‘ফ্লাইওভার’ ছবিতে দেখা যাবে কোয়েল মল্লিককে।
লাগাতার ট্রাফিক আইন ভাঙা নতুন নয়। একই ভাবে অন্য ভাষার ছবি নিজের ভাষায় উপহার দেওয়ার দস্তুরও অনেক কালের। কখনও হিন্দি ছবি ধার নিয়েছে বাংলার ভাবনার। কখনও বাংলা ঋণী দক্ষিণী ছবির কাছে। রাজ চক্রবর্তী সহ একাধিক বাঙালি পরিচালক এই পথে হেঁটেছেন। এ বার সেই পথে পরিচালক অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়। তামিল, তেলুগু, কন্নড় ভাষার সুপারহিট ছবি ‘ইউ টার্ন’কে তুলে ধরছেন বাংলার পটভূমিকায়। যার বাংলা ভার্সন ‘ফ্লাইওভার’।
‘টেকো’, ‘গুগলি’, ‘নিমকি-ফুলকি’র মতো অরিজিনালসের পর হঠাৎ রিমেক কেন? অভিমন্যু অকপট আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে, ‘‘অরিজিনালসের পাশাপাশি আমি অনেক রিমেক গল্প লিখেছি। আমার চোখে রিমেক বানানো কোনও অপরাধ নয়। যদি না হুবহু অনুকরণ করা হয়।’’ পরিচালকের কথায়, তিনি দক্ষিণী ছবিকে নিজের মতো করে পরিবেশন করেছেন। দাবি, ‘ট্রাফিক আইন ভাঙার ছবি কিন্তু দেশের সব জায়গাতেই প্রায় সমান।’ এবং অদ্ভুত ভাবে নাকি ‘ইউ টার্ন’-এর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন পরিচালক এবং প্রযোজক ২ জনেই। কারণ, ২০১৮-য় কন্নড় ভাষায় প্রথম মুক্তি পাওয়ার পর সমালোচকদের প্রশংসা আদায় করে নিয়েছিল এই ছবি। তাই নিসপাল সিংহ রানেকে বলতেই তিনি এক কথায় রাজি, জানাতে ভুললেন না পরিচালক।
কোয়েলের কথায়, ‘‘রিমেক ছবি অনেক হয়। এটা নতুন কিছু নয়। অনেক সময় কোরিয়ান ছবি থেকে বাংলা ছবি হয়েছে। কিন্তু সেই কোরিয়ান ছবির নামগুলো হয় তো আমরা জানিনা। এমনটা সারা বিশ্বেই হয়। এই গল্পটা খুবই ভাল তাই আমরা চেয়েছিলাম এটিকে বাঙালি দর্শকদের কাছে পৌঁছে দিতে।’’
বাংলা এবং দক্ষিণী ছবির মধ্যে মিল সামান্যই। গল্প আর চিত্রনাট্য ছাড়া বাকিটা পুরোপুরি বাংলার। যদিও পরিচালক ছবি রিলিজের আগে কিছুতেই হদিশ দিলেন না সেই বাঙালিয়ানার। পার্থক্য আরও আছে। দক্ষিণী ছবিতে সামান্থা আক্কিনেনি, ভূমিকা চাওলা, রাহুল রবিন্দ্রনের মতো তারকার ভিড়। সেখানে বাংলায় কোয়েল মল্লিক ছাড়া বাকিরা তথাকথিত ‘তারকা’ নন। গৌরব চক্রবর্তী, কৌশিক রায়, রবি সাউ, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়---সবাই বাঘা অভিনেতা। এই বিষয়ে অভিমন্যুর যুক্তি, ‘‘যিনি, যে চরিত্রে মানানসই তাঁকে ঠিক সেই চরিত্রেই বাছা হয়েছে।’’
২ এপ্রিল বড় পর্দায় মুক্তি পাচ্ছে ‘ফ্লাইওভার’। ৮ থেকে ৮০ বাঙালি দর্শক এখন অরিজিনাল থ্রিলারের পোকা। সেখানে রিমেক থ্রিলার কেন দেখবেন তাঁরা? আত্মবিশ্বাসী অভিমন্যুর দাবি, সাধারণত রহস্য-রোমাঞ্চ ছবিতে ‘কে করল’, এই প্রশ্নটাই কেবল ঘুরতে থাকে। সুরিন্দর ফিল্মসের আগামী ছবি দেখতে দেখতে কখন হল, কবে হল, কী ভাবে হল-র মতো এক রাশ প্রশ্ন এক সঙ্গে তৈরি হয়ে যাবে সবার মনে। সেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর না জেনে দর্শক প্রেক্ষাগৃহ ছাড়তেই পারবেন না।