বাদশা মৈত্র।
একটি বিশেষ কাজে আমি এখন ঝাড়খণ্ডের জঙ্গলে। অরণ্যের বুকে দাঁড়িয়ে কৃষকদের এই জয়ের কথা শুনে প্রচণ্ড আনন্দ হচ্ছে। মনে মনে আমিও যেন এক ধরনের উদযাপনে মেতেছি। শস্যক্ষেত্রে জয়ের খবর তো অরণ্যে দাঁড়িয়েই শুনতে হয়!
কেন্দ্রের এই আইন প্রত্যাহার এক বছর পরে শান্তিতে ঘুমোতে দেবে কৃষকদের। স্বস্তি এনে দেবে সমস্ত দেশবাসীকেও। কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকলেই যা ইচ্ছে তা-ই করা যায় না, যাবে না— সে কথা বুঝবে কেন্দ্রীয় সরকারও। কঙ্গনা রানাউত সহ বহু বিশিষ্ট জন বলছেন, এটা নাকি জেহাদিদের দেশ হয়ে উঠছে! আমি কিন্তু বলব, আরও এক বার জিতে গেল গণতন্ত্র।
যে তিনটি কৃষি বিল তড়িঘড়ি পাশ হয়ে আইন হয়েছিল সংসদের দুই কক্ষে, সেগুলি সত্যিই কৃষকদের পরিপন্থী ছিল। কৃষি ব্যবস্থার বেসরকারিকরণ ঘটলে না খেয়ে মরতে হত কৃষকদের। সমস্ত জনসাধারণকেই। কারণ, আমাদের দেশ কৃষিনির্ভর।
এ কথা আমরা কোনও ভাবে আম জনতাকে বোঝাতে পারিনি। এটা আমাদের ব্যর্থতা। কৃষি আইন কার্যকরী হলে, মধ্যস্বত্বভোগী হয়ে দাঁড়াত কিছু নির্দিষ্ট সংস্থা, যারা এখন বাজারদর নিয়ন্ত্রণ করে। এরা যদি কোনও কারণে কৃষি পণ্যের দাম কমিয়ে দিত তা হলে চুপ করে দাঁড়িয়ে দেখতে হত কৃষকদের। আদালতে যাওয়ার রাস্তাও তখন খোলা থাকত না তাঁদের জন্য।
দেশের এক জন নাগরিক হিসেবে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপকে তাই স্বাগত জানাচ্ছি। মন থেকে চাইছি, সরকার ফসলের নির্দিষ্ট দাম বেঁধে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করুক। এতে দেশের কৃষকেরা বেঁচে যাবেন। পরিশ্রমের ন্যায্য মূল্য পাবেন। পাশাপাশি, এই জয় বিরোধী দলগুলিরও। তারা এই বিষয়ে এক জোট হয়েছিল। কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এই জয় তাই দেশের জয়। শুধু কৃষক সমাজ নয়, সকলে মিলে উদযাপন করার দিন।