ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত।
তিনটি খবরে শনিবারের টলিউড চনমনে। এক, ‘পরিচয় গুপ্ত’ রেখে পরকীয়া করছেন ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত। তাও আবার বন্ধুর বৌদির সঙ্গে। দুই, তিনি নাকি কলকাতাতেই পাকাপাকি থাকার পরিকল্পনা করেছেন! তিন, তিনি শনিবার নাকি পুরীতে। সন্দীপ রায়ের ‘হত্যাপুরী’র শ্যুটে ব্যস্ত। সত্যি?
আনন্দবাজার সরাসরি কথা বলেছিল ইন্দ্রনীলের সঙ্গে। তিনটে খবরই নস্যাৎ করেছেন অভিনেতা। তাঁর সাফ জবাব, ‘‘পর্দায় কারও সঙ্গে পরকীয়া করছি না। রণ রাজের ‘পরিচয় গুপ্ত’র শ্যুট শেষ হয়েছে। সেখানে আমার কারও সঙ্গে পরকীয়া নেই। ‘হত্যাপুরী’র শ্যুটও আপাতত হচ্ছে না। সুদেষ্ণা রায়-অভিজিৎ গুহর আগামী ছবির শ্যুটিং পিছিয়েছে। ফলে, একের পর এক বাংলা ছবি করছি। এবং তার জন্যই নাকি কলকাতায় থাকার পরিকল্পনাও করে ফেলেছি— সব ভুয়ো। আমি বহাল তবিয়তে মুম্বইয়ে।’’
বড় পর্দার গোয়েন্দা রণ, রাজের প্রথম ছবিতে পুরাতত্ত্ববিদ। ভিন্ন স্বাদের ছবি বলেই এক কথায় রাজি? ইন্দ্রনীলের দাবি, ‘‘এই ছবিতে একাধিক ভাল অভিনেতা রয়েছেন। ঋত্বিক চক্রবর্তী, জয় সেনগুপ্ত। এঁরা আমার কাছের মানুষ। এঁদের সঙ্গে কাজ করতে পারব। তাই রাজি হয়েছি।’’ সেই মতো, কাজের সময় তিনি মনোযোগী। বাকিটা ভ্যানিটি ভ্যানে নাকি চুটিয়ে আড্ডা দিয়েছেন তিন মূর্তি। ক্যামেরার সামনে নাকি গুপ্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল? অভিনেতার দাবি, তিনি এই ধারার অভিনয়ে বিশ্বাসী নন। ফলে, প্রতিদ্বন্দ্বী মনোভাব নিয়ে অভিনয় করেন না। সবাই মিলে ভাল কাজ না করলে দৃশ্য ভাল হয় না। ইন্দ্রনীল তাই বাকিদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পরিশ্রম করেছেন।
ছবির পটভূমিকায় পঞ্চাশের বাংলা। জমিদার বাড়ি। শার্ট-ট্রাউজার্স ছাড়াও ইন্দ্রনীল পুরনো ‘বাঙালিবাবু’ ধুতি আর কোটে। কিরীটি বা ব্যোমকেশ চরিত্রে অভিনয়ের অনেক দিন পরে আবার ধুতিতে। সামলাতে বেগ পেতে হয়েছে? বড়পর্দার ইন্দ্রনীলের দাবি, ‘‘এখনকার পুরুষেরা একেবারেই ধুতিতে অনায়াস নয়। আমি তো নই-ই। ফলে, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা বা দৌড়ঝাঁপের সময় একটু তো অস্বস্তি হয়েইছে। বেশ সাবধানে হাঁটাহাঁটিও করতে হয়েছে। বেশি দৃশ্য নেই, এটাই বাঁচোয়া। অবশ্য ছবি দেখে কেউ বুঝতেই পারবেন না আমি ধুতি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম!’’ কী বলেছেন পরিচালক? তাঁর মতে, ‘‘একটু ভয়ে ছিলাম। ইন্দ্রনীলদা ওই সময়ের আদব-কায়দা, উচ্চারণ কতটা দিতে পারবেন, এই নিয়ে। শ্যুটিং করতে গিয়ে চমকে গিয়েছি। যেমন নিখুঁত উচ্চারণ, ততটাই তিনি পঞ্চাশের দশক থেকে যেন উঠে এসেছেন। অথচ অভিনেতা প্রবাসী বাঙালি। পড়াশোনা ইংরেজি মাধ্যমে!’’ ছবিতে ‘বন্ধু’ ঋত্বিকের বৌদির সঙ্গে সখ্য হবে তাঁর। এ কথাও মেনে নিয়েছেন তিনি।
এক দিকে সন্দীপ রায়ের মতো পরিচালকের ছবিতে অভিনয়। পাশাপাশি, রণ রাজের মতো নতুন পরিচালক। আকাশ-পাতাল ফারাক? ঈষৎ যেন ক্ষুব্ধ অভিনেতা। চরিত্রের মতোই স্পষ্টবক্তা তিনি। বললেন, ‘‘কেন এই ধরনের তুলনা টানা হয়! বুঝি না। দুই পরিচালক তাঁদের মতো। তাঁদের কাজের ধারা ভিন্ন। ছবির বিষয়ও ভিন্ন। আমার কাজ অভিনয়। সেটাই দুই ছবিতে করার চেষ্টা করেছি। আমি চুলচেরা বিশ্লেষণে বিশ্বাসী নই।’’