অরিন্দম শীল। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।
পরিচালক অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন অভিনেত্রী। পুলিশ সূত্রের খবর, পরিচালকের বিরুদ্ধে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানায় এফআইআর করা হয়েছে।
অরিন্দম নিজেও জানেন তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, “আইনের উপর আমার আস্থা রয়েছে। আইনি পথেই যা করার করব।” প্রসঙ্গত, বেশ কিছু দিন আগে পরিচালকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনে রাজ্য মহিলা কমিশনের কাছে প্রথম অভিযোগ জানান টলিপাড়ার ওই অভিনেত্রী। গত শনিবার ডিরেক্টর্স গিল্ড (ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া) অরিন্দমকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করেছে। অরিন্দম বলেন, “আমি আমার বিবেকের কাছে একশো শতাংশ স্বচ্ছ। আইনের প্রতিও আমার আস্থা রয়েছে।”
গত এপ্রিল মাসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি রিসর্টে চলছিল শুটিং। অরিন্দমের দাবি, অভিনেত্রীকে শট বোঝাতে গিয়েই ঘটনাটি ঘটে। কিন্তু, ২০ জুন মহিলা কমিশনের দ্বারস্থ হন অভিনেত্রী। গত ১২ অগস্ট পরিচালককে ডেকে পাঠায় কমিশন। নির্যাতিতার দাবি, শুটিং ফ্লোরে শট বোঝানোর অছিলায় তাঁকে চুম্বন করেন অরিন্দম। পরিচালকের যুক্তি, “আমি সকলের সামনে ফ্লোরে শট বোঝাচ্ছিলাম। আমি তো পাগল নই যে ফ্লোরে এ রকম কোনও অনৈতিক কাজ করব!” অরিন্দমের দাবি, সবটাই ঘটেছে অনিচ্ছাকৃত ভাবে। তাঁর কথায়, “চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে একটি মুহূর্তে ওঁর গালে আমার ঠোঁট ছুঁয়ে যায়। অস্বস্তি হলে তিনি তখনই সেটা জানাতে পারতেন!”
বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত পরিচালক। তাঁর আশঙ্কা, সমাজমাধ্যমে অনেকে না জেনেই নানা মতামত ছড়িয়ে দিচ্ছেন। ফলে প্রকৃত সত্য কী, তা অনেকেই জানতে পারছেন না। অরিন্দম বললেন, “ছবি এবং ওটিটি মিলিয়ে ২২টা কাজ করে ফেলেছি। আমার সঙ্গে যে অভিনেত্রীরা কাজ করেছেন তাঁরা কেউই অস্বস্তি অনুভব করেছেন বলে মনে হয় না, আমার বিশ্বাস তাঁরা সেটাই বলবেন। শুটিংয়ের সময়টুকুর বাইরে আমি ফ্লোরে থাকিই না, বেরিয়ে আসি। বাইরেও কোনও অভিনেত্রীর সঙ্গে দেখা করি না।”
অরিন্দম জানালেন, ফ্লোরে সম্পূর্ণ ইউনিটের সামনে বিষয়টি ঘটেছিল। তাই আইনি পথে এগোলে অনেকেই সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত। পরিচালক বললেন, “আমার কাছে আরও নথি এবং প্রমাণ রয়েছে। মহিলা কমিশনেও কিছু জমা করেছি। প্রয়োজনে আরও নথি জমা দেব।”
এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “এখন বিষয়টি আর মহিলা কমিশনের আওতায় নেই। আমরা শুনানির পর নিয়মমাফিক আমাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছি। আইন এ বার আইনের পথে এগোবে।”
অরিন্দমের দাবি, তাঁর পক্ষে ইউনিটের একাংশ সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত। লীনার কথায়, “আমরা যে সব সাক্ষীর সঙ্গে কথা বলেছি, তাঁরা ঘটনাটি ঘটতে দেখেছেন বলেই জানিয়েছেন। তবে ঘটনাটি যে অনভিপ্রেত, সেটা তো মহিলাই বুঝতে পেরেছেন। তাই তিনি অভিযোগ জানিয়েছিলেন।”