নিজের নতুন ছবির প্রচারে কলকাতায় ইয়ামি গৌতম। ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: তা হলে আবার কলকাতায় চলে এলেন?
ইয়ামি: (হেসে) হ্যাঁ, আবার চলে এলাম আপনাদের শহরে।
প্রশ্ন: আপনি কলকাতায় ছবির প্রচারে একাধিক বার এসেছেন। একই শহরে ছবির শুটিং করার অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই আলাদা।
ইয়ামি: অবশ্যই। মনে আছে দু’বছর আগে তখন অতিমারির মধ্যে আমরা শুট করেছিলাম। সত্যি বলতে, কলকাতা দাদার (ছবির পরিচালক অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরি) শহর, কিন্তু কলকাতা আমার কাছেও দ্বিতীয় বাড়ি হয়ে গিয়েছে। কারণ সে বার ৫০ দিন এই শহরে ছিলাম। তাই হাওড়া ব্রিজ বা প্রিয়া সিনেমা যেতে কত সময় লাগবে সবটাই আমি জানি (হাসি)। আরও একটা বিষয়, সে বার নিয়ম করে প্রতি মঙ্গলবার শুটিংয়ের আগে কালীঘাটে মায়ের মন্দিরে যেতাম। দক্ষিণেশ্বরে গিয়েছি। এখনও সে সব দিন মনে আছে।
প্রশ্ন: এই ছবিতে আপনি তো এক জন ক্রাইম রিপোর্টারের চরিত্রে। কী ভাবে নিজেকে প্রস্তুত করেছিলেন?
ইয়ামি: খুব একটা রেফারেন্স আমার কাছে ছিল না। অবশ্য, এই এই ঘরানায় আমার নিজের প্রিয় কিছু ছবি রয়েছে। কিন্তু দাদার সঙ্গে আলোচনাই আমাকে সবথেকে বেশি সাহায্য করেছিল। ছবিটা তো খুবই বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তৈরি। তাই আমিও দর্শকের প্রতিক্রিয়া জানতে মুখিয়ে রয়েছি।
প্রশ্ন: ‘দশভি’র পর ‘আ থার্সডে’। ইদানীং আপনি বেশ অন্য রকমের চিত্রনাট্য নির্বাচন করছেন। এই সিদ্ধান্তটা কি সচেতন ভাবেই নিয়েছেন?
ইয়ামি: অবশ্যই। বরং বলতে পারি অনেক আগেই আমি একটা জিনিস বুঝতে পেরেছিলাম, যে এমন চরিত্র পেতে হবে যেখানে অভিনয়ের পাশাপাশি দর্শক হিসেবেও পরে পর্দায় নিজেকে উপভোগ করতে পারব। আপনি যে ছবিগুলোর কথা বললেন, ওরকম প্রস্তাব একগুচ্ছ এসেছে। কিন্তু একই ধরনের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের সঙ্গে প্রতারণা করতে পারব না।
প্রশ্ন: চিত্রনাট্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে আপনার স্বামীর সঙ্গে (পরিচালক আদিত্য ধর) আলোচনা করেন?
ইয়ামি: (হেসে) ‘উরি...’ বা ‘ভিকি ডোনর’ কিন্তু আদিত্যর সঙ্গে আলোচনা না করেই বেছেছিলাম। তবে ঠাট্টা সরিয়ে বলি, ওর সঙ্গে আলোচনা করি। ও এক জন পরিচালক। তাই ওর সঙ্গে কথা বলার পর একটা নতুন আঙ্গিক খুঁজে পাই। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমার নিজস্ব। সেটা ও জানে।
প্রশ্ন: তাই?
ইয়ামি: হ্যাঁ। কারণ আমরা একে অপরকে চিনি। আমার কোন চিত্রনাট্য ভাল লাগছে না বা কোনটা পড়ে আমি উত্তেজিত, সেটা ও আমাকে দেখলেই বুঝে যায়। নিজেদের মধ্যে এই আলোচনা কে আমার কাছে বেশ স্বাস্থ্যকর বলেই মনে হয়।
প্রশ্ন: এই বছর তো আপনার আরও কয়েকটা ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা। অতিমারির পর আবার এই কাজের ব্যস্ততা কতটা উপভোগ করছেন?
ইয়ামি: তিনটে ছবির প্রচার পর্ব বাকি। বিগত দুটো বছর মনে হয় সবথেকে ব্যস্ততার মধ্যে কেটেছে। কারণ ছ’টা ছবির শুটিং সেরেছিলাম। এ বার প্রত্যেকটা ছবির মাধ্যমে নিজের জায়গাটাকে ধরে রাখতে চাই।
প্রশ্ন: ‘দ্য ইমমর্টাল অশ্বত্থামা’ নিয়ে গুজবের শেষ নেই। আদিত্য কি আদৌ ছবিটা নিয়ে আসবেন?
ইয়ামি: অবশ্যই। ও এখন দুটো প্রযোজনা নিয়ে ব্যস্ত। আর এই গুজবগুলো শুনে ও খুব হাসে। ও বলে, ‘‘ট্রেলারটা আসুক। তারপর সকলে কী বলে আমি দেখব।’’ কারণ আমরা জানি, এই ছবিটা ভারতীয় দর্শকদের কাছে একটা নতুন অভিজ্ঞতা হতে চলেছে।
প্রশ্ন: ‘লস্ট’-এর ট্রেলার দেখার পর আদিত্য আপনাকে কী বলেছিলেন?
ইয়ামি: ওর খুবই পছন্দ হয়েছিল। পরে সম্পাদনার সময়েও দাদার সঙ্গে ও ছবিটা দেখেছে।
প্রশ্ন: ‘পাঠান’ তো বক্স অফিসে ঝড় তুলেছে। বলিউডের সঙ্গে দক্ষিণী ছবির তুলনা এ বার কি বন্ধ হবে বলে মনে হচ্ছে?
ইয়ামি: (একটু ভেবে) দেখুন, প্রত্যেক বছর কোনও না কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা চলতেই থাকবে। আমি এটাকে কোনও ‘বিতর্ক’ হিসেবে দেখি না। যে কোনও ছবি সফল হলেই আমার ভাল লাগে। সম্প্রতি, ‘কান্তারা’ আর ‘অবতার ২’ দেখলাম। এই ছবির অভিনেতাদের তো সে রকম সাক্ষাৎকার চোখে পড়েনি। তা সত্ত্বেও দর্শক ছবি দুটো দেখেছেন। তার মানে বিষয়বস্তুই শেষ কথা বলে। খেয়াল রাখতে হবে, ছবিটা যাতে দর্শকের চোখে একই সঙ্গে ভাল এবং সফল হয়। কারণ একটা ছবি সফল হলে সেটা আরও অনেক দরজা খুলে দেয়। তাই থেমে গেলে চলবে না। আমাদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
প্রশ্ন: চলতি বছরে ‘ভিকি ডোনর’ ছবির ১০ বছর পূর্ণ হবে। আপনার প্রথম হিন্দি ছবি এবং বাঙালি চরিত্র। কলকাতায় সাক্ষাৎকার দিতে বসে এই প্রসঙ্গে তো আপনাকে কিছু বলতেই হবে।
ইয়ামি: (হেসে) প্রথম ছবি সব সময়েই খুব স্পেশ্যাল। তার উপর সেই ছবি যদি একাধিক দিক থেকে সফল হয়, তা হলে আনন্দ আরও বেড়ে যায়। তাই এ রকম একটা ছবির অংশ যে আমি, সেটা ভাবতেই ভাল লাগে।