কোটির ক্লাবে শাশ্বত-অপরাজিতা। নিজস্ব চিত্র।
শুরুতে বিস্ময়ের ধাক্কায় হতবাক। ঘোর কাটতেই আহ্লাদে আটখানা প্রযোজক শুভঙ্কর মিত্র। মানুষের মুখে প্রচারে এবং নিজগুণে মানসী সিংহের প্রথম ছবি ‘এটা আমাদের গল্প’ দেড় কোটির ক্লাবে! বক্স অফিসের হিসেবে এখনও পর্যন্ত বছরের সেরা বাংলা ছবি। টলিউড বলছে, মানসী ‘ফাস্ট গার্ল’। প্রথম ছবিতেই নিজের জাত বুঝিয়ে দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই ছবিটি দেখানো হয়েছে নিউ জ়িল্যান্ড, সিডনিতে। একটি প্রদর্শনে সেখানকার দর্শকের মন ভরেনি। তাই আরও এক বার দেখানো হবে। পাশাপাশি দেখানো হবে লন্ডন, আমেরিকা-সহ আরও প্রথম বিশ্বের শহরে। নিজের শহরে ছবির ব্যবসার ছবিটা কেমন? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন কথা বলেছিল প্রযোজক-পরিচালক দু’জনের সঙ্গেই। শুভঙ্করের দাবি, যা হয়েছে পুরোটাই ‘অর্গানিক’ মানে স্বাভাবিক) ভাবে। ছবির ব্যবসা বাড়াতে আলাদা কিচ্ছু করা হয়নি। সায় দিয়েছেন মানসীও। তখনই তাঁর কপট আফসোস, ‘‘ছবি দেড় কোটির বাণিজ্য করল। প্রযোজক দৌড় করিয়ে আমার দেড় কেজি ওজন ঝরিয়ে দিল!’’
এই অনুযোগ যে পুরোপুরি আনন্দের, সে কথা বলাই বাহুল্য। ৫ সপ্তাহের আগে ৭০টি প্রেক্ষাগৃহে রমরমিয়ে চলছে ছবিটি। একাধিক হলে একাধিক শো। এবং ‘হাউসফুল বোর্ড’ ঝুলছে। যা প্রযোজক-পরিচালকের কল্পনার অতীত। আরও আছে। জুলাইয়ে ছবিটি লস অ্যাঞ্জেলেস চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিতে চলেছে। দেখানো হবে এনএবিসি-তেও। ছবিতে রয়েছেন দক্ষ অভিনতারা। তালিকায় সোহাগ সেন, খরাজ মুখোপাধ্যায়, দেবদূত ঘোষ, তরিন জাহান, কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, জুঁই সরকার প্রমুখ। এই প্রথম জুটি বেঁধেছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, অপরাজিতা আঢ্য। ছবির সাফল্যে কী বলছেন তাঁরা? জবাবে পরিচালকের গলায় খুশির আমেজ। বলেছেন, ‘‘অপার (অপরাজিতা আঢ্য) কথা কী বলব! রোজ রাতে ফোন করে হাঁপাচ্ছে, ‘মানসী, হললিস্টে লাল দাগ তো হল না!’ লাল দাগ মানে হাউসফুল। পরের দিনই সকালে আবার ফোন, ‘ও মানসী, হয়ে গিয়েছে’।’’ প্রায় একই দশা শাশ্বতরও। তাঁর মতে, ছবিটি ভাল বলেই তিনি যেচে নায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তবে এত ভাল ফল করবে, বুঝতে পারেননি। তিনি খুব খুশি। প্রযোজকের দাবি, ছিমছাম, ভালবসার গল্প এখনও বাঙালি দেখতে ভালবাসে। এই ছবির সাফল্য তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
মাত্র চার সপ্তাহে বাংলা ছবি কোটির ঘরে। তাও আবার পরিচালক নতুন। প্রযোজক পার্টি দেবেন না?
প্রশ্ন রাখতেই শুভঙ্করের যুক্তি, ‘‘ফলাফল দেখে খিদে বেড়ে গিয়েছে। মনে হচ্ছে, এখনও সবটা পূর্ণ হয়নি। আরও কিছু পাওয়া বাকি। সেটা যত ক্ষণ না হচ্ছে তত ক্ষণ উদ্যাপনে নেই।’’