পুরস্কার ফেরাতে চান বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কাঞ্চন-বিতর্কে পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার পালা অব্যাহত। উত্তরপাড়ার বিধায়ক তথা অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিকের সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রতিবাদে ‘দীনবন্ধু মিত্র পুরস্কার’ ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বর্ষীয়ান নাট্যকার চন্দন সেন। মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ নাট্য অ্যাকাডেমির তরফে পাওয়া পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
চলতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি ‘প্রাচ্য’ নাট্যদলের ‘দায় আমাদেরও’ নাটকটির জন্য পশ্চিমবঙ্গ নাট্য অ্যাকাডেমির তরফে সেরা নির্দেশকের পুরস্কার পান বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, মঙ্গলবার তিনি সেই পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করে নাট্য অ্যাকাডেমিতে ইমেল করেছেন। মঙ্গলবার শুটিংয়ের ফাঁকে আনন্দবাজার অনলাইনকে বিপ্লব বললেন, “পুরস্কার এবং অর্থমূল্য দুটোই আমি ফিরিয়ে দিতে চাই। ওদের ইমেল করে জানিয়েছি।”
বিপ্লব জানালেন, আরজি কর-কাণ্ডের পর থেকেই তাঁর মনখারাপ। নিজের দলের সদস্যদের নিয়ে এই ঘটনার প্রতিবাদে ‘ইনকিলাব’ নামে একটি পথনাটিকাও তাঁরা করছেন। বুধবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নাটকের পরবর্তী শো। অভিনেতা বললেন, “কাঞ্চন মল্লিকের সরকারি পুরস্কার সম্পর্কিত মন্তব্য শুনি। ওঁর বলার ভঙ্গিমার সঙ্গে সরকারের ভূমিকা কোথাও যেন মিলে যায়। তার পরেই পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।”
আরজি কর-কাণ্ডে শুরু থেকে প্রমাণ লোপাট এবং দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা হয়েছে বলেই মনে করছেন বিপ্লব। এ প্রসঙ্গে সরকারের উদ্দেশ্য এবং কাঞ্চনের বক্তব্যের উদ্দেশ্যও কোথাও একই সুরে মিলছে বলে মনে করছেন তিনি। বিপ্লব বলেন, “প্রতিবাদ জানাতেই পুরস্কার ফিরিয়ে দিচ্ছি। অরিজিৎ সিংহের প্রতি কুণাল ঘোষের সাম্প্রতিক মন্তব্য এবং কাঞ্চনের বক্তব্যও তো কোথাও গিয়ে মিলে যাচ্ছে। আসলে সকলের বক্তব্যই এক, শুধু ব্যক্তিবিশেষ বদলে যাচ্ছে।”
গত ১ মার্চ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না বিপ্লব। পুরস্কার এবং অর্থমূল্য পরে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিপ্লবের যুক্তি, “পুরস্কার আমি গ্রহণ করেছিলাম। এখন প্রতিবাদের অঙ্গ হিসাবে তা ফিরিয়ে দিতে চাই।” বিপ্লব জানালেন, নাট্য অ্যাকাডেমির তরফে তাঁর কাছে এখনও কোনও উত্তর আসেনি। তবে, তিনি মঙ্গলবারের মধ্যেই পুরস্কারের অর্থমূল্য ফিরিয়ে দিতে চাইছেন।
সোমবার রাতে কাঞ্চন যে সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে ক্ষমা চেয়েছেন, বিপ্লব তা জানেন। অভিনেতার কথায়, “তার নেপথ্যে কতটা দলের অভ্যন্তরীণ চাপ রয়েছে আমি জানি না। সত্য আগে প্রকাশিত। তাকে এখন ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার কোনও মানে নেই।” সমাজমাধ্যমে বিপ্লবের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করে পোস্ট করেছেন অভিনেতা দেবদূত ঘোষ, মানসী সিংহ প্রমুখ।