আনন্দবাজার অনলাইনের ‘আগমনী আড্ডা’য় অতিথিরা। —নিজস্ব চিত্র।
পুজোর আগে আনন্দবাজার অনলাইনের ‘আগমনীর আড্ডা’য় তারকার সমাহার। পুজোয় মুক্তি পাচ্ছে তিনটি বাংলা ছবি যার মধ্যে রয়েছে ‘শাস্ত্রী’। তাই আড্ডার বিষয় ‘শাস্ত্রী মতে পুজো’। টিমের সঙ্গে আড্ডায় উঠে এল পুজো নিয়ে নানা প্রসঙ্গ।
‘শাস্ত্রী’র টিম থেকে উপস্থিত ছিলেন দেবশ্রী রায়, সোহম চক্রবর্তী, সৌরসেনী মৈত্র, অনির্বাণ চক্রবর্তী এবং অনীক ধর। শুরুতেই শৈশবের পুজোর স্মৃতিচারণ করেন অতিথিরা। ছবিতে বিজ্ঞান এবং জ্যোতিষশাস্ত্রের মধ্যে দন্দ্বের প্রসঙ্গ রয়েছে। এই পর্বের অন্যতম আকর্ষণ ছিল অতিথিদের মধ্যে জ্যোতিষী মণি ভাস্করের উপস্থিতি। সোহম নিজে জ্যোতিষে বিশ্বাস করলেও ছবিতে কিন্তু তিনি একজন বিজ্ঞানী। ‘ভণ্ড’ জ্যোতিষীদের বিরুদ্ধেই তার লড়াই।
অনির্বাণের মতে, তিনি এখনও জ্যোতিষে বিশ্বাস করার মতো জ্ঞান অর্জন করেননি। তাঁর কথায়, ‘‘পৃথিবীতে অনেকগুলো বিশ্বাস পাশাপাশি সহাবস্থান করতে পারে। সেটাই সৌন্দর্য।’’ সৌরসেনী যেমন জানালেন। জ্যোতিষ নিয়ে তাঁর কৌতূহলের কথা। তাঁর কথায়, ‘‘আমার ভবিষ্যৎ তো জানতে চাই। এক বার আমার হাত দেখে এক বন্ধু দাবি করেন, আমার নাকি তিনটে বিয়ে!’’ অভিনেত্রীকে তৎক্ষণাৎ সংশোধন করে দেন মণি ভাস্কর। তাঁর মতে, সৌরসেনীর জীবনে তিনটে ‘ভালবাসা’ রয়েছে। তবে সেই ‘প্রেম’ কোনও সারমেয়র প্রতিও হতে পারে। সৌরসেনীর হস্তরেখা না দেখেই অভিনেত্রীর হাতে ত্রিকোণ চিহ্ণের উপস্থিতি ঘোষণা করে সকলকে চমকে দেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘মডেলিং থেকে সাফল্য পেয়েছেন বলেই, আপনার হাতে ওই বিশেষ ত্রিকোণের উপস্থিতি।’’ সঙ্গীতশিল্পীদের ক্ষেত্রেও হস্তরেখায় কী কী থাকে, তা দেখিয়ে দেন মণি ভাস্কর।
দেবশ্রী রায় জ্যোতিষে বিশ্বাসী। এই পর্বে অভিনেত্রী খোলসা করেন, তিনি তাঁর বড় মামার ছেলের থেকে জ্যোতিষ সম্পর্কিত পরামর্শ নিয়ে থাকেন। তবে, পরিশ্রম ছাড়া শুধু জ্যোতিষ কাউকে সাফল্যের স্বাদ দিতে পারে না বলেই বিশ্বাস করেন দেবশ্রী। কিন্তু তাঁর কথায়, ‘‘এটা জীবনের বৃষ্টিতে ছাতার কাজ করে।’’ তবে ভাগ্যকে যে কর্মের সাহায্যে বদলে ফেলা সম্ভব, ভাগবদ্গীতা থেকে উদাহরণ দিয়ে সে কথাই জোর গলায় জানিয়ে দেন মণি ভাস্কর। জ্যোতিষশাস্ত্র যে আসলে সুপরিকল্পিত বিজ্ঞান, সে কথাই স্পষ্ট করেন তিনি। জ্যোতিষবিদ্যাকে তাই দেবশ্রী জীবনের কঠিন সময়ে ‘আশার আলো’ হিসেবেই দেখতে চান।
অভিনয় জীবন থেকে রাজনৈতিক জীবন— সোহম জ্যোতিষে বিশ্বাসী। কারণ তিনি বললেন, ‘‘বিশ্বাস জন্মানোর জন্য সেই ম্যাজিকেরও প্রয়োজন।’’ নিজের জীবন থেকেই উদাহরণ দিলেন তিনি। বললেন, ‘‘আমার বাবার বাইপাস অপারেশনের সময় অপারেশন থিয়েটারে চিকিৎসকও আমাকে বলেছিলেন, ‘সোহম, ভগবানের উপরে ভরসা রাখো।’ অর্থাৎ, সর্বশক্তিমান কোনও অবলম্বনকে মানুষ আঁকড়ে থাকে।’’
পুজোর প্রেমের প্রসঙ্গ উঠতেই আলোচনা অন্য দিকে বাঁক নেয়। সৌরসেনী যেমন জানালেন, পুজোর প্রেমের অভিজ্ঞতা তাঁর ক্ষেত্রে দু’টি। অনির্বাণের জীবনেও পুজোর প্রেম এসেছে। সোহম জানালেন, সরস্বতী পুজোর সময়ে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে প্রথম আলাপ। দেবশ্রী মনে করেন, প্রেমে পড়ার কোনও নির্দিষ্ট সময় নেই। তবে পুজোর সময় প্রেমের প্রস্তাবও অজস্র পেয়েছেন দেবশ্রী। তবে বিষয়টাকে তিনি আড়ালে রাখার ইচ্ছাপ্রকাশ করে বলেন, ‘‘সেগুলো এখন আর বলা যাবে না।’’ পুজোর প্রেমের রেশ ধরে প্রেমের গানেই এই পর্বের সমাপ্তি। অনীকের কণ্ঠে মান্না দে-র গাওয়া ‘ও কেন এত সুন্দরী হল’ গানটি ছিল এই পর্বের শেষ পাতের মিষ্টিমুখ।