‘সিংহম আগেন’ দেখতে আগ্রহী নন দর্শক? ছবি: সংগৃহীত।
শুক্রবার দক্ষিণ কলকাতা-সহ উত্তর কলকাতাতেও মুক্তি পেয়েছে ‘ভুলভুলাইয়া ৩’ ও ‘সিংহম আগেন’। প্রেক্ষাগৃহের কর্ণধারদের দাবি, প্রাচী, মিনার, স্টার থিয়েটার-সহ একাধিক প্রেক্ষাগৃহে প্রথম দিনেই রমরমিয়ে ব্যবসা করেছে ছবি দু’টি।
এ দিন স্টার থিয়েটারের কর্ণধার জয়দীপ মুখোপাধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনকে জানান, বিকেল ও সন্ধ্যায় দুটো ছবির সব টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এ দিন রাতে চিত্রনাট্যকার অরিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ছবি ভাইরাল হয় সমাজমাধ্যমে। তাঁর সেই ছবি অনুযায়ী, ফাঁকা হলের বাইরে ‘হাউসফুল’ বোর্ড ঝুলেছে। অরিত্রের সেই বার্তা ভাগ করে নিয়েছেন কাহিনি-চিত্রনাট্যকার জ়িনিয়া সেন। ছবির সঙ্গে লিখেছেন, “কর্পোরেট বুকিংয়ের নামে টিকিট কেনা নতুন কিছু নয়। আশ্চর্যের বিষয়, একাধিক হিন্দি বড় বাজেটের ছবিকে (কয়েকটি বাংলাও দেখেছি, কিন্তু তুলনামূলক কিছুই নেই) এই পন্থা অবলম্বন করতে হয়!” আসল ঘটনা কী? ফাঁকা হলের বাইরে সত্যিই কি হাউসফুল বোর্ড ঝোলানো হয়েছে?
সবিস্তার জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল অরিত্রের সঙ্গে। তিনি বলেছেন, “প্রথম দিন প্রথম শো দেখব বলে শুক্রবার সকালে স্টার থিয়েটারে গিয়েছিলাম। প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দেখি হাতেগোনা কয়েকজন দর্শক। ক্রমে অবশ্য সেই সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু সেই সংখ্যা বড় জোর ৪০-৪৫ শতাংশ। অথচ বাইরে হাউসফুল বোর্ড ঝুলছে! ঘটনাটি দেখে সমাজমাধ্যমে ভাগ করার লোভ সামলাতে পারিনি।” বিষয়টি নিয়ে কী বক্তব্য জ়িনিয়ার? তাঁর কথায়, “এই ঘটনা নতুন নয়, আগেও হয়েছে। কোনও ছবির নাম না করেই বলছি, এর আগেও অনেক বড় বাজেটের ছবি এ ভাবেই নিজেদের ভুয়ো প্রচার সেরেছে। অরিত্র সেটি প্রকাশ্যে নিয়ে আসায় আমিও ভাগ করে নিলাম।” তাঁর দাবি, এই ছবি কিন্তু ‘ভুলভুলাইয়া ৩’-এর ক্ষেত্রে হচ্ছে না। জ়িনিয়া জেনেছেন, কার্তিক আরিয়ানের ছবিটি শহরে রোহিত শেট্টির ছবির থেকে অনেকটাই এগিয়ে। জিনিয়ার কথায়, “ভুলভুলাইয়া ৩’ নিয়ে দর্শকের আগ্রহ বেশি। তাঁরা দলে দলে প্রেক্ষাগৃহে পৌঁছে যাচ্ছেন।”
যে প্রেক্ষাগৃহ নিয়ে এত চর্চা সেই প্রেক্ষাগৃহের কর্ণধার কী বলছেন? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল জয়দীপের সঙ্গে। তিনি শুরুতে রসিকতা করেছেন, “প্রত্যেকে আমাকে প্রচণ্ড ভালবাসেন। তাই নিজেরাই আমার প্রেক্ষাগৃহের প্রচারের দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন।” তার পরেই তাঁর দাবি, “অরিত্র ছবি তুলে ভাগ করলেও ওঁর দাবি মানতে পারছি না। আজ পর্যন্ত হল ভর্তি না হলে আমার প্রেক্ষাগৃহের বাইরে এই ধরনের বোর্ড দেওয়া হয় না।” এ-ও জানান, অনেক সময় বাইরে এই ধরনের বোর্ড দেওয়া হলেও সেখানে কোন কোন শো হাউসফুল তার উল্লেখ থাকে। জয়দীপের মতে, “সম্ভবত সেই শো-এর সময় অরিত্রের চোখে পড়েনি।”
তাঁর মতে, আজ পর্যন্ত তাঁর কাছে কোনও প্রযোজক-পরিচালক পাঁচটি আসন ফাঁকা থাকলেও সেই টিকিট কেটে নেওয়ার অনুরোধ রাখেননি। ফলে, অরিত্রের এই বক্তব্য তিনি মানতে নারাজ। উল্টে আনন্দবাজার অনলাইনের থেকে খবর পেয়ে তিনি সমাজমাধ্যমে অরিত্রকে পাল্টা তোপ দেগেছেন। চিত্রনাট্যকারের অনুরোধ, “ফাঁকা হলের ছবি যেমন দিয়েছেন তেমনই হাউসফুল বোর্ডের ছবিটিও ভাগ করে নেবেন? সেটি দেখলেই প্রত্যেকের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।”