Ritwik Chakraborty Interview

ছবি নিয়ে প্রযোজক-পরিবেশকদেরই ভাবতে হবে, অভিনেতাদের কথায় ব্যবসা বাড়বে না: ঋত্বিক

তাঁর অভিনয়ে মুগ্ধ দর্শক। নতুন চরিত্রে নতুন ভাবে আসতে চলেছেন অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী। ছবি থেকে রাজনীতি নিয়ে আড্ডায় অভিনেতা।

Advertisement
উৎসা হাজরা
শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২২ ১৩:২৮
আনন্দবাজার অনলাইনে অকপট ঋত্বিক।

আনন্দবাজার অনলাইনে অকপট ঋত্বিক। ফাইল চিত্র।

শহরের নতুন তদন্তকারী অফিসার ঋত্বিক চক্রবর্তী। রাজদীপ ঘোষের আগামী ছবিতে এমন ভাবেই ধরা দেবেন অভিনেতা। জ্যোতিষের সঙ্গে থ্রিলারের মিশেলে তৈরি হবে এই ছবি। সেট পড়বে কলকাতায়। ছবি ঘোষণার অনুষ্ঠানে আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি ঋত্বিক।

প্রশ্ন: ঋত্বিক চক্রবর্তী জ্যোতিষে বিশ্বাস করেন?

Advertisement

ঋত্বিক: না না, একদম নয়।

প্রশ্ন: এই ছবিতে জ্যোতিষ সঙ্গে আর থ্রিলারের মেলবন্ধন কী ভাবে হচ্ছে?

ঋত্বিক: জ্যোতিষে বিশ্বাস করি না ঠিকই। কিন্তু একটা প্রাচীনবিদ্যা তো এটা, আর এই নিয়ে অনেকে অসৎ ভাবে ব্যবসাও করে। তেমনই কিছু জ্যোতিষী খুন হয় শহরে। সেখান থেকেই এগোয় গল্প। আমি সেই খুনের কিনারা করতে আসি।

প্রশ্ন: নতুন প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে কাজ করছেন। মনে হয় কি প্রতিষ্ঠিত সংস্থায় কাজ করলে অনেক নিরাপদ হত?

ঋত্বিক: যে কোনও প্রতিষ্ঠিত সংস্থার যে অভিজ্ঞতা, ইন্ডাস্ট্রিতে তা সত্যিই অনেকটা সাহায্য করে। নিরাপদ নিশ্চয়ই তা। তবে এই ইন্ডাস্ট্রির অংশ হিসাবে অবশ্যই চাইব নতুন প্রযোজকরা উঠে আসুক। তবে নতুন সংস্থা শুরু হলে একটা স্ফূর্তি থাকে। তাদের নতুন কিছু করার আকাঙ্ক্ষা থাকে। ইন্ডাস্ট্রি বড় হলে তো কাজ বাড়বে।

ছবি থেকে রাজনীতি নিয়ে আড্ডায় ঋত্বিক।

ছবি থেকে রাজনীতি নিয়ে আড্ডায় ঋত্বিক। ফাইল চিত্র।

প্রশ্ন: তার পরও তো সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলা ছবির পাশে থাকার ঝড় দেখা যায়!

ঋত্বিক: ছবি তো চলতেই হবে। লাভ দেখতে না পেলে তা চিন্তার বিষয়। সত্যি বলতে এই ব্যবসা যাঁরা চালান, প্রযোজক, ডিস্ট্রিবিউটর— এগুলো মূলত তাঁদের ভাবার বিষয়। আমরা এখানে বসে দু’টো উত্তর দিয়ে দিলে কোনও সমাধান আসবে না। ব্যাপারটা গভীরে ভাবার প্রয়োজন। সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলে, আর ঘরে বসে কথা বলে লাভ হবে না। আমার অভিনয় করা কাজ। সেটা আমি মন দিয়ে করার চেষ্টা করি। ব্যবসাটা যাঁদের, এটা তাঁদের তরফ থেকে ভাবার বিষয়।

প্রশ্ন: নতুন প্রজন্মের কাজ দেখা হয়?

ঋত্বিক: অনেকেরই অভিনয় দেখি। আর আমাদের এখানে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কোনও কমতি নেই।

প্রশ্ন: তাও তো বলা হয় ভাল অভিনেতা পাওয়া যাচ্ছে না...

ঋত্বিক: ভাল-খারাপটা তো বিচার্য বিষয়। আমার মনে হয় না সাংঘাতিক অভাব আছে। কিন্তু মনে হয় যে সঠিক অন্বেষণ করা দরকার।

প্রশ্ন: আজকাল টলিপাড়ায় এত পার্টি হচ্ছে, একজোট হয়ে সবাই সবার বন্ধু। কিন্তু কোনও বন্ধুদের দলেই তো আপনাকে দেখা যায় না। কেন?

ঋত্বিক: বন্ধুত্ব আছে আসলে। আবার আমাদের এখানে তো আমি উল্টোটাও দেখি। সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ নয়। সবাই যে যার মতো আলাদা আলাদা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত। একে অপরের সঙ্গে ঝগড়া করছে সেটাও দেখতে পাই। আবার তাঁদেরও দেখা যাবে একসঙ্গে পার্টি করছে। তার মানে তাঁদের মধ্যেও একটা কোনও অন্য ধরনের বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে নিশ্চয়ই। রাজনৈতিক দল এবং তাঁদের মতাদর্শ আলাদা হয়ে বন্ধুত্ব রাখা অবশ্য স্বাস্থ্যকর।

প্রশ্ন: আপনি নিজে কেন কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হলেন না?

ঋত্বিক: রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার মতো মানুষ আমি কখনও ছিলাম না। ভারতবর্ষে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিটাই হয় তো একমাত্র ইন্ডাস্ট্রি যেখানে এতগুলো মানুষ অভিনয়ও করেন আবার তাঁরা সরাসরি রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত। বাংলা ছাড়া মনে হয় আর কোনও ইন্ডাস্ট্রিতে এত জন সাংসদ অভিনয় করেন, এত জন বিধায়ক অভিনয় করেন, রাজনৈতিক যুব দলের প্রধান অভিনয় করেন। একটা আলাদাই ব্যাপার। খুবই অন্য রকম না বিষয়টা? আমার মতটা আসলে অন্য।

প্রশ্ন: কী মত আপনার?

ঋত্বিক: আমি না আসলে কোনও চাপিয়ে দেওয়া মতকে বাধ্যতামূলক ভাবে মানায় কোনও কালেই বিশ্বাসী ছিলাম না। রাজনীতি করার প্রাথমিক শর্তই হল দলের মতাদর্শ মেনে চলা। আমার নিজস্ব মতাদর্শের বাইরে আমি কোনও দলের মতাদর্শ মেনে চলতে পারব না। অতএব আমি রাজনীতির মানুষই নই। রাজনীতির মানুষ হলে প্রথমেই তাঁকে দলের ভুলকে অস্বীকার করতে হয়। আমি উল্টোটা। আমি প্রথমে নিজের ভুল স্বীকার করব। তাতে নিজে উন্নত হব। কোনও রাজনৈতিক দলেই সেই অনুশীলন নেই। সমাজে এমন মানুষেরও প্রয়োজন আছে, যাঁরা কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত হবেন না। যাঁরা শুধু নাগরিক সুবিধা, অসুবিধা নিয়ে ভাববে বিচার করবেন। ভোট দেবেন।

প্রশ্ন: এই কিছু দিন আগে প্রকাশ্যে দেব-হিরণের তরজা হল, আপনার কি মনে হয় রাজনীতি পেশাদারিত্বে কতটা প্রভাব ফেলছে?

ঋত্বিক: এই ঘটনা যদিও পুরোটাই রাজনৈতিক তরজা। রাজনীতি করলে তো সেই তরজার মধ্যে যুক্ত হতেই হবে। কিন্তু সে আর কী প্রভাব ফেলবে? সহ-অভিনেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক তো রাখতেই হবে। সেই প্রভাব যদি পড়ে, তা হলে তা খুবই দুশ্চিন্তার বিষয়।

Advertisement
আরও পড়ুন