নতুন ছবি মুক্তির আগে খোলামেলা অঙ্কুশ। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
প্রশ্ন: কলকাতায় তবে কি নায়িকার অভাব খুঁজতে যেতে হল বিদেশে?
অঙ্কুশ: ‘ওগো বিদেশিনী’ ছবির গল্পে বিদেশি নায়িকারই চাহিদা ছিল। খুব কঠিন ছিল খোঁজা, অনেক জনের মধ্যে থেকে অ্যালেকজ়ান্দ্রা টেলরকে আমরা খুঁজে বার করেছি। বিদেশে ওকে ওয়ার্কশপ করানো হয়। অ্যালেকজ়ন্দ্রা দারুণ অভিনেত্রী।
প্রশ্ন: প্রত্যেককেই আপনারা দারুণ বলে থাকেন, সেটা কি মন থেকে বলেন?
অঙ্কুশ: কেন আপনাদের কোথায় সমস্যা? এটা সত্যিই ও ভাল অভিনেত্রী। বাংলা ছবিতে ওকে ব্যবহার করার সুযোগ কম। ও লন্ডনে থিয়েটার নিয়ে পড়াশোনা করে কাজটা করতে এসেছে। নিঃসন্দেহে অভিনয়টা বোঝে ও। অ্যালেকজ়ান্দ্রা অনেকের চেয়ে ভাল অভিনয় করতে পারে। ওকে ব্যবহার করা গেলে বাংলা ইন্ডাস্ট্রি এক জন ভাল নায়িকা পেত।
প্রশ্ন: বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে ইদানীং বাণিজ্যিক ঘরানার নায়ক-নায়িকার এত অভাব হচ্ছে কেন?
অঙ্কুশ: সিঙ্গল স্ক্রিনে দর্শক টানতে পারবে এমন অভিনেতা পাওয়া খুব একটা সহজ কাজ নয়। তা হলে সবাই হিরো হয়ে যেত। যদিও সিনেমা হলও তো কম এখন। আগামী দিনে আসবে আশা করছি। নিজের প্রযোজনা সংস্থা খুলেছি। সেখানেও নতুন নতুন অভিনেতাদের অডিশন নিচ্ছি। চেষ্টা করব নতুন মুখ তুলে আনার।
প্রশ্ন: এই দাড়ির লুকটা তো অনেক দিন হল?
অঙ্কুশ: হ্যাঁ, তা-ও হয়ে গেল প্রায় সাত থেকে আট মাস।
প্রশ্ন: দর্শক তো বুঝতে পারছেন না, ‘মির্জা’র জন্য না কি অন্য কোনও ছবি?
অঙ্কুশ: হ্যাঁ, মির্জার জন্য তো বটেই। ধরুন, একটা ছবির শুটিং শুরু হবে ছ’মাস পর। তার একটা লুক আছে। ছ’মাস পর একটা ছবি শুরু হবে সেই কথা ভেবে যদি মাঝে অন্য কোনও ছবির কাজ না করি, তেমন ভাবে তো আমাদেরও টিকে থাকা কঠিন।
প্রশ্ন: তার মানে ‘মির্জা’ ছাড়া অন্য ছবিগুলোতেও একই লুক?
অঙ্কুশ: ‘মির্জা’র জন্য তো বটেই। মাঝে যে ছবিগুলো রয়েছে পরিচালক বললেন, দাড়ি থাকলেও অসুবিধা নেই। ‘বিবাহ অভিযান ২’-তেও এমনই দাড়ির লুকে দেখা যাবে আমায়।
প্রশ্ন: বিক্রম চট্টোপাধ্যায়কে কি নিজের প্রতিযোগী বলে মনে হচ্ছে?
অঙ্কুশ: ও চেহারাটা বানিয়েছে বটে! দারুণ! বহু মাস ধরে চেষ্টা করছিল নিজের চেহারাকে এই ভাবে তৈরির জন্য। কিন্তু মাঝে কাজ চলে আসছিল। হয়ে উঠছিল না। কিন্তু অবশেষে করতে পেরেছে আমি খুব খুশি।
প্রশ্ন: একটুও কি হিংসা হচ্ছে না?
অঙ্কুশ: দেখুন হিংসা যদি নেতিবাচক অর্থে হয় তা হলে তা ভুল। কিন্তু যদি স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা থাকে দু’জনের তো হলে তা ভাল। তবে আমাদের দু’জনেরই উন্নতি হবে। হ্যাঁ, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যই হিংসা হয়, যদি দেখি কেউ এক জন দারুণ একটা কাজ করেছে। দেখে মনে হয় ইস! সুযোগটা যদি আমিও পেতাম।
প্রশ্ন: নিজের প্রথম প্রযোজিত ছবিতে ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে কেন ভাবছেন না?
অঙ্কুশ: কে বলল ভাবছি না?
প্রশ্ন: ভাবছেন তা হলে?
অঙ্কুশ: ভাবা, না ভাবার ব্যপারটা নয়। আসলে চিত্রনাট্য এখনও বাকি। তাই যত ক্ষণ না গল্প চূড়ান্ত হচ্ছে ওই ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না।
প্রশ্ন: প্রযোজক হওয়ার পর থেকে নিজের মধ্যে কী পরিবর্তন এল?
অঙ্কুশ: প্রচুর পরিবর্তন। সংযমী হয়ে গিয়েছি। অনেক মিটিং করতে হচ্ছে। আর আমি মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিতে পারি না। কেউ যদি প্রশ্ন করেন, কতটা ফেরত পাব। আমি বলেই দিই আমার জানা নেই। ভাল ছবি হলে নিশ্চয়ই টাকা আসবে। আর না হলে হবে না।
প্রশ্ন: ভাল ছবির সংজ্ঞা কী?
অঙ্কুশ: সত্যি বলতে আমারও জানা নেই। মানুষের কী ভাল লাগবে, কী লাগবে না তা বলা কঠিন। আমাদের দিয়ে যেতে হবে। হিট ছবি তৈরির ফর্মুলা জেনে গেলে তো সবার ছবি হিট করত। প্রত্যেকটা ছবি নিজের ভাগ্য নিয়ে আসে। আমাদের কাজ সততার সঙ্গে কাজ করে যাওয়া। কারও হয়তো এমন কাউকে পছন্দ হয়ে যায়, তাঁকে দেখে হয়তো মনেই হবে না সে হিরো হতে পারে।
প্রশ্ন: আপনার নিজেকে দেখে কখনও প্রশ্ন জেগেছে কী করে হিরো হয়ে গেলাম?
অঙ্কুশ: হ্যাঁ, মনে হয়। আমার চেয়ে অনেক ভাল অভিনেতা আছেন যাঁরা হয়তো এখনও সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে আমার যাত্রাও কিন্তু সহজ ছিল না। বর্ধমান থেকে এসে নিজেকে প্রমাণ করা। যখন দেখি এমন উঠতি অভিনেতা যাদের খুঁটির জোর নেই, ইন্ডাস্ট্রির রাজনীতির শিকার হচ্ছে, তখন মনে হয় এগুলো তো আমায় সহ্য করতে হয়নি। আমি ভাগ্যবান।
প্রশ্ন: আপনি প্রত্যক্ষ ভাবে রাজনীতিতে জড়াচ্ছেন না কেন?
অঙ্কুশ: যেটা বুঝি না, সেটা করব কেন?
প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকেই এমনটা বলেন, তার পরও তাঁরা রাজনীতিতে, আপনার বাধাটা কোথায়?
অঙ্কুশ: আমি শুধু শুটিং আর বাড়ি বুঝি। শুটিংয়ের ফাঁকে মাচা শো হল, ফিতে কাটা হল কিংবা বিজ্ঞাপনের শুটিং হল, সেটা আলাদা ব্যাপার। এই সবের বাইরে আমি আর কিছু বুঝি না।
প্রশ্ন: অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা কি বিয়ে করবে না?
অঙ্কুশ: করব। দু’বছর পর করে নেব।