সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিনে প্রয়াত পরিচালকের ছবির সামনে সন্দীপ রায় এবং সব্যসাচী চক্রবর্তী। — নিজস্ব চিত্র
মঙ্গলবার সকাল থেকেই সত্যজিৎ রায় ধরণীর মোড়ের হলুদ বাড়িটির বাইরে উৎসাহীদের ভিড়। কারণ বছরের এই বিশেষ দিনে রায় বাড়ির দরজা খুলে যায় সত্যজিৎ রায়ের অনুরাগীদের জন্য। কিংবদন্তি পরিচালকের ১০৩তম জন্মদিনে সত্যজিৎ রায়ের বাসভবনে পরিচিত ছবিই ধরা পড়ল।
মাঝে দু’বছর রায় বাড়িতে এই বিশেষ দিনে সাধারণের প্রবেশ ছিল বন্ধ। নেপথ্যকারণ ছিল অতিমারি। কিন্তু গত বছর থেকে ২ মে সত্যজিৎ রায়ের বাসভবন আবার পরিচিত ছন্দে ফেরে। শুরু হয় অনুরাগীদের আগমন। প্রতি বছর এই দিনে রায় পরিবারের সদস্যদেরও দম ফেলার সময় থাকে না। সত্যজিৎ-পুত্র সন্দীপ রায় বললেন, ‘‘এই দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অতিথিরা আসতেই থাকেন। তাই ব্যস্ততা লেগেই থাকে।’’
গত বছর ডিসেম্বরে মুক্তি পেয়েছিল সন্দীপ পরিচালিত ফেলুদা ছবি ‘হত্যাপুরী’। সেই ছবির সাফল্যই আগামী ছবির কাজে উদ্বুদ্ধ করেছে সন্দীপকে। জানালেন, সব ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বরেই আসতে পারে তাঁর নতুন ছবি। এর আগে সত্যজিৎ রায়ের শতবর্ষ উপলক্ষে একটি বিশেষ ছবির পরিকল্পনা করেছিলেন সন্দীপ। সেই ছবিতে বিরতির আগে একটি ফেলুদা কাহিনি এবং বিরতির পর একটি প্রফেসর শঙ্কুর কাহিনি থাকার কথা ছিল। সন্দীপ বললেন, ‘‘সেই ছবিটা করতে হয়তো আরও তিন বছর সময় লাগবে। আসলে শঙ্কুর গল্প মানেই সেখানে বাজেট একটা বড় বিষয়।’’ তা হলে পরবর্তী ছবি কি ফেলুদাকে নিয়েই? সন্দীপ হেসে বললেন, ‘‘ফেলুদার পরিকল্পনা তো রয়েইছে। পাশাপাশি বাবার ছোট গল্পগুলো নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে। সে ক্ষেত্রে হয়তো একটা ছবিতে দু’-তিনটে গল্পও থাকতে পারে।’’ কোন বিষয় নিয়ে পরবর্তী ছবি তৈরি করবেন, আগামী জুন-জুলাই নাগাদ সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানালেন সন্দীপ।
অন্য দিকে, মঙ্গলবার সন্দীপের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন তাঁরই পর্দার ফেলুদা সব্যসাচী চক্রবর্তী। প্রত্যেক বছর নিয়ম করে তিনি আসেন না। বললেন, ‘‘বাবুদার পরিবারের সঙ্গে আমার পরিবারের দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক। কিন্তু আসলে এই দিন এত ভিড় থাকে যে, প্রত্যেক বছর আসা হয় না।’’ সত্যজিৎ-সৃষ্ট ফেলুদা চরিত্র সব্যসাচীকে ছোট-বড় নির্বিশেষে সকলের কাছে জনপ্রিয় করে তোলে। সেই প্রসঙ্গ টেনেই বললেন, ‘‘ওঁর সঙ্গে কাজের সৌভাগ্য আমার হয়নি। কিন্তু ওঁর সৃষ্টির সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমি গর্বিত।’’
অন্য দিকে, সোমবার সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘মহানগর’ ছবির ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে রে সোসাইটির উদ্যোগে নন্দনে একটি বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সন্দীপ রায়ের সঙ্গে আলোচনায় যোগ দেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী জয়া বচ্চন। সত্যজিতের পরিচালনায় ‘মহানগর’ ছবিতে কাজের অভিজ্ঞাতাই তিনি উপস্থিত শ্রোতাদের সঙ্গে ভাগ করে নেন। আলোচনা সভার শেষে ‘মহানগর’ ছবিটি প্রদর্শিত হয়।