অর্জুন চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র।
বেশ কিছু দিন ধরে আমি খবরে। আমাকে নিয়ে লেখালিখি হচ্ছে। ভাল লাগছে। কিন্তু এই যে শিরোনামের জায়গায় একটা প্রশ্ন, ‘স্ত্রী সৃজাতেই মন?’ আজ এর উত্তর দিতে বসলাম। আমি যদি আরও সাতবার জন্ম নিই আমার মন সৃজাতেই থাকবে। আমি ১৬ বছর বয়স থেকে ওকে ভালবাসি। ওর প্রতি আমার যে সম্মান আর ভালবাসা আছে সেটা কোনও দিন এক মুহূর্তের জন্য এ দিক ও দিক হয়নি। আর হবেও না।
সেই প্রেক্ষিতেই বলতে পারি, কাজের জায়গায় কিন্তু বন্ধুত্ব হয় না। সহকর্মীদের সঙ্গে কথা, সৌজন্য প্রত্যেক পেশা জগতের চেনা ছবি। অফিসে গেলে আপনারাও নিশ্চয়ই প্রত্যেকের সঙ্গে ‘হাই’, ‘হ্যালো’ করেন। তার উপর ভিত্তি করে ‘আপন মনের মাধুরী মিশায়ে’ যে যা ইচ্ছে গুজব ছড়াবে! সত্যি-মিথ্যে যাচাই না করেই খবর পরিবেশন করবে! আমার মনে ছাপ না ফেললেও বিষয়টি যথেষ্ট অপমানজনক। কারণ, মিথ্যে রটনা রটছে, লেখালিখি হচ্ছে আমাকে নিয়ে। এ ভাবে আমার ব্যক্তিগত পরিসরে, আমার অন্দরমহলে ঢুকে পড়ার অধিকার কারও নেই। এতে আমার পরিবারে শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে।
আমি আজ পর্যন্ত যা করেছি, আমার যেটুকু খ্যাতি-পরিচিতি, সবটাই সৃজা পাশে থেকেছে বলে সম্ভব হয়েছে। স্ত্রী হওয়ার আগে ও আমার সবচেয়ে ভাল বন্ধু, আমার প্রেমিকা। আজও আমাদের বন্ধুত্ব অটুট। এই ভালবাসা কিন্তু মুছে যাবে না কখনও। তাই প্রশ্নচিহ্ন নয়, সৃজাতেই আমার মন। এত বিশ্বস্ততার পরেও আমার সহকর্মীদের সঙ্গে কোথায় গিয়ে কী বলেছি তাই নিয়ে যে যা খুশি বলছে, লিখছে! কী করে মেনে নেব? আমি মেনে নেব না। আমাকে নিয়ে, আমাদের দাম্পত্য নিয়ে এত রটনা। তার পরেও কিন্তু সৃজা শান্ত, স্বাভাবিক। বরং আমার চোখ খুলে গিয়েছে। আগামীতে আরও সাবধানী হয়ে, আরও বেছে কাজ করব। ভবিষ্যতে আর কার সঙ্গে কাজ করব আর করব না, সেটাও এ বার পরিষ্কার। নিজের সম্মান বাঁচাতে, পরিবারে শান্তি বজায় রাখতে।
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, এত বছর কাজ করার পর কেন আমার নামে এই গুঞ্জন ছড়াল? এত বছর চক্রবর্তী পরিবারের নামে তো কেউ কোনও কথা বলতে পারেনি! এই প্রশ্ন আমারও। একসঙ্গে কাজের সূত্রে আমরা অনেকের মুখোমুখি হই। কাজ করি, কথাও বলি। বাকিরাও তাই-ই করেন। তাঁদের মধ্যে থেকে কী ভাবে আমিই ‘টার্গেট’ হয়ে গেলাম! কারা ছড়াল, কেনই বা ছড়াল? সেটা জানাও সম্ভব নয়। কারণ, জনে জনে জিজ্ঞেস করা যায় না। অর্থাৎ, আমাকেই আরও সাবধান হতে হবে। আমার মতোই বাকিরাও একই ভাবে মিশছেন। তাঁদের নিয়ে কিন্তু লেখালিখি হচ্ছে না। লেখা হচ্ছে কেবল আমাকে নিয়ে!
আরও একটা কথা, সৃজার সমাজমাধ্যম বরাবর ব্যক্তিগত, লক করা। মাঝে অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার কারণে আমাদের একসঙ্গে ভাগ করে নেওয়া কিছু ছবি মুছে গিয়েছিল। সৃজা নতুন করে আবার ওর পাতা সাজাতে শুরু করে। ব্যস, সেটা দেখে সবার আরও বদ্ধমূল ধারণা জন্মাল, আমরা বিচ্ছেদের পথে! প্রচন্ড রাগ হয়েছিল তখন, হাসিও পেয়েছিল। তবে সব দেখেশুনে এটাই বুঝলাম, কাজের জায়গায় কেবল পেশাদারিত্ব। শান্তি শুধুই ঘরে। কোনও দিন ভুলিনি, কোনও দিন ভুলবও না।