নীল-তৃণার জামাইষষ্ঠী। নিজস্ব চিত্র।
দক্ষিণ কলকাতার বিলাসবহুল বাড়ি। ঢুকতেই রকমারি পদের সুবাস। আলপনার নকশা করা হচ্ছে খাবার টেবিলে। নিজেদের ঘরে শেষ মুহূর্তের সাজ সেরে নিচ্ছেন টেলি জুটি নীল ভট্টাচার্য ও তৃণা সাহা। উপলক্ষ, জামাইষষ্ঠী। অভিনেত্রীর পায়ের কাছে লুটোপুটি খাচ্ছে প্রিয় চারপেয়ে পোষ্য, চিনি।
জামাইয়ের প্রিয় পদ পোলাও আর মাটন। তাই নীলের প্রিয় খাবার বানাতে ভোর থেকে রান্নার কাজে হাত লাগিয়েছেন তৃণার মা। এ দিকে মাছের দিকে ঝোঁক মেয়ের। ফিশ ফ্রাই, আলু ভাজা, পটল ভাজা, পাতুরি, সর্ষে ইলিশ, মোচার ঘণ্ট বানাতে ভোলেননি তিনি। আশীর্বাদ পর্ব সেরে খাবার টেবিলে নীলকে তৃণার সাবধানবাণী, “মোচার ঘণ্ট কিন্তু আমার!”
দু’জনেই বিনোদন দুনিয়ার বাসিন্দা। হলে কী হবে! জামাইষষ্ঠীতে ডায়েট ভেঙে কব্জি ডুবিয়ে রসনাতৃপ্তিতে মজে যান যুগলে। পটল ভাজা তৃণার প্রিয়। এই প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর বক্তব্য, “আহা! কত দিন পরে পটল ভাজা খেলাম। ছোটবেলায় পাউরুটি দিয়েও পটল ভাজা খেয়েছি।” তবে আমের চাটনিতে ভাগ বসান দু’জনেই। কথায় কথায় নীল বললেন, “তৃণা যখন ডায়েটে থাকে, সব্জির জুসও খেয়ে নেয়। এটা মানুষে খায়!” তবে তৃণা নিজেও চুটিয়ে বাঙালি পদ রান্না করতে ভালবাসেন।
শাশুড়িমায়ের জন্য উপহার হিসাবে বরাবরই শাড়ি বেছে নেন নীল। তবে নীলের জন্য উপহার কিনতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় তৃণার মাকে। জামাইয়ের যে পছন্দ ভিন্ন। অগত্যা ভিডিয়ো কলই ভরসা। শাশুড়ির সৌন্দর্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নীলের জবাব, “কী আর বলব এটা নিয়ে। ওই সৌন্দর্য থেকেই এ দিকে এসেছে খানিকটা”, বলে ইশারা করলেন স্ত্রী তৃণার দিকে। তবে দু’জনেই স্বাস্থ্যসচেতন। খাবারে যতটা সম্ভব তেলের ব্যবহার কমিয়ে ফেলেছেন। যেটুকু ব্যবহার না করলেই নয় সে জন্য প্রথম পছন্দ ডক্টরস চয়েস-এর তেল।
নীল-তৃণার দাম্পত্যে বন্ধুত্ব বেশি। ঠোকাঠুকি লেগে যায় মাঝেমধ্যে। “এই ঝগড়া করছে, এই মিল হয়ে যাচ্ছে দেখছি। কেউ কাউকে ছেড়ে থাকতে পারে না”, বললেন তৃণার মা। তবে বিয়ের পর থেকে মা-বাবার কাছে আসা কমে গিয়েছে অভিনেত্রীর, অনুযোগ মায়ের। তৃণা নাকি শুধুই বলেন, “ও বাড়িতে চলে যাই, মা। জীতু (নীলের ডাক নাম) একা আছে ওখানে।” অভিনেত্রী বললেন, “তবে জীতু কিন্তু চায় আমি মাসের পর মাস মায়ের কাছে এই বাড়িতেই থেকে যাই।” বিরোধিতা করলেন নীল। বললেন,”সব বাজে কথা! আমি কখনও এই ধরনের কথা বলিনি।” পারস্পরিক বোঝাপড়া, যত্ন আর ভালবাসার বনিয়াদে ভালমন্দে দিন কাটছে জুটির।