ওম-মিমি
মাস ছয়েক হল মিমি দত্ত-ওম সাহানি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। ফেব্রুয়ারিতে আড়ম্বর করে বিয়ে করে গাঙ্গুলিবাগানের ফ্ল্যাটে চুটিয়ে ঘরকন্না করছেন নবদম্পতি। কী ভাবে সামলাচ্ছেন কেরিয়ার ও সংসার?
‘বিয়ের পর মেয়েরা সংসারী হয়!’ আইবুড়ো অবস্থায় মায়ের মুখে এমন কথা হামেশাই শুনতেন মিমি। এখন নিজের জীবনেও তার প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছেন। আর বাড়ির নানা কাজে স্ত্রীকে সাহায্য করছেন ওম। ‘‘অভিনয়ের মতো সংসারটাও পারফেক্টলি করতে চাই। আর সেটা ঠিকমতো করতে গেলে গোছানো হতে হয়। নিজেকেও সে ভাবেই তৈরি করছি। আগের চেয়ে ধৈর্য বেড়েছে,’’ বললেন মিমি। কতটা মানিয়ে চলতে হচ্ছে ওমকে? ‘‘আমার বিছানার অর্ধেকটা দখল করে নেয় মিমি। ওর চারদিকে বালিশ রেখে শোয়ার অভ্যেস। খাটে আমার জায়গা কম পড়ে,’’ লাজুক হাসি অভিনেতার মুখে।
তবে বাঙালি বৌ পেয়ে খুবই খুশি ওম। স্ত্রীর হাতের বাঁধাকপি, আনাজ দিয়ে মুগ ডাল, পোস্তর নানা পদ... জমিয়ে উপভোগ করছেন তিনি। আবার শাশুড়ির কাছ থেকে বিহারি পদ যেমন লিট্টি-চোখা, ঠেকুয়া, পুরিতেও হাত পাকাতে চাইছেন অভিনেত্রী।
বিয়ের পর চুটিয়ে সংসার করা তো রয়েছেই, যুগলে ব্যস্ত কেরিয়ার নিয়েও। মিমি ওয়েব সিরিজ়ে ডেবিউ করতে চলেছেন। সাহানা দত্তের প্রযোজনায় সায়ন্তন ঘোষালের পরিচালনায় একটি থ্রিলারের মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করছেন তিনি। শুটিংও শুরু হয়ে গিয়েছে। এর কিছু দিন আগেই ‘আমি তুমি মালতী’-র কাজ শেষ করলেন। বিয়ের পর এটিই ছিল মিমির প্রথম ছবি। এ দিকে ছোট পর্দা বেছে নিয়েছেন নায়কও। তবে একটি ডান্স রিয়্যালিটি শো ছাড়া ওমকে অন্য কোথাও দেখা যায়নি। পাশাপাশি অভিনয় করছেন পরিচালক অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়ের ‘লকডাউন’ ছবিতে মুখ্য ভূমিকায়।
অভিনয়-সংসারের পাশাপাশি ফিটনেসের ব্যাপারেও মিমি ইদানীং বেশি সচেতন হয়েছেন, সৌজন্যে তাঁর ফিটনেস ফ্রিক স্বামী। ‘‘গত বছর ১৫ কিলো ওজন কমিয়েছিলাম। কিন্তু বিয়ের কারণে এত খাওয়াদাওয়া করতে হল যে, আবার কিছুটা ওজন বাড়িয়ে ফেলেছি। ও কিন্তু কড়া ট্রেনার নয়। কখনও কখনও নিজেই কেক, মিষ্টি তুলে দেয় আমার মুখে,’’ নায়িকার মুখে মিষ্টি হাসি। একসঙ্গে থাকতে গিয়ে দু’জনের টুকটাক ঝগড়াও হচ্ছে। ‘‘আমরা ঝগড়া করলেও পাশের ঘর থেকে শোনা যায় না। আর কেউই বেশিক্ষণ রাগ পুষে রাখতে পারি না,’’ বললেন ওম। স্ত্রীর চোখে ‘‘ওম একটু বেশিই ভাল মানুষ’’। আর ওম চান, মিমি ছোটখাটো ব্যাপারে বাড়তি দুশ্চিন্তা বন্ধ করুক। মিমির কথায়, ‘‘দশ বছরের বেশি সময় ধরে পরস্পরকে চিনি। এখন আরও ভাল করে চিনছি। সম্পর্কের ক্ষেত্রে বন্ধুত্ব খুব জরুরি, আমাদের সম্পর্কের ইউএসপি এটাই।’’ একই সুর ওমের কণ্ঠেও, ‘‘পরস্পরের বন্ধু হয়ে থাকতে চাই সারাজীবন।’’
ওমের সঙ্গে সম্পর্ক শুরু হওয়ার আগে ইউরোপে সোলো ট্রিপে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন অভিনেত্রী। কিন্তু মন দেওয়া-নেওয়ার পর্ব শুরু হতে ইউরোপ সফর বাতিল করে একসঙ্গে প্রথমবার দার্জিলিং গিয়েছিলেন তাঁরা। তবে অতিমারি আবহে হানিমুন হয়নি বলে, একটু দুঃখ তো রয়েছেই। খুব ইচ্ছে আবার পাহাড়ে বেড়াতে যাওয়ার। আর স্বপ্ন বিশ্বের নানা সুন্দর সুন্দর জায়গায় বেড়ানোর। এখন অপেক্ষা শুধু পরিস্থিতি ঠিক হওয়ার।
ছবি: জয়দীপ মণ্ডল
মেকআপ: চয়ন রায়
পোশাক: অভিষেক রায়, তেজস গাঁধী
লোকেশন এবং ফুড পার্টনার: পঞ্চমের আড্ডায়, হিন্দুস্তান পার্ক