Biplab Chatterjee

Biplab Chatterjee: আমার ভণিতা কম, কোনও দিন চ্যানেলকে ডেকে জন্মদিন পালন করিনি: বিপ্লব

সমাজ নিয়ে, তার মূল্যবোধের হাল নিয়ে বহু অভিযোগ বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়ের। চুপচাপ এত অবক্ষয় দেখা যায়? জন্মদিনে প্রশ্ন এক সময়ের জনপ্রিয় ভিলেনের।

Advertisement
বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২২ ১৩:৫২
জন্মদিনে ‘বিদায়’ চাইছেন বিপ্লব!

জন্মদিনে ‘বিদায়’ চাইছেন বিপ্লব!

দিব্যি আছি। পায়ের উপরে পা তুলে। খাচ্ছি-দাচ্ছি, ঘুমোচ্ছি। এই তো বেশ। শুধু জন্মদিন এলে মনে হয়, আরও একটা বছর এগিয়ে গেলাম। আরও এক বছর বয়স বাড়ল, এ-ই। এ বার জন্মদিনে বাড়িতে আমার প্রিয় পদ কড়াইয়ের ডাল আর আলুপোস্ত। ভদ্রলোকের খাওয়া। খুব তৃপ্তি করে খাই। স্ত্রী হয়তো মাংস রাঁধছেন। মাছ খেতে কোনও কালেই ভালবাসি না। আর কী কী করছেন, তিনিই বলতে পারবেন। তবে এটা বলতে পারি, কোনও চ্যানেলকে ডেকে হইহই করে জন্মদিন পালন করব না। ইন্ডাস্ট্রি থেকেও কেউ আসবেন না। আমার লোকদেখানো কিচ্ছু নেই। তা ছাড়া আমি কী এমন যে, ইন্ডাস্ট্রি আমায় শুভেচ্ছা জানাবে?

তবে একটা সময়ে সোনালি দিন আমারও ছিল। তখনও কোনও দিন লোক ডাকিনি। এখন তো পুজোর আলপনা আঁকতেও সবাই দেখি চ্যানেলকে ডাকেন। নিশ্চয়ই দর্শকদের ভাল লাগে সে সব দেখতে। তাই চ্যানেল কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেন। ছোটবেলায় আমার মা হাতেগোনা বন্ধু, আত্মীয়দের হয়তো ডাকতেন। তখনও মাংস রান্না হত। বাবা দুর্দান্ত রাঁধতেন। ওঁর হাতের মাংসের বিশেষ পদ ছিল আমার জন্মদিনের উপহার। নতুন জামা হত কি না, মনে নেই। তবে টলিউডের বিশেষ কেউ আমার জন্মদিন আলাদা করে উদ্‌যাপন করতেন, এমন কখনও হয়নি। মোচ্ছব হয়নি, লোক দেখানো উদ্‌যাপনেও ছিলাম না। যা হয়েছে ঘরোয়া ভাবে। মা-বাবার পরে বোন বেশ কিছু বছর বিশেষ দিনটি পালন করত। এখন সব দায়িত্ব স্ত্রী আর ছেলের কাঁধে।

Advertisement

অনেকেই জিজ্ঞেস করেন, একচেটিয়া খলনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করার পাশাপাশি আপনি তো অনেক ভাল কাজও করেছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনাও করেছেন। আবারও কিছু করতে ইচ্ছে করে না? আজ তাঁদের বলি, খুব ইচ্ছে করে। নাটকের চিত্রনাট্য লিখছি। চ্যানেলের জন্যও চিত্রনাট্য জমা দিয়েছিলাম। চ্যানেল কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, শিক্ষামূলক কোনও কিছু দেখাবেন না তাঁরা! প্রযোজকই যদি না পাই, তা হলে কাজ করব কী করে? ইদানীং ধারাবাহিকে দেখি, মা মেয়েকে বিচ্ছেদের পরামর্শ দিচ্ছেন! মেয়ে সেটা মেনেও নিচ্ছে। চ্যানেল কর্তৃপক্ষেরও এ সব দেখাতে কোনও আপত্তি নেই। চুপচাপ দেখছি আর ভাবছি, আর কত উচ্ছন্নে যাবে সমাজ? আর কত রসাতলে যাবে?

একে একে সোনালি দিনের মানুষগুলো চলে যাচ্ছেন। সদ্য পরিচালক তরুণ মজুমদারও চলে গেলেন। বাংলা বিনোদন দুনিয়ায় প্রচুর অবদান তাঁর। অনেক কিছু দিয়ে গেলেন। হয়তো আরও দেওয়ার বাকি ছিল। সেই সুযোগই পাননি। এক এক সময়ে মনে হয়, আমারই বা আর বেঁচে থেকে লাভ কী? বেঁচে থাকা মানেই বসে বসে অবক্ষয় দেখা। সমাজ, রাজনীতি, চেতনা, শিল্প-সংস্কৃতি— সব কিছুর অবক্ষয়। এ বার বোধহয় বিদায় নেওয়াই ভাল। অন্যায় দেখতে পারি না। স্পষ্ট প্রতিবাদ জানাই। তার পরেই সবার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement