International Yoga Day 2024

‘মনখারাপের রাতে আমি আর মা পুরনো দিনের গান গাই’, গান ও যোগা নিয়ে লিখলেন মিমি চক্রবর্তী

আমার মাইগ্রেনের সমস্যা আছে। এক দিন সেই কথা জেনে ইমন আমাকে মেসেজ করেছিল, “তুমি ভ্রামরী প্রাণায়াম কর।”

Advertisement
মিমি চক্রবর্তী
মিমি চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২৪ ০৮:০১
Image of Mimi Chakraborty

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

যে দু’টি বিষয় ছাড়া জীবন একেবারেই চলে না, তা হল গান আর যোগা। আমার জীবনযাপনের অবিচ্ছেদ্য অংশ এরা। ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের পাশাপাশি বিশ্ব সঙ্গীত দিবস। আমার দুই প্রিয় বিষয় তুলে ধরলাম আনন্দবাজার অনলাইনের পাতায়।

Advertisement

যোগ সম্পর্কে আমার জ্ঞান হয়তো সীমিত। ভালবাসি বলে বহু বছর ধরে অনুশীলন করছি মাত্র। যোগ তো আর মেদ ঝরানোর ওষুধ নয়, যে আজ খেলাম, কাল ফল পেয়ে গেলাম। তবে যোগ যে শরীরের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন আনে তা অনস্বীকার্য। একবার অভ্যাসে পরিণত হলে একটা দিনও বাদ দেওয়া যায় না। যোগ আমাকে মানসিক দিক থেকে অনেকটা সাহায্য করেছে। মেদ কমানোর জন্য যোগ শুরু করেছিলাম, এমন নয়। বরং সার্বিক সুস্থতার জন্যই নিয়মিত যোগাভ্যাস করি। যাতে সাবলীল ভাবে ছোটাছুটি বা স্টান্ট করতে পারি। দম যেন আটকে না আসে!

অনেককে দেখি কোনও সংস্থার আওতায় এসে টানা কয়েক দিন যোগা, ধ্যান, মৌনব্রতের মধ্যে থাকেন। একে ‘হোলিস্টিক লিভিং’ বলে। বিশেষত দক্ষিণ ভারতে এই ধরনের নানা ব্যবস্থা রয়েছে। তবে এই ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে গেলে সেখান থেকে ফিরে আসার পরে ওই পদ্ধতিকেই জীবনযাপনের অঙ্গ করে তুলতে হবে। যোগের পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসের দিকেও নজর দিতে হবে। আমি সারা বছর যে ডায়েটে থাকি এমন নয়! তবে অধিকাংশ সময় স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করি। এখন যদি কোনও ছবির চরিত্র বা নাচের প্রয়োজনে নিজেকে নির্দিষ্ট ভাবে দেখানোর প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে ডায়েটে পরিবর্তন আনতেই হবে।

আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকেই নিয়মিত যোগাভ্যাস করেন। টোটা রায়চৌধুরী, ঊষসী চক্রবর্তী, ইমন চক্রবর্তী আরও অনেকে। আমার মাইগ্রেনের সমস্যা আছে। এক দিন সেই কথা জেনে ইমন আমাকে মেসেজ করেছিল, “তুমি ভ্রামরী প্রাণায়াম করো।” নিয়মিত ভ্রামরী প্রাণায়াম করলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মাইগ্রেনের সমস্যা কিছুটা লাঘব হয়। আমি উদ্যোগ নিয়ে আমার মা- বাবাকে যোগের সঙ্গে পরিচয় করাই। সূর্য নমস্কার দিয়ে বাবা শুরু করেছে। এখন ভ্রামরী প্রাণায়ামও করে। বাবাকে কিছু প্রাণায়াম শিখিয়ে দিয়েছি আমি। একসঙ্গে ভ্রামরী প্রাণায়াম করি আমরা। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে মাঝখানে বেশ কয়েক দিন যোগাভ্যাস করতে পারেনি বাবা।

এ বার আসি গানের কথায়।

গান ছাড়া হয়তো আমার অস্তিত্বই থাকত না। বলা ভাল, জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে পারতাম না। পেশার তাগিদে বা খ্যাতির জন্য গান করি না আমি। কেবল নিজের জন্যই গান গাই এবং এতে কোনও ভণিতা নেই। যে অনুরাগীদের আমার গান ভাল লাগে তাঁরা শোনেন। আমি কখনও গান শিখিনি। কিন্তু গানের সঙ্গে এতটাই ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছি যে, গান ছাড়া জীবন কল্পনাও করতে পারি না। ছোটবেলায় বাড়িতে রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি, ধূপকাঠির গন্ধ, হারমোনিয়াম, সেতার সহযোগে গান মনে পড়ে যায় এক লহমায়। এখন পরিবারের সদস্যেরা ছড়িয়ে গিয়েছেন নানা জায়গায়। কিন্তু আজও সেই রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন জারি রয়েছে। দিদু চলে যাওয়ার পরে বর্তমানে দিদিভাই সেই দায়িত্ব পালন করে।

মনখারাপের রাতে আমি আর মা পুরনো দিনের গান গাই। আধুনিক গানের তুলনায় লতা-কিশোরের গানের দিকে আমার ঝোঁক বেশি। ‘গাইড’ বা ‘কটি পতং’ ছবির সব গান হুবহু গেয়ে ফেলতে পারি। আমি কয়েকটি মিউজ়িক ভিডিয়োয় গান করেছি, রবীন্দ্রনাথের প্রেমের গান। আমার মনে হয় একবার ‘গীতবিতান’-এর প্রেম পর্যায়ের গানের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেলে তার থেকে রোম্যান্টিক আর কী হতে পারে! প্রেম, ভালবাসা বা বিরহের গান, সব হয়তো জানি না, যতটুকু পারি করি আর কি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement