ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়।
‘কাঞ্চি’ ধারাবাহিকে মঞ্জুষা নিয়োগী সংক্ষিপ্ত চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। নার্সের ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে। প্রযোজনা সংস্থার এক সূত্রের দাবি, বেশ কিছু সংলাপ ছিল তাঁর মুখে। যথাযথ ভাবে সেই সংলাপ বলে ভাল অভিনয় করেছিলেন মঞ্জুষা। সেই ধারাবাহিকে দীর্ঘদিন অভিনয় করেছেন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। এখন অবশ্য আর করেন না।
কেমন দেখেছেন মঞ্জুষাকে? জানতে চেয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। ভাস্বরের কথায়, ‘‘খুব অল্প দিন অভিনয় করেছিল মেয়েটি। এক বা বড়জোর দু’দিন। হাসপাতালের দৃশ্য ছিল। মঞ্জুষা নার্সের ভূমিকায় ছিল। এর বেশি বলার মতো কিচ্ছু নেই।’’ তার বদলে অভিনেতা ভাগ করে নিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রির অন্দরের কিছু ঘটনা। অভিনেতার মতে, হয়তো খ্যাতি নেই বলে গুঞ্জনও কম মঞ্জুষাকে নিয়ে। কিন্তু রোজ এমন ঘটনা মনখারাপ করে দিচ্ছে তাঁর। অসম্ভব খারাপ লাগছে অকালে হারিয়ে যাওয়াদের জন্য।
ভাস্বর জানান, এঁদের অনেকের সঙ্গেই কাজ হয়। সব সময় চেহারা মনে থাকে না তাঁর। একটি বা দু’টি দৃশ্যের ছোট চরিত্রে অভিনয় করতে আসেন অনেকেই। কিন্তু চোখে অনেক বড় স্বপ্ন। বাস্তবের মাটিতে পা দিয়েই বোঝেন, বিনোদন দুনিয়াতেও কত সংগ্রাম। কেউ কারও জন্য এক ইঞ্চি জমি ছাড়েন না। পল্লবী, বিদিশার মতো অনেকেই বাড়ি ছেড়ে কলকাতায় থাকেন। সেখান থেকে কুসঙ্গ, নেশা, একাকীত্বের মতো ভুল পথে পা বাড়ানোর হাতছানি।
মঞ্জুষার কথা বলতে গিয়েই ভাস্বরের মনে পড়েছে আরও দু’তিন জনের কথা। এঁদের এক জন নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। তার জন্য সরকারি চাকরি পর্যন্ত ছেড়েছিলেন! অথচ কখনও ভিড়ের দৃশ্য, কখনও হেঁটে যাওয়ার শট জুটত তাঁর কপালে। কৌতূহলী ভাস্বর এক দিন জিজ্ঞেসও করে ফেলেছিলেন তরুণীকে, ‘‘ভাল চাকরি ছেড়ে কেন এলে?’’ তরুণী বলেছিলেন, নায়িকা হতে। পরে অভিনেতা শুনেছিলেন, এই ছোট কাজগুলোর জন্যও নাকি ‘কম্প্রোমাইজ’ করতে শুরু করেছিলেন তিনি!
একই ভাবে এক যুবক ‘নায়ক’ হওয়ার খেসারত দিয়েছিলেন সাত লক্ষ টাকার বিনিময়ে। এক প্রতারক তাঁর স্বপ্নপূরণ করে দেওয়ার মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন। এক মহিলা প্রযোজক এক জনের পাল্লায় পড়ে বাড়ি বন্ধক রেখে ছবি বানিয়েছিলেন। ছবিটি কোথাও মুক্তি পায়নি। তখন সেন্সর বোর্ডের কাছে এসে কান্নাকাটি করে বলেছিলেন, ‘‘আমার সব গেল।’’ অভিনেতার দাবি, ওই তরুণী বুদ্ধিমান। তাই একটা সময়ের পরে সমস্ত বিবেচনা করে সরে গিয়েছিলেন। যাঁরা সরে যেতে পারছেন না, অবসাদে ভুগছেন তাঁরাই। কারণ, তাঁরা নানা বঞ্চনার শিকার।