শহরে সাংবাদিক বৈঠকে শ্রদ্ধা কপূর ও রাজকুমার রাও। নিজস্ব চিত্র।
‘ও স্ত্রী তুম কাল আনা’... দেওয়াল লিখনেই হৃৎকম্প উঠেছিল দর্শকের। সেটা ২০১৮ সাল। বলিউডের মূলধারার ছবির ইতিহাসে এমন ‘হরর-কমেডি’বেশ বিরল বললেই চলে। শ্রদ্ধা কপূর ও রাজকুমার রাও-এর রসায়নে সেই ছবি জমে ক্ষীর। তাই বক্স অফিসেও জমেছিল লাভের অঙ্ক। ছবির শেষে ইঙ্গিত ছিল সিক্যুয়েলের। কাটা বেণী ব্যাগে ভরে ‘স্ত্রী’উঠে বসে বাসে। তার পর... কী হবে? কী হল? জানার জন্য দর্শককে অপেক্ষা করতে হল টানা ছ’বছর।
আগামী ১৫ অগস্ট সারা দেশে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে ‘স্ত্রী ২’। এ বারের দেওয়াল লিখন ‘ও স্ত্রী তুম রক্ষা করনা’। এ বারও কি ঠিক আগের মতোই সাফল্য আসবে বক্স অফিসে? প্রশ্ন করতেই একবাক্যে নিজেদের আত্মবিশ্বাসের কথা জানালেন রাজকুমার ও শ্রদ্ধা। সোমবার, ছবিমুক্তির মাত্র তিন দিন আগে তাঁরা এসেছিলেন কলকাতায়, প্রচারে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানালেন, হয়তো আগের বারের থেকেও বেশি উত্তেজনা তৈরি হতে চলেছে এই ছবিকে ঘিরে।
রাজকুমার বললেন, “আমরা আত্মবিশ্বাসী। সঠিক চিত্রনাট্যের জন্যই তো এতগুলি বছর অপেক্ষা করতে হল। ঝলক দেখেই বুঝতে পারছেন, দ্বিতীয় ছবিতে ভয় বলুন বা হাস্যরস— সবই দ্বিগুণ হতে চলেছে। দর্শক কোনও ভাবেই হতাশ হবে না।” সাফল্যের আভাস নাকি তাঁরা ইতিমধ্যেই পেয়ে গিয়েছেন। অভিনেতার দাবি, অগ্রিম টিকিট বুকিং থেকেই পুরোটা বোঝা যাচ্ছে।
একই ভাবে অপেক্ষা করেছেন শ্রদ্ধা কপূর। গত বছর রণবীর কপূরের সঙ্গে তাঁর ছবি ‘তু ঝুটি ম্যায় মক্কার’মুক্তি পেয়েছিল। তার পর আর দেখা যায়নি তাঁকে। এই অগস্টে ফিরছেন শ্রদ্ধা। কেন এত দেরি? আত্মবিশ্বাসী অভিনেত্রীর জবাব, “চিত্রনাট্যের বিষয়ে আমি খুবই খুঁতখুঁতে। তাই একটু সময় লাগল। ছবির ক্ষেত্রে আমি একটু বুঝে সিদ্ধান্ত নিই। কারণ মন থেকে অভিনয় করি। তাই সেরা চিত্রনাট্যের অপেক্ষায় থাকি।”
আসন্ন ছবির সাফল্য নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হলেও রাজকুমার বা শ্রদ্ধা— কেউই তথাকথিত সাফল্য-ব্যর্থতার সংজ্ঞায় বিশ্বাসী নন, জানিয়ে দিলেন সেই কথাও। রাজকুমার বলেন, “আমার কাছে বক্স অফিসের সাফল্যটাই সব থেকে বড় নয়। বরং সারা দিন শুটিং সেরে এসে যদি মনে হয়, ভাল কিছু করলাম, সেটাই সাফল্য। তার উপর যদি ছবি বক্স অফিসে সাফল্য পায়, তা হলে তা অবশ্যই উপরি পাওনা।” পাশাপাশি অভিনেতা মনে করেন সাফল্যের পাশাপাশি ব্যর্থতাও একজন মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ।
শ্রদ্ধা অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি ব্যর্থতাকেই বেশি প্রাধান্য দিতে চান। তাঁর কথায়, “ব্যর্থতা আসলে সাফল্যেরই আর একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ, ব্যর্থতা না থাকলে সাফল্যের আনন্দ কোথায়!”
ব্যক্তিগত নানা কথাও উঠে আসে আলাপচারিতায়। চিরাচরিত প্রথা মেনে ‘কলকাতার জামাই’, অভিনেত্রী পত্রলেখার স্বামী রাজকুমার দু’-একটি কথা বলেন বাংলায়। জানান তাঁর জীবনের আক্ষেপের কথাও। রাজকুমার জানান, তিনি খুব অল্প বয়সে বাবা-মাকে হারিয়েছেন। এখন সেই আক্ষেপ তাড়া করে। অভিনেতার কথায়, “আর কয়েকটা দিন যদি ওঁদের সঙ্গে কাটাতে পারতাম, বড় ভাল হত।”