আরজি কর-কাণ্ড মনে করিয়ে দিলেন কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
“আলু বেচো, ছোলা বেচো, বেচো বাখরখানি/ বেচো না বেচো বন্ধু তোমার চোখের মণি”... প্রায় দু’দশক আগে এমন কথা শুনিয়েছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। তাঁর সুরে অবশ্য সামান্য সহমর্মিতা ছিল। হয়তো সমাজ তখনও এতটা অন্ধ হয়ে যায়নি। হয়তো সহমর্মিতা প্রাপ্য ছিল তার। এত দিন পরে, চোখের মণি খেয়ে অন্ধ হয়ে না বসে থাকার হুঁশিয়ারি দিলেন কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। স্বর তাঁর কড়া।
প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছিল গোটা শহর। এই সময়ের মধ্যে মানুষ মেতেছে দুর্গাপুজো থেকে দীপাবলিতে। বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে এই শহর কি ভুলেই গেল আরজি কর-কাণ্ড। কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ও তাঁর পোস্টে এই প্রশ্নই আরও এক বার তুলে আনলেন।
বরাবরই সমাজমাধ্যমে নিজের মতামত স্পষ্ট করেন পরিচালক ও অভিনেতা। কমলেশ্বর তাঁর পোস্টে লেখেন, “আর্থিক বিপর্যয় মানেই, আয় কম। সামাজিক বিভাজন মানেই, আস্থা কম।”
সাজগোজ থেকে শুরু করে জ্যোতিষচর্চা সবই কেনাবেচা হচ্ছে। এই জোয়ারে নিজেকেও বেচে দিচ্ছেন অনেকে। এমনই ইঙ্গিত পরিচালকের পোস্টে। তিনি লেখেন, “মদ বেচো, ম্যাসাজ বেচো, লটারি বেচো, ককটেল-পার্টি বেচো, জ্যোতিষ বেচো, রাজনৈতিক বা পরকীয়ার কেচ্ছা বেচো, ধর্ম বেচো, সাজগোজ বেচো, বিনোদন বেচো, খেলাধুলো বেচো, গ্যাজেট বেচো, খেলনা বেচো আর ভয় বেচো। আসলে পালিয়ে যাওয়ার রাস্তা বেচো। তার পর সুযোগ পেলে নিজেকেই বেচে দাও। চোখ কান রাখলেই এগুলো দেখতে পাবেন।”
পোস্টের শেষে কমলেশ্বর মনে করিয়ে দিয়েছেন আরজি কর-কাণ্ডের নির্যাতিতা চিকিৎসকের কথা। তাঁর কথায়, “চোখ কান খোলা নেই। তাই নির্যাতিতার শব আর দেখতে পাচ্ছেন না। তাঁর বাবা মায়ের কান্না শুনতে পাচ্ছেন না। অনুভব করতে পারছেন না ‘বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে’।”
চলতি বছরের দুর্গাপুজোতে উৎসবে ফেরা নিয়ে নানা চর্চা হয়েছিল। সেই সময়েও কমলেশ্বর জানিয়েছিলেন, পুজো হলেও উৎসবের জোয়ারে তিনি গা ভাসাবেন না। সেই সময়ে পরিচালক-অভিনেতা বলেছিলেন, “মানুষের মন ভাল নেই। পুজো নিশ্চয়ই হবে। কিন্তু, যে পরিস্থিতি চলছে, উৎসবে ভাসার মানসিকতা মানুষের থাকবে বলে মনে হয় না। পুজো বা উৎসব যা-ই হোক, বিচারের দাবি উধাও হয়ে যাবে না।”