‘ভুলভুলাইয়া ২’-এর সাফল্যের পর মায়ানগরীর প্রথম সারির অভিনেতাদের মধ্যেই চলে এসেছে কার্তিকের নাম। ফাইল চিত্র
ইন্ডাস্ট্রিতে আসার ইচ্ছা ছিল ছোট থেকেই। কিন্তু বেঁকে বসেছিল পরিবার। ছেলে পড়াশোনা করবে, চাকরি পাবে এটিই তো স্বাভাবিক। ছক ভাঙার পক্ষপাতী ছিলেন না কার্তিক আরিয়ানের বাবা-মা। গোয়ালিয়রের মধ্যবিত্ত পরিবার। কার্তিক জানতেন, কাজটা সহজ হবে না। তবু ভিতরে ভিতরে নিজের স্বপ্নকেই লালন করছিলেন। কলেজে ভর্তি হওয়ার নাম করে চলে এসেছিলেন মুম্বই। ভর্তিও হয়েছিলেন সেখানকার এক কলেজে। তবে ক্লাস করতে মোটেও যেতেন না। কোথায় যেতেন কার্তিক?
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা ফাঁস করেন অতীতের মজাদার সব অভিযানের কথা। যেখানে বাড়ির লোক জানেন ছেলে পড়াশোনা করতে মুম্বই গিয়েছে, সেখানে কার্তিক ক্লাস কেটে একের পর এক অডিশন দিয়ে চলেছেন। কার্তিকের কথায়, “পরীক্ষা এসে গিয়েছে। এক বার ভাইবার সময় আমি ছিলাম অডিশনে। পরে এসে কলেজ কর্তৃপক্ষকে বললাম, আমার পরীক্ষাটা এখন নিয়ে নিন প্লিজ! তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়েও যান। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গিয়েছে তখন, আমায় শুধু বলা হল, অধ্যাপিকার নামটুকু বলতে। তা হলে এমনিই পাশ করিয়ে দেবে। কিন্তু আমি পড়েছি ফ্যাসাদে। ক্লাসই করিনি, নাম বলব কী করে!”
কার্তিক জানান, নিজেকে লুকিয়ে রাখতেন তিনি। অভিনয়ের ইচ্ছার কথা কোনও দিন বাড়িতে বলতে পারেননি। সরকারি চাকরির পরীক্ষায় অবধি বসেছেন। কিন্তু যেখানেই পরীক্ষা দিতে গিয়েছেন সেখানে অডিশন দিয়ে এসেছেন। বলা ভাল, কোথায় অডিশন আছে সেটা দেখেই ওই এলাকায় পরীক্ষার কেন্দ্র বাছতেন। তবে, এক দিন আর কিছুই চাপা থাকল না। স্বপ্ন পূরণ তো হলই, বাবা-মায়ের মুখও উজ্জ্বল করল ছেলে।
২০১১ সালে ‘প্যায়ার কা পাঞ্চনামা’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয় কার্তিকের। প্রায় ১২ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন ইন্ডাস্ট্রিতে। ২০২২-এ ‘ভুলভুলাইয়া ২’-এর সাফল্যের পর মায়ানগরীর প্রথম সারির অভিনেতাদের মধ্যেই চলে এসেছে কার্তিকের নাম। তিনিই বলিউডের নতুন সুপারস্টার, বলছেন সিনেমা বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সলমন খানও আভাস দিয়েছিলেন, ইতিহাস গড়তে পারেন কার্তিক। যদিও খ্যাতির শীর্ষে থেকেও শিকড় ভোলেননি কার্তিক। সাধারণ মানুষের সঙ্গে সহজে মিশে যান। রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে ফোন রিচার্জ করা থেকে শুরু করে গাড়ির ডিকির উপর খাবার খাওয়ার মতো কাণ্ড করতে দেখা গিয়েছে কার্তিককে।