সায়নী ছবি: শুভা মিত্র ও পুনম মল্লিক।
প্র: যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি পদে অভিষেক হল আপনার। বিরাট দায়িত্ব। কোনও বাড়তি চাপ অনুভব করছেন?
উ: এত গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়ে আমার তো আকাশ থেকে পড়ার মতো অবস্থা! এই গুরুদায়িত্ব দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ। নিজের প্রতি আমার আস্থা রয়েছে। অভিনয়েও এসেছিলাম কোনও ব্যাকগ্রাউন্ড ছাড়া। কাজ করতে করতে শিখেছি। এখানেও ধীরে ধীরে শিখে যাব সব কিছু। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝেছেন, আমাকে দিয়ে যুব সংগঠনের কাজ সফল করা সম্ভব। আমাকে দেখে কমবয়সি ছেলেমেয়েরা রাজনীতিতে আসবেন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের সংগঠন সাজাতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। সরকার নির্বাচনে যুবসমাজ একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। আর আমার দায়িত্ব হবে দলের বার্তা রাজ্যের যুবসমাজের কাছে পৌঁছে দেওয়া।
প্র: সে কাজের জন্য কী ভাবে নিজেকে তৈরি করছেন?
উ: কাজ শুরুর ব্যাপারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গাইড করছেন। রাজনীতির ময়দানে পা দিয়ে ওঁকে সব সময়ে পাশে পেয়েছি। কমিটি মেম্বারদের সঙ্গে দেখা করে মিটিংয়ে বসছি। ইয়াস বিধ্বস্ত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কাজ দিয়ে কর্মসূচি শুরু হবে। সারা বছর নানা সামাজিক কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়া যায় কী ভাবে, পর্যালোচনা করতে হবে। শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে গ্রাসরুট স্তরের দলীয় কর্মীদের যোগাযোগ যাতে বিচ্ছিন্ন না হয়, তা দেখতে হবে। সকলকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার ধারা বজায় রাখতে চাই। প্রবীণের অভিজ্ঞতা আর নতুনের এনার্জিকে মেলানোই আমার লক্ষ্য।
প্র: নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও তৃণমূল দলের ভাবমূর্তি নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে...
উ: কসমোপলিটন, মডার্ন ও প্রোগ্রেসিভ— নতুন প্রজন্মের কাছে দলের হয়ে এই বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। আমি নিজে আসানসোলে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী ভাবে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিতে চান। কিন্তু কিছু অসাধু লোকের হাতে পড়ে সেগুলো মানুষের কাছে পৌঁছয় না। এদের সরিয়ে দলকে বাঁচাতে হবে। কাজের মধ্য দিয়েই দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য যোগ্যতা এবং আগ্রহ রয়েছে, এমন মানুষদের দলে টানতে হবে। যাঁরা সমস্যার সমাধান নিয়ে আসবেন, তাঁদের জন্য খোলা রয়েছে পার্টির দরজা।
প্র: আপনি ছাড়াও রাজ চক্রবর্তী, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, লাভলি মৈত্র পার্টির বিভিন্ন পদ পেলেন। টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে এর প্রভাব পড়বে বলে মনে হয়?
উ: একটা প্রভাব তো পড়বেই। গত লোকসভা থেকেই পড়তে শুরু করেছে। এ বার থেকে চাইলেই যে রাজনীতিতে আসা যাবে, এমন নয়। যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে আসতে হবে। ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রেও সেটা প্রযোজ্য। একজন ব্যক্তি দশটা পোস্ট ধরে থাকবে, তা চলবে না। ইন্ডাস্ট্রি বলে নয়, সব ক্ষেত্রেই পরিবর্তন হবে।
প্র: দ্বিতীয় ছবি ‘শক্র’ দিয়েই পরিচিত হন আপনি। অভিনয়ে রাজ এখনও আপনার মেন্টর। সহঅভিনেত্রী নুসরতের সঙ্গে বন্ধুত্ব তখন থেকেই। রাজনীতিতে প্রবেশের পর কতটা পাশে পেয়েছেন এঁদের?
উ: পদ পাওয়ার পরে রাজ আমাকে প্রথম ফোনটা করে। আমাকে তৈরি করার পিছনে ওর অনেক অবদান রয়েছে। নুসরতও টুইট করেছে। রাজনীতিতে আসার পরে দলের কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
প্র: অভিনয় না রাজনীতি কোনটা এখন প্রাধান্য পাবে?
উ: অভিনয় প্রথম প্রেম আমার। কিন্তু অভিনতা-অভিনেত্রীরা রাজনীতিতে হাওয়া খেতে আসেন, এই ভুল ধারণা ভাঙতে চাই। তাই রাজনীতিটা খুব সিরিয়াসলি করতে চাই। খুব ভাল স্ক্রিপ্ট না পেলে অভিনয় করব না।
প্র: এত ব্যস্ততার ফাঁকে নিজের জন্য সময় পান?
উ: এত মানুষ আমার জীবনে এসে গিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নিজের জন্যই আর সময় নেই। অবসর মিললে মা-বাবার সঙ্গে গল্প করি। তাঁরাও আমাকে আর সে ভাবে পান না। আর দুটো কুকুর ছানা রয়েছে, ওদের আদর করি।