বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হঠাৎ দেখা রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের। নিজস্ব চিত্র।
বহু বছর পরে হঠাৎ দেখা আনন্দবাজার ডট কমের ‘বছরের বেস্ট ২০২৪’ সন্ধ্যায়। দেখা হতেই পরস্পরকে জড়িয়ে ধরলেন দু’জনে। এক জনের পরনে ঘিয়ে রঙের শাড়ি, সঙ্গে মানানসই সোনার গয়না। আর এক জনের পরনে সাদা ও নীল রঙের মিশেলে টেম্পল সিল্ক শাড়ি।
পরস্পরের সঙ্গে আলিঙ্গন পর্ব সেরে ঘিয়ে শাড়ি পরিহিতা বলে উঠলেন, “মনে আছে ২২ বছর আগের সেই কথা?” প্রশ্ন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যাঁর দিকে হেসে প্রশ্ন রাখলেন, তাঁর নাম রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। ঠিক কী হয়েছিল ২২ বছর আগে? রূপার চোখেমুখে বিস্ময়। কিছুই মনে পড়ছে না তাঁর। বৈশাখী ফিরিয়ে দিলেন সেই স্মৃতি।
২২ বছর আগের কথা। সেই সময় ডেনিম প্যান্ট ও টিশার্ট পরে নিজেই গাড়ি চালিয়ে আসতেন রূপা। এই দেখে নাকি অভিভূত হয়ে যেতেন বৈশাখী। মনে মনে ভাবতেন, কবে তিনি রূপার মতো গাড়ি চালিয়ে আসবেন। একাই গাড়ি নিয়ে দাপিয়ে বেড়াতেন রূপা। এমনই এক রাতের স্মৃতি উঠে এল ‘বছরের বেস্ট’-এর লাল গালিচায়।
সেই গভীর রাতে কলকাতা শহর ঝমঝম বৃষ্টিতে ভিজছিল। গাড়ি চালাতে চালাতেই রূপা দেখতে পান, রাস্তায় কাকভিজে অবস্থায় দাঁড়িয়ে দুই মহিলা। যেন তাঁরা খানিক দিগ্ভ্রান্তও। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সামনে গাড়ি নিয়ে গিয়ে দাঁড়ান রূপা। দরজা খুলে দিয়ে বলেন, “উঠে এসো।”
প্রথমে কিছুটা অস্বস্তি হচ্ছিল, জানান বৈশাখী। সেই সময়ে তিনি কলেজ পড়ুয়া। তাঁর কথায়, “যাঁকে পর্দায় দেখি, যাঁর ব্যক্তিত্ব নিয়ে আমরা চর্চা করি, তাঁর গাড়িতে উঠে পড়ব? এ সব ভাবছিলাম।” সেই সময় নাকি রূপা বলেছিলেন, “কোথায় যাবে বলো, আমি ছেড়ে দেব। কোনও মেয়ে ভিজে রাস্তায় এই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে এটা হতে পারে না, যত দিন রূপা গঙ্গোপাধ্যায় আছেন।”
সেই রাতের ঘটনা ছবির মতো চোখের সামনে ভেসে উঠল রূপার। স্মৃতিচারণ করে দু’জনই আপ্লুত। রূপা জানালেন, যে দিন থেকে গাড়ির স্টিয়ারিং নিজের হাতে, কলকাতার রাস্তায় কোনও একাকী মহিলা বা বাচ্চা-সহ মহিলাকে অপেক্ষারত দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলে আজও এগিয়ে যান। শহরের যে দিকেই মহিলার গন্তব্য হোক, তাঁকে পৌঁছে দিয়েই বাড়ি ফেরেন অভিনেত্রী। এই স্বভাব তিনি নাকি নিজের জেঠুর থেকে পেয়েছেন।
‘বছরের বেস্ট’ এমনই এক সন্ধ্যা, যা স্মৃতি ও ব্যক্তিমানুষকে সামনে নিয়ে আসে। এই সন্ধ্যায় রাজনীতির কোনও রং নেই।