ্ন রাখা হয়েছিল ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের কাছে। তাঁর বক্তব্য, “আমরা এখনও কিছুই জানি না। প্রযোজনা সংস্থা আগে লিখিত জানাক। আমরা আলোচনায় বসি। তার পর সিদ্ধান্তে আসব।”

আরও পড়ুন
Advertisement