দেবাদৃতা বসু।
দর্শকের কাছে প্রথম তিনি এসেছিলেন ‘জয়ী’ হয়ে। কখনও আবার 'আলো' হয়ে পৌঁছে গিয়েছেন ঘরে ঘরে। বর্তমানে তিনি ‘মীরাবাই’, শ্রীকৃষ্ণের আরাধিকা। তিনি দেবাদৃতা বসু। সাক্ষাৎকারের সময়ই শর্ত দেওয়া হয়েছিল, কোনও রকম বিতর্কিত প্রশ্ন করা যাবে না তাঁকে। কিন্তু বছর একুশের এই অভিনেত্রী পর্দার বাইরে ঠিক কেমন? পর্দার চরিত্রের সঙ্গেই বা কতখানি মিল রয়েছে তাঁর? খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন।
প্রশ্ন: কোনও কিছু পাওয়ার জন্য নয়, মীরাবাই কৃষ্ণে মগ্ন ছিলেন নিঃস্বার্থ ভাবেই। দেবাদৃতার জীবনে এমন কেউ আছেন?
দেবাদৃতা: (কিছুটা হেসে) দেবাদৃতা শুধু পর্দাতেই মীরা। সে কৃষ্ণের ভক্ত। কিন্তু বাস্তবে এ ক্ষেত্রে অন্তত দেবাদৃতার সঙ্গে মীরার কোনও মিল নেই। আমার জীবনে এখনও পর্যন্ত সে রকম কোনও মানুষ আসেনি।
প্রশ্ন: ‘জয়ী’ বা ‘আলো’-র মতো সমসাময়িক চরিত্রে অভিনয়ের পরেই হঠাৎ মীরাবাই…
দেবাদৃতা: আমি একজন অভিনেত্রী। সব ধরনের চরিত্রই করতে চাই। মানুষ যেমন আমাকে জয়ী বা আলো হিসেবে স্বীকার করেছেন, ঠিক সে ভাবেই 'শ্রীকৃষ্ণভক্ত মীরা'-য় মীরাবাই হিসেবেও ভালবাসছেন।
প্রশ্ন: এই মুহূর্তে টেলিভিশনে আরও অনেক অভিনেত্রীকেই ঐতিহাসিক চরিত্র দেখা যাচ্ছে। বাড়তি চাপ অনুভব করেন?
দেবাদৃতা: না, আমি কোনও বাড়তি চাপ অনুভব করি না। কারণ আমি জানি, আমার কাজটা ভাল ভাবে করছি। মনে করি, প্রতিযোগিতাটা অন্য কারও সঙ্গে নয়, নিজের সঙ্গে। এই চরিত্রের জন্য আমি অনেক প্রস্তুতি নিয়েছি, পড়াশোনা করেছি। প্রযোজনা সংস্থা থেকে প্রচুর সাহায্য পেয়েছি। ঐতিহাসিক চরিত্র করব ভেবে বিশেষ ভয়ও পাইনি। বরং উত্তেজিত ছিলাম। তার পরেই ধীরে ধীরে 'মীরা' হয়ে উঠেছি। তাই নিজের কাজটা যাতে ঠিক মতো করতে পারি, সেই দিকেই মন দেওয়ার চেষ্টা করি সব সময়।
প্রশ্ন: নিজের সঙ্গে প্রতিযোগিতার কথা সকলেই বলেন। তবু নিজের প্রতিযোগী হিসেবে কাউকে দেখেন না?
দেবাদৃতা: সত্যিই এ ভাবে কখনও ভেবে দেখিনি। আমার মনে হয়, প্রত্যেকেই নিজের নিজের জায়গায় খুব ভাল কাজ করছেন।
প্রশ্ন: নিজে কতটা ভাল কাজ করছেন বলে মনে করেন? অভিনেত্রী হিসেবেই বা নিজেকে কত নম্বর দেবেন?
দেবাদৃতা: এই রে! এটা সত্যিই খুব কঠিন প্রশ্ন। নিজেকে কত নম্বর দেব সেটা তো কখনওই ভেবে দেখিনি। তবে এই মুহূর্তে আমি অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে শূন্য দেব।
প্রশ্ন: আপনার প্রিয় অভিনেত্রী কারা?
দেবাদৃতা: (খানিক ভেবে) আমার নির্দিষ্ট কোনও প্রিয় অভিনেত্রী নেই। এক একটি ছবিতে এক একজন অভিনেত্রীকে ভাল লাগে। তবে প্রিয়ঙ্কা চোপড়া, দীপিকা পাড়ুকোন, শেফালি শাহকে আমি খুবই পছন্দ করি।
প্রশ্ন: কিন্তু বলিউড হোক বা টলিউড, ইদানীং শিল্পীদের তো খুব ট্রোলড হতে হয়…
দেবাদৃতা: আমি এ সবকে কোনও দিনই বিশেষ গুরুত্ব দিইনি। ট্রোল করলেও আমি সব সময় তা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার চেষ্টা করি। আমি মীরার মতো একটা ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয় করি। এ রকম একটি চরিত্র নিয়ে কেউ ব্যঙ্গ করলে বিষয়টি খুবই খারাপ হবে।
প্রশ্ন: আপনি তো নেটমাধ্যমে খুবই সক্রিয়। জনপ্রিয়তা ধরে রাখতেই কি এই পন্থা?
দেবাদৃতা: (খানিক উত্তেজিত হয়ে) ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম কে কী ভাবে ব্যবহার করবেন, সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়। অনেকেই এই সব ব্যবহার করেন অনুরাগীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে। কিন্তু আমি করি নিজস্ব ভাল লাগা থেকে।
প্রশ্ন: সোমবার জন্মাষ্টমী। এই দিনটা পর্দার মীরার কাছে কতটা বিশেষ?
দেবাদৃতা: (উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে) আমার দাদু কৃষ্ণভক্ত ছিলেন। এই দিনটায় দাদু পুজো করতেন। আমি ঠাকুরের থালা বাসন বার করে সেগুলো পরিষ্কার করতাম। দাদুকে সাহায্য করতাম। শুধু পর্দায় না, বাস্তবেও আমি কৃষ্ণভক্ত। এখানেই বোধ হয় পর্দার মীরার সঙ্গে দেবাদৃতা মিলেমিশে গিয়েছে।