জীবনের শুরুতেই শ্রীলঙ্কাবাসী এক পরিচালকের ছবি ‘ছত্রাক’-এ অভিনয় করার সুযোগ পান পাওলি। সেই ছবি কান চলচ্চিত্র উৎসব থেকে টরোন্টো চলচ্চিত্র উৎসব— একাধিক দেশে স্বীকৃতি পায়। কিন্তু বাংলায় সেই ছবির যাত্রা অত সরল ছিল না। বিশেষ করে পাওলির জন্য। নগ্নতা এবং শারীরিক সম্পর্কের চিত্রায়ন নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে বাংলায়।
বিতর্ক নিয়ে পাওলি-বচন
১৯৯২ সালের ছবি, ‘ড্যামেজ’। ব্রিটিশ পরিচালক লুই মাল একই শিরোনামের একটি উপন্যাস থেকে গল্পটি নিয়েছিলেন। নগ্নতা, অন্তরঙ্গতা, কামনা, শরীরী সম্পর্ক— এই সব কিছুই যে ভীষণ বাস্তব, তা তিনি পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছিলেন। এই ধরনের বিভিন্ন ছবি দেখার অভ্যাস ছোট থেকেই তৈরি হয়েছিল পাওলি দামের। খুব অল্প বয়সেই বিশ্ব চলচ্চিত্রের সঙ্গে আলাপ তাঁর। চলচ্চিত্রের অর্থ খুঁজে পেয়েছিলেন তিনি। তাই ‘ছত্রাক’-এ অভিনয় করার সময়ে সেই চরিত্রটি তিনি আর পাঁচটি চরিত্রের মতোই দেখেছিলেন। সে ভাবেই চরিত্রের কাছে নিজেকে সমর্পণ করেছিলেন। কিন্তু দর্শকদের তরফে এত সহজ প্রতিক্রিয়া কি?
আনন্দবাজার অনলাইনে শনিবারের লাইভ আড্ডা ‘অ-জানাকথা’-য় সেই সময়টিকে মনে করলেন পাওলি।
অভিনয় জীবনের শুরুতেই শ্রীলঙ্কাবাসী এক পরিচালকের ছবি ‘ছত্রাক’-এ অভিনয় করার সুযোগ পান পাওলি। সেই ছবি কান চলচ্চিত্র উৎসব থেকে টরোন্টো চলচ্চিত্র উৎসব— একাধিক দেশে স্বীকৃতি পায়। কিন্তু বাংলায় সেই ছবির যাত্রা অত সরল ছিল না। বিশেষ করে পাওলির জন্য। নগ্নতা এবং শারীরিক সম্পর্কের চিত্রায়ন নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে বাংলার আকাশে। কেউ সরাসরি নিন্দা করেন, কেউ বা ঠাট্টার মোড়কে সমালোচনা করেন। সেই প্রসঙ্গে পাওলি বললেন, ‘‘অনেকেই হয়তো ভালবাসেন বিতর্ক। কিন্তু আমি সে রকম নই। বিতর্ক উপভোগ করি না। আমার মতে, সর্ব ক্ষণ খারাপ কথা বলার কী দরকার? ভাল কথাও তো বলতে পারি।’’
পাওলি জানালেন, ছোট থেকে পাশ্চাত্যের ছবি দেখতে দেখতে পর্দায় নগ্নতা দেখা বা দেখানো নিয়ে কোনও ছুৎমার্গ ছিল না তাঁর। ‘টাইটানিক’-এর মতো জনপ্রিয় হলিউড ছবিতেও খুব সহজে নগ্নতাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। তাই ‘ছত্রাক’-এর একটি অন্তরঙ্গ দৃশ্য মুক্তি পাওয়ার পরে তাঁর নগ্ন হওয়া নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া শুনে অবাক হয়েছিলেন পাওলি। তিনি ভাবতেই পারেননি যে দর্শক ছবিটি নিয়ে নয়, কেবল তাঁর নগ্ন হওয়া নিয়ে কথা বলবেন! পাওলির কথায়, ‘‘আসলে আমি তখন একদম নতুন। তাই সমগ্র পরিস্থিতিটা স্পষ্ট ছিল না।’’ তবে একই সঙ্গে পাওলি মনে করেন, সবই তাঁর উপরি পাওনা। তাঁর হারানোর কিছু নেই। কারণ তিনি তো ভাবতেই পারেননি যে তিনি অভিনেত্রী হবেন। পড়াশোনা করছিলেন, ভেবেছিলেন ভবিষ্যতে শিক্ষাজগতের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। কিন্তু তিনি অভিনয় করলেন, অন্য রাজ্যে পাড়ি দিলেন সেই পেশার জন্য, যশ খ্যাতি অর্জন করলেন— আর কী চাই? এখন তাঁর প্রথম প্রেম, চলচ্চিত্র। তাই এই সব কিছুকেই তিনি উপরি পাওনা হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন।
পরবর্তী কালে যদি নগ্ন দৃশ্যে আবারও অভিনয় করতে হয়, তিনি করবেন? পাওলির উত্তর, ‘‘যদি বুঝি, সেই চরিত্রটি জন্য আমার মন, আত্মা এবং শরীর একই জায়গায় এসে মিলেছে, তবে অবশ্যই করব। যে কোনও চরিত্রের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে নিজের কাছে এবং ওই চরিত্রের কাছে সমর্পণ করে দিই আমি। যদি সে রকম চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ আসে, যেখানে এই সব কিছু ঘটবে, তা হলে নগ্নতা নিয়ে কোনও অসুবিধা নেই।’’