উষসী চক্রবর্তী। ছবি: সংগৃহীত।
শনিবার যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্যের সমর্থনে রোড-শো করেছেন দলের পলিটব্যুরোর সদস্য বৃন্দা কারাট। ঐশী ঘোষকেও সেখানে দেখা গিয়েছে। রোড-শোয়ে অংশ নিয়েছিলেন টলিপাড়ার অভিনেত্রী তথা সিপিএম সমর্থক উষসী চক্রবর্তী।
হঠাৎ সৃজনের রোড-শোয়ে কেন উপস্থিত হলেন উষসী? আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিনেত্রী বললেন, ‘‘আমি তো শুরু থেকেই রয়েছি। দেওয়াল লিখন দিয়ে শুরু করেছিলাম। নতুন ধারাবাহিক শুরু হয়েছে বলে, মাঝে কিছু দিন সময় দিতে পারিনি। এ বার সময় পেতেই আবার শামিল হলাম।’’ রবিবার দমদম লোকসভা কেন্দ্রে সুজন চক্রবর্তীর সমর্থনে আয়োজিত রোড-শোয়েও অংশ নেন উষসী। অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে বললেন, ‘‘খুবই ভাল। শনিবার যেমন কেন্দ্রে ছিলেন বৃন্দামাসি (বৃন্দা কারাট)। ঐশীও ছিল। এই গরমেও যে ভাবে মানুষ এসেছিলেন, তা দেখে আমি অভিভূত।’’
সৃজনের সঙ্গে তাঁর আলাপ কী ভাবে? উষসী বললেন, ‘‘ওকে আমি ছোট থেকেই চিনি। পারিবারিক সম্পর্ক। ও অন্যতম যোগ্য প্রার্থী। যাদবপুরে আমরা দারুণ সাড়া পাচ্ছি।’’ ব্যখ্যা করলেন উষসী। জানালেন, যাদবপুরের যাঁরা প্রথাগত বামপন্থী ভোটার নন, এ রকম বহু পরিবারের সদস্যরাই নাকি সৃজনকেই ভোট দিতে ইচ্ছুক। উষসীর কথায়, ‘‘সৃজন খুবই ভাল ছেলে। যে ভাবে ও বড় হয়ে উঠল, আমি খুবই গর্বিত। যাদবপুর চিরকালই ভোটের ফলাফলে চমকে দেয়। তবে এ বার আমরা খুবই ভাল ফল আশা করছি।’’
নতুন ধারবাহিকের শুটিংয়ের ফাঁকে দলের হয়ে প্রচার সামলাতে যে বেগ পেতে হচ্ছে, সে কথাও স্পষ্ট করলেন পর্দার ‘জুন আন্টি’। বললেন, ‘‘বাইরে তাপপ্রবাহ। তার মধ্যে আউটডোর শুটিং করেছি। তার পর প্রচারে গিয়েছি। তাই একটু কষ্ট হয়েছে। কিন্তু রোড-শোয়ে পৌঁছে যাওয়ার পর পরিবেশটা আমাকে খুবই অনুপ্রাণিত করেছে।’’ নির্বাচনের প্রচারে তারকাকে হাজির করে সকলেই চমক হাজির করতে চান। কিন্তু সিপিএম এই ধরনের কোনও চমকে বিশ্বাস করে না বলেই জানালেন উষসী। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দলে আলাদা করে কোনও তারকার প্রযোজন হয় না। কারণ, আমাদের প্রার্থীরা নিজেরাই এক এক জন তারকা। সৃজন তো সেখানে রাজনীতির সুপারস্টার!’’ উষসীর মতে, সৃজনের রোড- শোয়ে তিনি একজন ‘কমরেড’ হিসেবেই উপস্থিত ছিলেন, তারকা হিসেবে নয়। একই সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘মানুষ যদি নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, তা হলে আমার বিশ্বাস, সৃজন নিশ্চয়ই সংসদে যাবে এবং মানুষের সুখদুঃখের কথা বলবে।’’
উষসী নিজে রাজনৈতিক পরিবারে বড় হয়েছেন। দলের সক্রিয় সদস্য। কিন্তু নির্বাচনে তাঁর প্রার্থী হওয়া নিয়ে কী মত তাঁর? উষসীর মতে, তাঁর দল যে রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাস করে, সেখানে নিজের একশো শতাংশ বিনিয়োগ না করতে পারলে সম্ভব নয়। বললেন, ‘‘নতুন ধারাবাহিকের ব্যস্ততা রয়েছে। তার মধ্যেই প্রার্থী হয়ে দু'নৌকায় পা রেখে চলতে চাই না।’’ কথাপ্রসঙ্গেই মনে করিয়ে দিলেন তাঁর পরিবারের বিষয়ে। উষসী নিজেও তাঁর দলের শ্রমজীবী ক্যান্টিন এবং অন্যান্য সমাজকল্যাণমূলক উদ্যোগের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন। তিনি মনে করেন, দল তাঁকে প্রার্থী করার আগে নিজেকে উপযুক্ত হয়ে উঠতে হবে। বললেন, ‘‘বিধায়ক বা সাংসদ ভাতার কথা ভেবে পাঁচ বছর পদে থাকতে চাই না! আমরা যে রাজনীতি করি, তার জন্য প্রার্থী হওয়াটা আবশ্যক নয়।’’ ভবিষ্যতে হাতে সময় থাকলে তখনই পুরোদমে নিজেকে রাজনীতির মধ্যে দেখতে চাইবেন বলে জানালেন অভিনেত্রী।