চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী যখন সিরিজ় ‘নিকষ ছায়া’য় ‘ভাদুড়িমশাাই’। ছবি: সংগৃহীত।
ভারতীয় সময় অনুযায়ী রবিবারের ভোর ৪.৫৩ মিনিট। হোয়াট্সঅ্যাপ ফোনের ও পারে ‘ভাদুড়িমশাই’-এর ভরাট গলা। “ঘুম ভাঙালাম?”, প্রশ্ন করে নিজেই জবাব দিলেন, “আমস্টারডমে এখন বিকেল। আমার জন্মদিনের আয়োজনে ব্যস্ত মেয়ে, জামাই, নাতনি।” ৬৯তম জন্মদিনে নেদারল্যান্ডসে চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী। একই দিনে জন্মদিন শাহরুখ খানেরও। তিনি ৫৯! দেশে জমজমাট উদ্যাপন। বলতেই হাসির আওয়াজ। উত্তর এল, “আমারও এ বছর মন্দ হচ্ছে না। মেয়ের বাড়িতে সুইমিং পুল রয়েছে। তার পাশে সুন্দর করে পার্টির আয়োজন। কিছু অভ্যাগত আসবেন। বিদেশে জন্মদিন মানে সুন্দর সুন্দর ফুল আর রকমারি কেক।”
কলকাতা ‘ভাদুড়িমশাই’কে নিয়ে উচ্ছ্বসিত। পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের ভৌতিক সিরিজ় ‘নিকষ ছায়া’ ভাল লেগেছে দর্শকদের। প্রবাসী বাঙালিদের কাছেও নিশ্চয়ই ‘নীরেন ভাদুড়ি’ সমাদৃত?
প্রশ্ন রেখেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। “অবশ্যই” দাবি বর্ষীয়ান অভিনেতার। তাঁর কথায়, “এ বারের গল্প আরও টান টান ছিল। চিত্রনাট্যও সে ভাবেই লেখা হয়েছে। প্রত্যেকে মন ঢেলে কাজ করেছে। তার ফল তো ফলবেই।” একটু থেমে যোগ করলেন, “জানেন, ওখানে আমায় কয়েক জন অনুরোধ করেছেন, আমাদের কাছে এ রকম সমস্যার হদিস আছে। আপনি দায়িত্ব নিয়ে সেগুলোর সমাধান করে দেবেন?” কথা ফুরোনোর আগেই হাসি। এ বারের সিরিজ়ের জন্য বাড়তি কোনও প্রস্তুতি? অভিনেতার মতে, আলাদা করে তেমন কিছুই প্রস্তুতি নেননি তিনি।
তার পরে নিজেই প্রশ্ন করলেন, “পুজোয় বাংলা ছবির এই হাল কেন? তিনটি বাংলা ছবি মুক্তি পেল— ‘বহুরূপী’, ‘টেক্কা’, ‘শাস্ত্রী’। তৃতীয় ছবিটি কোনও ফল করল না। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবিও একটা সময়ের পর স্তিমিত। একা লড়ে গেল ‘বহুরূপী’!” এই তিনটি ছবিই কিন্তু এ বারের পুজোয় বলিউডকে রাজত্ব করতে দেয়নি। এ কথা জানাতেই মেনে নিয়েছেন চিরঞ্জিৎ। বলেছেন, “সেটা ঠিক। আমাদের সিরিজ়ের ফলাফলও ভাল। বাংলা বিনোদন দুনিয়া তা হলে একেবারে পিছিয়ে নেই, কী বলেন?” তবে বিদেশে থাকার কারণে একটি ছবিও তাঁর দেখা হয়নি। জানালেন, নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তিনি বিদেশে শুনে আফসোস করেছেন।
জন্মদিন উদ্যাপনের মধ্যেই চিরঞ্জিৎ আরও একটি কাজ করেছেন। মনের আনন্দে তিনটি ছবি এঁকে ফেলেছেন। যা তিনি ভাগ করে নিয়েছেন আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে। নতুন ছবি বা সিরিজ় নিয়ে কারও সঙ্গে কথা হয়েছে? পরিচালক-অভিনেতার বক্তব্য, “আমি ছুটি কাটাতে এসেছি। নিজের মতো করে থাকছি। ছবি আঁকছি, নাতনির সঙ্গে খেলছি। কলকাতায় ফিরব ১৭ নভেম্বর। তার পর কাজের কথা হবে।” ইতিমধ্যেই তাঁর ঝুলিতে ‘খাইবার পাস’, ‘হেমা মালিনী’, ‘লুপ’ ছবিগুলি রয়েছে। খুব শিগগিরিই সেগুলি মুক্তি পাবে। চিরঞ্জিতের আশা, তিনটি ভিন্ন স্বাদের ছবিতে তিনি তিন রকমের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এগুলিও দর্শকদের ভাল লাগবে।